নির্মাতা সিদ্ধার্থের পর দীপিকাকে সমর্থন জানালেন সোনাক্ষী
Published: 23rd, June 2025 GMT
কর্মজীবন ও পরিবারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে নতুন পথে হাঁটার কথা ভাবছে বলিউড তারকারা। ৮ ঘণ্টা কাজ, মাসের বিশেষ বিশেষ দিনে বিশ্রামের মতো মৌলিক বেশ কিছু দাবিতে সরব হচ্ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে বলিউডে গত কয়েক দিন ধরে চর্চা তুঙ্গে। এবার এই আলোচনায় নিজের মতামত জানালেন অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা।
নতুন করে ৮ ঘণ্টা কাজের আলোচনার সূত্রপাত সন্দীপ রেড্ডি বঙ্গার ছবি ‘স্পিরিট’ ঘিরে। ছবিতে প্রভাসের বিপরীতে প্রথমে প্রস্তাব দেওয়া হয় দীপিকা পাড়ুকোনকে। অভিনেত্রী শর্ত, আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না। পারিশ্রমিক নেবেন ২০ কোটি টাকা। এই দাবির জন্য বাদ পড়তে হয় দীপিকাকে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দীপিকাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সোনাক্ষী বলেছেন, ‘আমি সম্পূর্ণভাবে ৮ ঘণ্টা শুটিং করায় বিশ্বাসী। আমি নিজেও এমন অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছি, যারা আট ঘণ্টার বেশি কাজ করেন না। তা হলে অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রেই বা বিষয়টা অন্য রকম হবে কেন?’
সোনাক্ষীর কথায়, ‘কী ধরনের কাজ করছি এবং সেই কাজের কী কী দাবি, সে দিকটাও দেখা উচিত। যেখানে শুটিং হবে, তার পাশে থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শুটিংয়ের অনেক ভাগ থাকে। সেগুলোও ফাঁকে ফাঁকে সেরে নেওয়া যেতে পারে।’
তিনি বলেছেন, ‘১৫ বছর ধরে কাজ করছি। এটুকে বুঝেছি, নিজের জন্য সময় বের করা জরুরি। কোনও ছবিতে যদি আমাকে একেবারে ওজন কমিয়ে ধরা দিতে হয়, তাহলে নিজের শরীরচর্চার জন্যই তো আমার ২ ঘণ্টা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে আমি ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারব না। তবে শরীরচর্চা করার প্রয়োজন না হলে আমি প্রয়োজনে ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করতে রাজি। তবে সেটা একান্ত প্রয়োজন হলে তবেই করব।’
এর আগে কাজল ও রানি মুখার্জি ৮ ঘণ্টা কাজ নিয়ে বহুবার কথা বলেছিলেন। দুদিন আগেও দীপিকার সমর্থনে কথা বলেন পরিচালক সিদ্ধার্থ পি মালহোত্রা। সূত্র: আনন্দবাজার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ওজুর ফরজ কয়টি
ওজু ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং অন্যান্য ধর্মীয় কাজের জন্য পবিত্রতার পূর্বশর্ত। কোরআনে আল্লাহ ওজুর ফরজ কাজগুলো স্পষ্ট বর্ণনা করেছেন। তবে ওজু শুধু শারীরিক পবিত্রতাই নিশ্চিত করে না, বরং এটি মানুষের মনকে আধ্যাত্মিকভাবে আল্লাহর সান্নিধ্যের জন্য প্রস্তুত করে।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ওজু করে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করে, তার গুনাহ তার শরীর থেকে ঝরে পড়ে, এমনকি তার নখের নিচ থেকেও।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪৫) আরেকটি হাদিসে আছে, ‘ওজু হলো ইমানের অর্ধেক।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৪৮৯)
ওজুর ফরজ কয়টিওজুর ফরজ চারটি, যা কোরআন (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৬) এবং হাদিসে সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত। এগুলো হলো—
১. মুখমণ্ডল ধোয়া: পুরো মুখ, অর্থাৎ কপালের চুলের রেখা থেকে চিবুক পর্যন্ত এবং দুই কানের মাঝখান পর্যন্ত ধুয়ে ফেলা। এটি ওজুর প্রথম ফরজ।
২. দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া: দুই হাতের হাতের তালু থেকে কনুই পর্যন্ত ধোয়া, যাতে কোনো অংশ বাদ না যায়।
৩. মাথায় মাসেহ করা: মাথার সামনের অংশে ভেজা হাত দিয়ে মাসেহ করা। হানাফি মাজহাবে মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসেহ করলেই যথেষ্ট।
৪. দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া: দুই পায়ের পাতা থেকে টাখনু পর্যন্ত ধোয়া, যাতে আঙুলের ফাঁকসহ পুরো অংশ ভিজে।
