নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধের জেরে দুজন নিহতের পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় ও রাত সাড়ে ১১টায় হাফেজীবাগ এলাকায় দুজন নিহত হন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‍্যাব।

নিহত দুজন হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজীবাগ এলাকার আবদুল কুদ্দুস (৭০) ও বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার প্রয়াত আবদুল জলিলের ছেলে মেহেদী হাসান। আবদুল কুদ্দুস পেশায় রাজমিস্ত্রী ও মেহেদী হাসান বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি মাছ ব্যবসায়ী বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো এলাকা থমথমে অবস্থা। আতঙ্কে এলাকার লোকজন দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় বিপুলসংখ্যক র‍্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের আতঙ্কে অধিকাংশ বাড়ির পুরুষ এলাকাছাড়া।

স্থানীয় ফল বিক্রেতা ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে তাঁর দোকানের আম ও কাঁঠাল পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বিবদমান দুই পক্ষ আগে একসঙ্গে থাকত বলে তিনি জানান।

দুপুরে হাফেজীবাগ এলাকায় নিহত আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনেরা আহাজারি করছেন। নিহত আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী পারভীন বেগম বলেন, গত শুক্রবার রাতে তাঁর স্বামী পাখির খাবার কিনতে দোকানে গেলে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের সমর্থক বাবু–মেহেদীসহ ৪০ থেকে ৫০ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

অন্যদিকে বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার মেহেদী হাসানের বাড়িতে মাতম চলছে। মেহেদী হাসান বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মেহেদীর ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, তাঁর ভাই মেহেদীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী রনি–জাফরের লোকজন। তিনি তাঁর ভাইয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রেললাইন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষ বাবু–মেহেদী ও রনি–জাফর পক্ষের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

আরও পড়ুননারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একজনকে কুপিয়ে হত্যা১১ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দারা জানান, পূর্ববিরোধের জেরে শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার জেরে গতকাল রাতে জাফরের সমর্থক পারভেজের বাবা আবদুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিপক্ষ বাবু–মেহেদীর লোকজন। এ ঘটনার জেরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন্দর সিরাজুদ্দৌলার ক্লাব মাঠের সামনে বাবু–মেহেদী পক্ষের মেহেদীকে আটকে গণপিটুনি ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন রনি–জাফর পক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় হাফেজীবাগ এলাকা থেকে শান্ত (২৫), রবিন (২৮) ও কবির হোসেনকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র‍্যাব।

সকালে পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মারামারির ঘটনায় করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত অন্য ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ফ জ ব গ এল ক আবদ ল ক দ দ স র ল কজন ব এনপ র এল ক র এল ক য় ঘটন য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি

সোনারগাঁয়ে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় তৈরিতে ‘গাছে-গাছে মাটির হাঁড়ি’ স্থাপন করে বাসা তৈরির মাধ্যমে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছে যৌথভাবে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি ও বিসমিল্লাহ এন এম জুলফিকার  ফাউন্ডেশন।

‘পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, এদের রক্ষায় এগিয়ে আসুন’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার (০৪ আগষ্ট) দুপুরে সোনারগাঁ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন(সোনারগাঁ জাদুঘর) এর ভিতরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছে শতাধিক মাটির হাঁড়ি স্থাপন করা হয়।

পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক(উপসচিব) কাজী মাহবুবুর আলম।

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এ কে আজাদ সরকার,মানবকল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূঁইয়া,পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির মহাসচিব মীযানুর রহমান।

কাজী মাহবুবুর আলম বলেন,পাখিরা আমাদের পরিবেশের অপরিহার্য অংশ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখিদের নিরাপদ ঘর ও বসবাস নিশ্চিত করা সবার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। পাখিরা প্রকৃতির অপরিহার্য সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।

তিনি আরও জানান, পাখিদের জন্য গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বসানোর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এসব মাটির হাঁড়ি ঝড়-বৃষ্টি ও শীত থেকে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রজননে পাখিদের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্যোগ ধীরে ধীরে উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন,প্রতিবন্ধী শিশু ও যুব কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মহিন, বাংলাদেশ তথ্য ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মো. শামীম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমেদ, বিজয় টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি দ্বীন ইসলাম অনিক, এনটিভির অনলাইন প্রতিনিধি কামরুল হাসান,জাতীয় নাগরিক পার্টির সোনারগাঁয়ের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক খন্দকার পনির,নয়া শতাব্দী পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ,পরিবেশকর্মী আল আমিন, সিফাত সহ প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় বিএনপির বিজয় র‍্যালিতে মহানগর ছাত্রদলের অংশগ্রহণ 
  • ঢাকায় বিজয় র‌্যালিতে মহানগর বিএনপির শোডাউন 
  • কদম রসুল সেতুর পশ্চিমাংশের মুখ পরিবর্তনের দাবিতে ১৩ প্রতিষ্ঠানের স্মারকলিপি 
  • ঢাকার বিজয় র‌্যালিতে জেলা বিএনপির বিশাল শোডাউন
  • নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা দাইয়ান
  • নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা আব্দুদ দাইয়ান
  • কদম রসুল সেতুর পশ্চিমাংশের মুখ পরিবর্তনের দাবিতে ১৩ প্রতিষ্ঠানের স্মারক লিপি 
  • ধামগড় ইউপি চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা কামাল গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মুফতি মাসুম বিল্লাহকে হাতপাখার প্রার্থী ঘোষণা
  • সোনারগাঁয়ে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি