হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে সবার জন্য বিপজ্জনক হবে: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Published: 21st, June 2025 GMT
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইরানে ইসরায়েলের যে হামলা করছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রও যদি যুক্ত হয়; তাহলে তা সবার জন্যই খুবই বিপজ্জনক হবে।
আজ শনিবার ইস্তাম্বুলে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির এক সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন। খবর আল জাজিরা, বিবিসির
আরাঘচি বলেছেন, কূটনীতিতে ফিরতে হলে আগে আগ্রাসন থামাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দেশের জনগণের ওপর যখন বোমা পড়ছে, যে বোমা হামলায় যুক্তরাষ্ট্রেরও সমর্থন রয়েছে, তখন তো আমি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যেতে পারি না।
আরাঘচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে এই আগ্রাসনে শুরু থেকেই জড়িত, ইরান এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (আমেরিকা) অস্বীকার করে, বারবার বলে, তারা জড়িত নয়। কিন্তু তারা যে প্রথম দিন থেকেই জড়িত; তার অনেক ইঙ্গিত আছে। আর এখন তো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকারে সব পরিষ্কার, তিনি এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার কথাই খোলামেলা বলছেন।
আরাঘচি আরও বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা শুনছি, যুক্তরাষ্ট্রও হয়তো এ আগ্রাসনে যুক্ত হতে পারে, এটা হবে খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমার মনে হয়, এটা সবার জন্যই খুবই বিপজ্জনক হবে।
এদিকে নুর নিউজ ইসরায়েলি হামলায় ইরানি আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১৫ কর্মকর্তা ও সেনার নাম প্রকাশ করেছে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদরেজা জাফরগান্দি বার্তা সংস্থা ফারসকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ইরানের তিনটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, দুই স্বাস্থ্য কর্মী ও এক শিশুকে হত্যা করেছে। তারা ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সেও হামলা চালিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ইরানের খুররমবাদ শহরে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ইসর য় ল বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান এরদোয়ানের
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করাই বর্তমান সংঘাত নিরসনের একমাত্র পথ।
আলজাজিরা লিখেছে, শনিবার (২১ জুন) ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সম্মেলনের ফাঁকে এরদোয়ান এই বৈঠক করেন। তার দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, তুর্কি নেতা বলেছেন ইসরায়েলকে ‘অবিলম্বে থামাতে হবে’।
এরদোয়ান আরো বলেন, পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে তুরস্ক একটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত ও শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথ খুলে দেওয়ার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলে ডজন ডজন ড্রোন ছোড়া হয়েছে: ইরান
মাখোঁ-পেজেশকিয়ান ফোনালাপ, পারমাণবিক আলোচনায় জোর
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারই আঞ্চলিক শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কূটনীতিদের সম্মেলন চলছে, যেখানে শনিবার (২১ জুন) বক্তব্য দেন এরদোয়ান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই সম্মেলনে ওআইসি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই বৈঠকে আগে ওআইসির সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার উদ্দেশ্য ছিল ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনাকে ব্যাহত করা।
তিনি বলেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, নেতানিয়াহু ও তার সরকার কোনো সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চান না।”
এরদোয়ান আরো বলেন, “নেতানিয়াহুর জায়নবাদী বাসনা শুধু আমাদের অঞ্চলকেই নয়, বরং পুরো বিশ্বকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে চায়।”
তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/রাসেল