বন্দরে অটোরিক্সা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ২টি অভিযোগ দায়ের
Published: 21st, June 2025 GMT
বন্দর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অটোরিক্সা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় রনি জাফর বাহিনীর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন আহতের অভিভাবক বাদি হয়ে মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো, দুই জাফর ও রনি, রনির পুত্র রায়হান, নান্নু খলিফার পুত্র শান্ত, মৃত মালেকের পুত্র জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীরের পুত্র আতিক, আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র পারভেজ, হাতেমের পুত্র মুন্না, হিরুর পুত্র রবিন, আসিফ , রবিন, লিকান, সাব্বির, কানা শহিদসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনে।
লিখিত অভিযোগে আহত সাগরের বাবা মোঃ জাকির (৫৫) উল্লেখ করেন, ২নং বিবাদী রনির ছেলে ৩নং বিবাদী রায়হান কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্য। ৩নং বিবাদী এলাকার মধ্যে মাদক ব্যাবসা সহ সকল প্রকার খারাপ কাজের সহিত জড়িত।
বিবাদীদের সহিত আমাদের ঘটনার পূর্ব হইতে সমাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলমান। গত ২০ জুন দুপুর দেড়টার দিকে আমার ছেলে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বন্দর থানাধীন বন্দর রেল-লাইন সাকিনস্থ সজল ষ্টোর নামীয় মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছামাত্র সকল বিবাদীগন তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বে-আইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমার ছেলের চলার পথ গতিরোধ করিয়া অতর্কিত এলোপাথারী মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
১নং বিবাদী জাফর তার হাতে তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ২নং বিবাদী রনি তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিলে আমার ছেলে উক্ত কোপ বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করায় আমার ছেলের বাম হাতের আঙ্গুলে কোপ লাগিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়।
৩নং বিবাদী রায়হান তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৪নং বিবাদী শান্ত তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আমার ছেলের ডান হাতের কনুইতে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৫নং বিবাদী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
৬নং বিবাদী তার হাতে থাকা চেইন দিয়ে আমার আমার ছেলের শরীরের বিভিন্নস্থানে বারি মারিয়া রক্ত জমাট জখম করে। ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ নং বিবাদীগন তাদের নিকট থাকা লোহার রড, কাঠের ডাসা, এসএস পাইপ দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা জখম করে।
আমার ছেলের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন আমার ছেলেকে সহ আমার পরিবারের লোকজনদের সুযোগমত পাইলে খুন-জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে। স্থানীয় লোকজন আমার ছেলেকে জখমী অবস্থায় উদ্ধার করিয়া চিকিৎসার জন্য বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে আমি আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাই।
আমার ছেলের চিকিৎসা কাজে ব্যাস্ত থাকায় এবং আমার ছেলের নিকট হইতে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত শুনিয়া এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।
অপরদিকে আহত তানভীরের মা মরিয়ম আক্তার মিসু লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২০ জুন দুপুর ৩টার দিকে আমার ছেলে বাসা হইতে সেভেনআপ কেনার জন্য বন্দর থানাধীন বন্দর রেল লাইন সাকিনস্থ সজল স্টোর নামীয় দোকানে গিয়ে দেখিতে পায় বিবাদীগন রাস্তার উপর অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন লোককে মারপিট করিতেছে।
তখন আমার ছেলে মারপিটের বিষয়টি দেখিয়া বাসায় ফেরার পথে বিবাদীগন সজল এর মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর আমার ছেলের চলার পথ গতি রোধ করিয়া আমার ছেলেকে অতর্কিত লোহার রড, সাইকেলের চেইন, চাপাতি, রামদা দিয়ে আমার ছেলের শনীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া রক্তাক্ত জখম করে।
১নং বিবাদী জাফর তার হাতে তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের মাথায় কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ২নং বিবাদী রনি তার হাতে থাকা রাম দিয়ে আমার ছেলের ডান পায়ে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৩নং বিবাদী রায়হান তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পিঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে।
