ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান এরদোয়ানের
Published: 21st, June 2025 GMT
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করাই বর্তমান সংঘাত নিরসনের একমাত্র পথ।
আলজাজিরা লিখেছে, শনিবার (২১ জুন) ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সম্মেলনের ফাঁকে এরদোয়ান এই বৈঠক করেন। তার দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, তুর্কি নেতা বলেছেন ইসরায়েলকে ‘অবিলম্বে থামাতে হবে’।
এরদোয়ান আরো বলেন, পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে তুরস্ক একটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত ও শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথ খুলে দেওয়ার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলে ডজন ডজন ড্রোন ছোড়া হয়েছে: ইরান
মাখোঁ-পেজেশকিয়ান ফোনালাপ, পারমাণবিক আলোচনায় জোর
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারই আঞ্চলিক শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কূটনীতিদের সম্মেলন চলছে, যেখানে শনিবার (২১ জুন) বক্তব্য দেন এরদোয়ান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই সম্মেলনে ওআইসি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই বৈঠকে আগে ওআইসির সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার উদ্দেশ্য ছিল ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনাকে ব্যাহত করা।
তিনি বলেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, নেতানিয়াহু ও তার সরকার কোনো সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান চান না।”
এরদোয়ান আরো বলেন, “নেতানিয়াহুর জায়নবাদী বাসনা শুধু আমাদের অঞ্চলকেই নয়, বরং পুরো বিশ্বকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে চায়।”
তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল; যেখানে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদিও তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল না ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে অনেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২১ জুন পর্যন্ত ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ইসর য় ল এরদ য় ন ক টন ত ত রস ক
এছাড়াও পড়ুন:
ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে তুরস্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠকে যোগ দিতে তুরস্কে পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়ং জার্নালিস্টস ক্লাব জানিয়েছে, আজ শনিবার এই বৈঠকে ৪০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার
তুরস্কের ইস্তানবুলে ২১-২২ জুন অনুষ্ঠিত হবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ৫১তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক।
আরাঘচি গতকাল শুক্রবার জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার পর আজ ওআইসি বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর সংঘাত কমানোর প্রচেষ্টায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দুইবার ফোনালাপ করেছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল ট্রাম্প ইসরায়েলকে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করার জন্য চাপ দেওয়ার সম্ভাবনাকে হালকা করে দেখিয়েছেন। তিনি কূটনৈতিক সমাধানের জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছেন।
এদিকে তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে আজ শনিবার আরব লীগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এক বিবৃতিতে শীর্ষ কূটনীতিকরা ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এই উত্তেজনা থামানোর আহ্বান জানিয়েছে। এই ধরনের হামলা জাতিসংঘের সদস্য একটি দেশের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে জানিয়েছে আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।