বন্দর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অটোরিক্সা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে   কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় রনি জাফর বাহিনীর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন আহতের অভিভাবক বাদি হয়ে মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলো, দুই জাফর ও  রনি, রনির পুত্র রায়হান, নান্নু খলিফার পুত্র শান্ত, মৃত মালেকের পুত্র জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীরের পুত্র আতিক, আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র পারভেজ, হাতেমের পুত্র মুন্না, হিরুর পুত্র রবিন, আসিফ , রবিন, লিকান, সাব্বির, কানা শহিদসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনে।

লিখিত অভিযোগে আহত সাগরের বাবা মোঃ জাকির (৫৫) উল্লেখ করেন, ২নং বিবাদী রনির ছেলে ৩নং বিবাদী রায়হান কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্য। ৩নং বিবাদী এলাকার মধ্যে মাদক ব্যাবসা সহ সকল প্রকার খারাপ কাজের সহিত জড়িত।

বিবাদীদের সহিত আমাদের ঘটনার পূর্ব হইতে সমাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলমান। গত ২০ জুন দুপুর দেড়টার দিকে আমার ছেলে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বন্দর থানাধীন বন্দর রেল-লাইন সাকিনস্থ সজল ষ্টোর নামীয় মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছামাত্র সকল বিবাদীগন তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বে-আইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমার ছেলের চলার পথ গতিরোধ করিয়া অতর্কিত এলোপাথারী মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।

১নং বিবাদী জাফর তার হাতে তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ২নং বিবাদী রনি তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিলে আমার ছেলে উক্ত কোপ বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করায় আমার ছেলের বাম হাতের আঙ্গুলে কোপ লাগিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়।

৩নং বিবাদী রায়হান তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৪নং বিবাদী শান্ত তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আমার ছেলের ডান হাতের কনুইতে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৫নং বিবাদী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।

৬নং বিবাদী তার হাতে থাকা চেইন দিয়ে আমার আমার ছেলের শরীরের বিভিন্নস্থানে বারি মারিয়া রক্ত জমাট জখম করে। ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ নং বিবাদীগন তাদের নিকট থাকা লোহার রড, কাঠের ডাসা, এসএস পাইপ দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা জখম করে।

আমার ছেলের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন আমার ছেলেকে সহ আমার পরিবারের লোকজনদের সুযোগমত পাইলে খুন-জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে। স্থানীয় লোকজন আমার ছেলেকে জখমী অবস্থায় উদ্ধার করিয়া চিকিৎসার জন্য বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে আমি আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাই।

আমার ছেলের চিকিৎসা কাজে ব্যাস্ত থাকায় এবং আমার ছেলের নিকট হইতে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত শুনিয়া এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।

অপরদিকে আহত তানভীরের মা মরিয়ম আক্তার মিসু লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২০ জুন দুপুর ৩টার দিকে আমার ছেলে বাসা হইতে সেভেনআপ কেনার জন্য বন্দর থানাধীন বন্দর রেল লাইন সাকিনস্থ সজল স্টোর নামীয় দোকানে গিয়ে দেখিতে পায় বিবাদীগন রাস্তার উপর অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন লোককে মারপিট করিতেছে।

তখন আমার ছেলে মারপিটের বিষয়টি দেখিয়া বাসায় ফেরার পথে বিবাদীগন সজল এর মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর আমার ছেলের চলার পথ গতি রোধ করিয়া আমার ছেলেকে অতর্কিত লোহার রড, সাইকেলের চেইন, চাপাতি, রামদা দিয়ে আমার ছেলের শনীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া রক্তাক্ত জখম করে।

১নং বিবাদী জাফর তার হাতে তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ২নং বিবাদী রনি তার হাতে থাকা রাম দিয়ে আমার ছেলের ডান পায়ে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৩নং বিবাদী রায়হান তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে।

৪নং বিবাদী শান্ত তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আমার ছেলের বাম পায়ে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৫নং বিবাদী আতিক তার হাতে থাকা চেইন দিয়ে আমার আমার ছেলের শরীরের বিভিন্নস্থানে বারি মারিয়া রক্ত জমাট জখম করে। ৬নং বিবাদী তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পেঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।

৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪ নং বিবাদীগন তাদের নিকট থাকা লোহার রড, কাঠের ডাসা দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা জখম করে। ১৩নং বিবাদী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের ডান হাতের তালুতে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।

আমার ছেলের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন আমার ছেলেকে সহ আমার পরিবারের লোকজনদের সুযোগমত পাইলে খুন জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে।

স্থানীয় লোকজন আমার ছেলেকে জখমী অবস্থায় উদ্ধার করিয়া চিকিৎসার জন্য বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল নারায়নগঞ্জ রেফার্ড করিলে আমি আমার ছেলেকে জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল নারায়নগঞ্জ নিয়ে চিকিৎসা করাই। আমার ছেলের চিকিৎসা কাজে ব্যাস্ত থাকায় এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ আম র ছ ল র প ঠ স থ ন য় ল কজন আম র ছ ল র ড আম র ছ ল র চ আম র ছ ল ক র আম র ছ ল দ য় র কর ম কর য় ত কর য় র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ: বিএনপিতে যোগ দিলেন যে কারণে 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। দলের প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন তিনি।

স্নিগ্ধর হঠাৎ বিএনপিতে যোগদান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিএনপিতে যোগদান বিষয়ে তিনি নিজেই মুখ খুলেছেন।

বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পেজে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধর স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘‘আসসালামু আলাইকুম 
আমি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। জুলাইয়ের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমিও সামাজিকভাবে নানা কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্ব করেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে সেই লক্ষ বাস্তবায়নে  রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি।

আপনারা জানেন যে আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না, মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি মুগ্ধসহ সকল শহিদ কোন রাজনৈতিক দলের নয়, তারা সকল মানুষ এবং দেশের সম্পদ। 

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং এই নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে  অংশগ্রহণ করছি। এবং সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই।

অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার। আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পিছনে অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো- 

সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা। জুলাই শহিদ, আহত যোদ্ধা,  শহিদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের ভয়েস হয়ে উঠা, রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং বাংলাদেশপন্থী ও জুলাইপন্থী সকল অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান কারার পিছনে আমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩ এর অনেক জায়গা আছে যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী। 

দ্বিতীয়ত আমি মনে করি, সকল পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই আমি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হচ্ছি। এতে করে জুলাইয়ের ঐক্য শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে আমি মনে করি।

তাছাড়া বিএনপির সন্মানিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান চাচ্ছেন যে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আমি মনে করি।

তবে সর্বোপরি আমি সকল রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও   জুলাইপন্থী সকলের সাথে কাজ করে যেতে চাই। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মান আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য। আমার এই পথচলাই  সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করছি। মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ জনমানুষের সকল সংগ্রাম চির অম্লান হোক।

আরেকটি বিষয়, এতদিন যত দায়িত্ব আমি পালন করেছি সব দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং সততার সাথে পালন করেছি। যদি কোন অভিযোগ থাকে দয়া করে অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করবেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশাই করতে পারি।’’

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

সম্পর্কিত নিবন্ধ