৪নং বিবাদী শান্ত তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আমার ছেলের বাম পায়ে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৫নং বিবাদী আতিক তার হাতে থাকা চেইন দিয়ে আমার আমার ছেলের শরীরের বিভিন্নস্থানে বারি মারিয়া রক্ত জমাট জখম করে। ৬নং বিবাদী তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের পেঠে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪ নং বিবাদীগন তাদের নিকট থাকা লোহার রড, কাঠের ডাসা দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা জখম করে। ১৩নং বিবাদী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা তালোয়ার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের ডান হাতের তালুতে কোপ মারিয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
আমার ছেলের ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন আমার ছেলেকে সহ আমার পরিবারের লোকজনদের সুযোগমত পাইলে খুন জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে।
স্থানীয় লোকজন আমার ছেলেকে জখমী অবস্থায় উদ্ধার করিয়া চিকিৎসার জন্য বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল নারায়নগঞ্জ রেফার্ড করিলে আমি আমার ছেলেকে জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল নারায়নগঞ্জ নিয়ে চিকিৎসা করাই। আমার ছেলের চিকিৎসা কাজে ব্যাস্ত থাকায় এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ আম র ছ ল র প ঠ স থ ন য় ল কজন আম র ছ ল র ড আম র ছ ল র চ আম র ছ ল ক র আম র ছ ল দ য় র কর ম কর য় ত কর য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটেন সময় নিলো ১০৮ বছর
১০৮ বছর আগে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া ইসরায়েলের জন্মের ঘোষণা দিয়েছিল ব্রিটেন। এই শতবর্ষে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল, বাস্তুচ্যুত করেছে লাখ লাখ মানুষকে। ফিলিস্তিনিদের কান্না ব্রিটিশরা কখনোই শোনেনি। আজ ফিলিস্তিন যখন ধ্বংসের দোরগোড়ায় তখন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো ব্রিটেন।
১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোর স্বাক্ষরিত একটি ঘোষণাপত্রে ফিলিস্তিনে ইহুদি জনগণের জন্য একটি জাতীয় আবাসভূমি (জাতীয় রাষ্ট্র) প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনের সমর্থন দেয়। এই ঘোষণাটি জায়নিস্ট ফেডারেশন অব গ্রেট ব্রিটেন এন্ড আয়ারল্যান্ডের নেতা লিয়োনেল ওয়াল্টার রথচাইল্ডকে পাঠানো একটি চিঠির মাধ্যমে জারি করা হয়েছিল। এই ঘোষণাটি ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের পথ খুলে দেয়। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের বদৌলতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইসরায়েল রাষ্ট্র।
১৯৪৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় দেড় লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। শুধুমাত্র ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। সম্প্রতি গাজা সিটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। গাজার কেন্দ্রীয় শহর থেকে বাসিন্দাদের বের করে উপকূলীয় এলাকায় যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রবিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, “একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইসরায়েল এবং একটি কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র - এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এর কোনটিই নেই। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার মুহূর্ত এখন এসে গেছে। তাই, আজ, শান্তি এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য, এই মহান দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি স্পষ্টভাবে বলছি যে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।”
যুক্তরাজ্য সরকার জুলাই মাসে বলেছিল, তারা সর্বাধিক প্রভাবের একটি অনুমিত মুহূর্ত পর্যন্ত স্বীকৃতি স্থগিত রাখার দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতি পরিবর্তন করবে - যদি না ইসরায়েল গাজায় তার গণহত্যা যুদ্ধ বন্ধ করে, একটি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় যা একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রদান করে এবং ছিটমহলে আরো ত্রাণ প্রদানে সহায়তা করে।
কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে গাজার বিপর্যয়কর পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কারণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা শহরকে দখল করার জন্য পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করে চলেছে, একই সাথে ছিটমহলের দুর্ভিক্ষপীড়িত জনগোষ্ঠীকে অনাহারে এবং বাস্তুচ্যুত করে চলেছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর জুড়ে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রতিদিনের অভিযান এবং বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণও অব্যাহত রয়েছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে সংযুক্ত করার এবং অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সংলগ্ন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাকে ‘কবর’ দেওয়ার পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশন শুরু হওয়ার দুই দিন আগে কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এরপরই ব্রিটেন এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