বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার শহরে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা
Published: 1st, June 2025 GMT
টানা ও ভারী বর্ষণে মৌলভীবাজার শহরে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারছে না। অনেকগুলো সড়ক তাৎক্ষণিক পানিতে ডুবেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নিচু এলাকার বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পথচারীকে। বৃষ্টির পানি সরে যেতে সময় লাগছে। এক দিন পরও নিচু এলাকায় পানি থেকে যেতে দেখা গেছে; সঙ্গে আছে ধারাবাহিক বৃষ্টি।
মৌলভীবাজারে গতকাল শনিবার প্রায় সারা দিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে শহরের অনেকগুলো প্রধান ও অলিগলির সড়ক নালার পানিতে ডুবে যায়। পূর্ব গির্জাপাড়াসহ নিচু এলাকার অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। অনেককে বাসাবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণ ভারী বর্ষণ, নালাগুলোয় ইচ্ছেমতো ময়লা–আবর্জনা ফেলে ভরাট করা।
শহরের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম কোদালীছড়ার ভাটির দিকে বিভিন্ন স্থানে শুকনা মৌসুমে সেচের জন্য বাঁধ দেওয়া। মাছ ধরার জন্য ফাঁদ পেতে রাখাসহ বিভিন্ন কারণকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব কারণে কোদালীছড়া দিয়ে পানি দ্রুত প্রবাহিত হতে পারছে না, শহরে বৃষ্টির পানি ফুলে–ফেঁপে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছিল। বিকেল থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। শুরু হয় ভারী বর্ষণ। বৃষ্টির পানি দ্রুত সরে যেতে পারেনি। শহরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হতে থাকে জলাবদ্ধতা। শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের বিভিন্ন স্থান, শান্তিবাগ স্কুল রোড, সৈয়দ মুজতবা আলী সড়ক, কাশীনাথ রোড, লক্ষ্মীবালা স্কুল রোড, পূর্ব গির্জাপাড়া সড়ক, টিবি হাসপাতাল সড়ক, পশ্চিমবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। পূর্ব গির্জাপাড়া এলাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি হয়েছে। অনেক বাসার ভেতর পানি ঢুকে যায়। অনেককে বাসা ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, প্রচুর বৃষ্টির কারণে এই জলাবদ্ধতা হয়েছে। এত বৃষ্টি ধারণ করার মতো জলাধার শহরে নেই। অন্যদিকে পানিনিষ্কাশনের যেসব নালা আছে, সেই নালাগুলোর একসঙ্গে এত পানি টেনে নেওয়ার সক্ষমতা নেই। এ ছাড়া একটা সময় শহরের পূর্বাঞ্চলে ফাটাবিলের বিশাল এলাকা অনেক পানি ধারণ করতে পারত। আশপাশের বৃষ্টির পানি দ্রুত ফাটাবিলে এসে জমাট হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ফাটাবিলের সেই প্রকৃতি–পরিবেশ সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। নিচু এলাকা ভরাট করে অপরিকল্পিতভাবে বাসাবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে। এতে একদিকে জল ধারণের জায়গা কমে গেছে। অন্যদিকে পানিনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই। এতে পানি ফুলে–ফেঁপে উঠছে।
ফাটাবিল এলাকায় জলাবদ্ধতা। রোববার সকালে মৌলভীবাজার শহরের টিবি হাসপাতাল সড়ক-সংলগ্ন এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক র এল ক য় শহর র র শহর
এছাড়াও পড়ুন:
কালীগঞ্জ কাঁপাচ্ছে বিশাল আকৃতির নিগ্রো!
গাজীপুরের কালীগঞ্জে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটি বিশাল আকৃতির ষাঁড়- নাম তার ‘নিগ্রো’।
উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের খৈকড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের জুয়েল আকন্দ (৩২) শখের বশে লালন-পালন করা এই বিরল দৃষ্টিনন্দন ষাঁড়টির ওজন প্রায় ১১৫০ কেজি।
জুয়েলের নিজ বাড়িতে ষাঁড়টি বিক্রির অপেক্ষায় থাকলেও এর চাহিদা ও কৌতূহল এখন ছড়িয়ে পড়েছে দূর-দূরান্তে।
আরো পড়ুন:
প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার
খুলনার জোড়াগেট হাটে হাসিল কমেছে ১ শতাংশ
জুয়েল আকন্দ জানান, প্রায় দেড় বছর আগে পাশের গ্রামের নাওয়ানের মোড় থেকে মাত্র দুই দাঁতের অবস্থায় কালো রঙের ষাঁড়টি কেনেন। এরপর থেকেই প্রাকৃতিক খাদ্য ও যত্নে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘নিগ্রো’কে। কোনো স্টেরয়েড বা কৃত্রিম উপাদান ছাড়াই ঘাস, ভুসি, ছোলা, গাজর, কলাই, ও দানাদার খাবার খেয়ে বড় হয়েছে ষাঁড়টি। দিনে দুইবার গোসল আর পর্যাপ্ত চলাফেরার সুযোগে নিগ্রো এখন একেবারে স্বাস্থ্যবান এবং ঝলমলে চেহারার একটি ষাঁড়।
জুয়েল বলেন, “নিগ্রো নামটি আমি দেইনি, কালো জিভ আর কুচকুচে কালো গায়ের রঙ দেখে লোকজনই এ নাম দিয়েছিল। সেই নামেই পরিচিতি পেয়েছে।”
এখন প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন নিগ্রোকে একনজর দেখতে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ করছেন ফেসবুক লাইভ। এমন উৎসাহ অনেকটাই মেলা মেলার পরিবেশ তৈরি করেছে জুয়েলের বাড়িতে।
মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা, তবে স্থানীয় পশু ব্যবসায়ীদের মতে নিগ্রোর প্রকৃত মূল্য আরও বেশি হতে পারে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকে দাম বলছেন, কেউ আবার বুকিং দিতে চাইছেন কিন্তু এখনো কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় জুয়েল ষাঁড়টি ছাড়েননি।
“শখের বসে লালন করেছি, তাই হেলায় ছাড়তে চাই না। তবে কেউ সঠিক মূল্য দিলে নিগ্রোর রশি তার হাতেই তুলে দেব।”-বলেন জুয়েল।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি শুধু একটি ষাঁড় নয়, এটি খৈকড়া গ্রামের গর্ব। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত এই ষাঁড় যেন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল প্রতীক।
জুয়েলের প্রতিবেশিরা জানান, এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রতিবছর যেমন লক্ষ লক্ষ পশু প্রস্তুত হয়, তেমনি বিরল আকৃতির পশুরাও হয়ে ওঠে আলোচনার বিষয়বস্তু। এবারের ঈদে কালীগঞ্জে নিগ্রো যেন সবার আগ্রহ ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। এটি বিক্রি হবে কি না, হবে তো কত দামে-তা সময়ই বলবে। তবে নিঃসন্দেহে, কালীগঞ্জের ঈদ উদযাপন নিগ্রোকে ঘিরেই এবার এক নতুন রঙে রাঙা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক/এস