আরও পড়ুনপবিত্রতায় অজু ও গোসলের বিকল্প তায়াম্মুম২৪ ডিসেম্বর ২০২১ওজুর ফরজের বিস্তারিত ব্যাখ্যাফরজগুলো সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক, কেননা, স্পষ্ট বিধান জানা না থাকায় অনেকের ভুল হয়ে যায়।
১. মুখমণ্ডল ধোয়া: মুখ ধোয়ার সময় কপালের চুলের রেখা থেকে চিবুক এবং দুই কানের মাঝখান পর্যন্ত পুরো অংশ ধুয়ে ফেলতে হবে। এর মধ্যে মুখের ভেতরে কুলি করা বা নাকের ভেতরে পানি দেওয়া ফরজ নয়, তবে এগুলো সুন্নত। নবীজি (সা.) ওজু করার সময় পুরো মুখমণ্ডল ধুয়েছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৫)
২. দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া: দুই হাত ধোয়ার সময় হাতের তালু থেকে কনুই পর্যন্ত পুরো অংশ ধুয়ে ফেলতে হবে। হানাফি মাজহাবে কনুই পর্যন্ত ধোয়া ফরজ এবং কনুইয়ের ওপরের অংশ ধোয়া সুন্নত। হাদিসে বর্ণিত, নবীজি (সা.) ওজু করার সময় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়েছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২২৬)
৩. মাথা মাসেহ করা: মাথায় মাসেহ করার জন্য ভেজা হাত দিয়ে মাথার সামনের অংশে মাসেহ করতে হবে। হানাফি মাজহাবে মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসেহ করলেই ফরজ আদায় হয়। শাফিই মাজহাবে পুরো মাথা মাসেহ করা ফরজ। নবীজি (সা.) ওজু করার সময় দুই হাত ভিজিয়ে মাথায় মাসেহ করতেন। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১১১)
৪. দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া: দুই পা ধোয়ার সময় পায়ের আঙুলের ফাঁক থেকে টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। টাখনুর ওপরের অংশ ধোয়া সুন্নত। হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘যারা ওজুতে পা টাখনু পর্যন্ত না ধুয়ে বাদ দেয়, তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৬৫)
আরও পড়ুনঅজু করার নিয়ম কানুন১৯ ডিসেম্বর ২০২৩কয়েকটি পরামর্শওজু পালন করার জন্য ব্যবহারিক কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:
সময় ব্যবস্থাপনা: ওজুতে সাধারণত দুই থেকে তিন মিনিট সময় লাগে। নামাজের আগে পরিকল্পনা করে ওজুর জন্য সময় রাখা যায়।
পানি সংরক্ষণ: নবীজি (সা.) অল্প পানি দিয়ে ওজু করতেন। আধুনিক সময়ে পানির অপচয় এড়িয়ে ওজু করা পরিবেশের জন্যও উপকারী। একটি হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) এক মুদ (প্রায় ৬২৫ মিলিলিটার) পানি দিয়ে ওজু করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০০)
কর্মক্ষেত্রে ওজু: অফিস বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওজুর জন্য ওয়াশরুম বা নির্দিষ্ট স্থান ব্যবহার করা যায়। অনেক মসজিদ ও প্রতিষ্ঠানে ওজুর ব্যবস্থা থাকে।
ওজুর ক্ষেত্রে সতর্কতাপূর্ণতা নিশ্চিত করা: ফরজ অংশগুলোর কোনোটি বাদ দেওয়া যাবে না। যেমন পায়ের আঙুলের ফাঁক বা কনুইয়ের কিছু অংশ বাদ দেওয়া হলে ওজু পূর্ণ হবে না।
ক্রম বজায় রাখা: হানাফি মাজহাবে ফরজ কাজগুলো ক্রমানুসারে করা ওয়াজিব।
পানির ব্যবহার: পানি অপচয় না করে সুন্নত অনুযায়ী অল্প পানি ব্যবহার করা।
নিয়ত: মনে মনে ওজুর নিয়ত করা সুন্নত, যা ওজুকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণযোগ্য করে।
(আল-ফিকহুল মুয়াসসার, মুহাম্মদ ইবনে সালিহ, পৃষ্ঠা: ৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা: ২০১৫)
ওজুর ফরজগুলো পালনের মাধ্যমে মুমিন নামাজের জন্য পবিত্রতা অর্জন করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। প্রযুক্তি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ওজু পালন করা সহজ হয়েছে। নবীজি (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করে ওজু করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ইবাদতকে আরও পরিপূর্ণ করতে পারি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।
আরও পড়ুনঅজু ভাঙার কারণ: পবিত্রতা অর্জনে সতর্কতা১০ জুলাই ২০২৫