আ.লীগ-জামায়াতের বিচার চায় গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
Published: 30th, May 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ত্রুটিপূর্ণ অংশ সংশোধন ও পুনর্গঠনের মাধ্যমে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামীর বিচার দাবি করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে হামলায় জড়িত ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদেরও বিচার চেয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড.
বিবৃতিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ পুনর্বিবেচনার রায়কে ন্যায়বিচার অভিহিত করেছেন। কিন্তু চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রতিপন্ন করে বেকসুর খালাস কোনো ন্যায়বিচার নয় বরং বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের উদাহরণ।
এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের গণহত্যায় সম্পৃক্ত থাকার ঐতিহাসিক ভিত্তি প্রমাণ করে আজহার সাংগঠনিক ভূমিকার কারণে এতে অংশীদার। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রথম থেকেই গণহত্যা বিচারের মৌলিক নীতি না মেনে, দলের পরিবর্তে ব্যক্তি হিসেবে বিচার করেছে।
যে পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ পূরণের জন্য ট্রাইব্যুনালে ত্রুটিপূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, একই স্বার্থকে অন্তর্বর্তী সরকার ধারণ করে জামায়াতের স্বার্থকে সংরক্ষণ করেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আসামির বেকসুর খালাস পাওয়া ন্যায়বিচারের নামে প্রহসন। এ রায় গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জুলাই গণহত্যার বিচার না করার বন্দোবস্ত করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচিতে হামলা, নারী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে আক্রমণ, সিলেটের এক ছাত্রীকে ক্রমাগত হুমকির ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে, বিগত ১৫ বছর ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা ছাত্রশিবির মননে ও আচরণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকেই বহন করে চলছে।
এদিকে, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী ও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর পৃথক বিবৃতিতে এ টি এম আজহারের খালাসের রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ রায় বাতিল করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে জনগণকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার দোসর ছিল, তাদের বিচারের দাবি জনগণের ভিতরে জাগ্রত থাকবে। ঠিক একইভাবে জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবি জাগ্রত আছে। ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে জনগণকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না।
বুধবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ফয়জুল হাকিম। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস দেওয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যেসব কারণ উল্লেখ করে উচ্চ আদালত এই রায় দিয়েছেন, তাতে অভিযুক্ত ব্যক্তি মামলা থেকে খালাস পেতে পারেন না। তাই এই রায়ে ন্যায়বিচারও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক বলেন, বরং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অ্যাফিলেট ডিভিশনের দেওয়া আগের রায় বাতিল করে মামলাটি পুনরায় শুরু করা যথাযথ ছিল। এর মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারের পথ উন্মুক্ত হতো।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালে জুলাই- আগস্টে শেখ হাসিনা সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছিল এবং বিগত ১৬ বছরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, তার বিরুদ্ধে বর্তমানে যে বিচার প্রক্রিয়া জারি আছে, তার পরিনতি নিয়ে জনমনে অনাস্থা তৈরিতে এই রায় ভূমিকা রাখবে।