বাংলাদেশকে ৯০ কোটি ডলার বাজেট–সহায়তা দিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বর্তমান বাজারদরে এর পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খাত সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা কার্যক্রমে এই অর্থ খরচ করা হবে। চলতি জুন মাসের মধ্যেই এই অর্থ বাংলাদেশের হাতে চলে আসবে।

আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর মধ্যে ব্যাংক খাত সংস্কারে ৫০ কোটি এবং ৪০ কোটি ডলার জলবায়ু সহনশীলতা ও অন্তর্বর্তীমূলক উন্নয়নে খরচ করা হবে। এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

এডিবির মুখ্য আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব কৌশিক বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যার মধ্যে আছে দুর্বল সম্পদ গুণমান, তারল্য–সংকট এবং দুর্বল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ। তিনি আরও বলেন, এডিবির অর্থায়নের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যাংক খাতের মূলধন কাঠামো শক্তিশালী করা হবে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে অর্থায়নের সুযোগ বাড়ানো হবে। যা আর্থিক খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এডিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ব্যাংক খাত সংস্কারে ৫০ কোটি ডলার দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের দুর্বল সম্পদ গুণমান, তারল্য–সংকট ও সীমিত আর্থিক অন্তর্ভুক্তিই বড় বাধা। এই কর্মসূচি তা দূর করতে সাহায্য করবে।

জলবায়ু সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে ৪০ কোটি ডলার খরচ হবে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু অর্থায়ন সহজতর করা, বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারত্ব গঠন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়নের কৌশল প্রণয়ন ইত্যাদি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর থ ক এড ব র জলব য়

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি, উপকূল চাষের উপযোগী

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল বোরো ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী- এমন তিনটি নতুন ধানের জাত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি)। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে এনএসবির ১৪৪তম সভায় এসব জাতের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে বুধবার ব্রির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ব্রি জানায়, নতুন উদ্ভাবিত তিন জাতসহ সংস্থাটি এখন পর্যন্ত মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৮টি হাইব্রিড জাত।

নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ একটি মাঝারি মেয়াদী রোপা আমনের জাত, যা লবণাক্ত জমির জন্য উপযোগী। চারা অবস্থায় এটি ১২ ডিএস/মি. পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। এ জাতের জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন এবং গড় উচ্চতা ১০৩-১০৫ সেন্টিমিটার। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪.১৪ থেকে ৬.১২ টন, যা এর মাতৃজাত ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ১-১.৫ টন বেশি। প্রতি শীষে গড়ে ২১০টি পূর্ণ দানা থাকে, যা ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ৮০-৯০টি বেশি। চাল মাঝারি চিকন, সাদা এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ফসল কাটার পর উপকূলীয় এলাকায় সূর্যমুখী ও লবণ সহনশীল সরিষা চাষের সুযোগ তৈরি হয় বলে জানান গবেষকেরা।

ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এবং জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতটির জীবনকাল গড়ে ১৪৩ দিন, গাছের উচ্চতা ১০২-১০৫ সেন্টিমিটার। চাল মাঝারি চিকন ও সাদা, অনেকটা নাইজারশাইল ধানের মতো দেখতে। ১০০০টি দানার গড় ওজন ১৯.৪ গ্রাম। এতে প্রোটিনের পরিমাণ ৮.৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় এ জাতটি ব্রি ধান-৮৮ এর তুলনায় ১১.৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৮.১৫ টন হলেও উন্নত ব্যবস্থাপনায় তা ১০.১ টন পর্যন্ত হতে পারে।

তৃতীয় জাতটি ব্রি ধান-১১৪, যা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং দীর্ঘ জীবনকালীন বোরো জাত। গড় জীবনকাল ১৪৯ দিন। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭.৭৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যায় তা ১০.২৩ টন পর্যন্ত যেতে পারে। চাল মাঝারি মোটা ও সোনালি বর্ণের। ১০০০টি ধানের ওজন ১৭.৪ গ্রাম এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ব্রি জানায়, ব্লাস্ট রোগের কারণে যেসব এলাকায় ধানের ফলন কমছে, সেসব এলাকায় এই জাতটি চাষ করে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

ব্রি'র মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিবেশ ও চাষোপযোগী অঞ্চলভেদে জাত উদ্ভাবন। যাতে কৃষকের আয় বাড়ে এবং খাদ্য নিরাপত্তা আরও শক্ত হয়। নতুন এ জাতগুলোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা ও রোগবালাই মোকাবিলায় কৃষকের সক্ষমতা আরও বাড়বে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শস্যভান্ডারে যুক্ত হলো নতুন তিন জাতের ধান
  • ব্লাস্ট প্রতিরোধীসহ নতুন ৩ ধানের জাত উদ্ভাবন
  • এলো নতুন ৩ জাতের ধান
  • নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি
  • নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি, উপকূল চাষের উপযোগী