রাতে ঘুমিয়ে পড়েছেন ক্লান্ত শরীর নিয়ে। অথচ মুখের ভেতরে শুরু হয়েছে এক নিঃশব্দ ‘ধ্বংসযজ্ঞ’। দাঁত চেপে ধরছে; একটি দাঁতের সঙ্গে আরেকটির বারবার ঘষা লাগছে। দাঁতে দাঁত চেপে আসা এই রহস্যময় অভ্যাসের নাম ‘নাইট ব্রুকসিজম’; মানে রাতে দাঁত ঘষা।

আশ্চর্য হলেও সত্য, অনেকেই নিজের অজান্তে এ রোগে ভোগেন। হয়তো পাশের মানুষ বিষয়টি খেয়াল করেন। ঘুমের মধ্যে টের না পেলেও এ অভ্যাসের কারণে সকালে ঘুম ভেঙে মুখে ব্যথা, দাঁতের গুঁড়া খসে পড়া, মাথাব্যথা বা চোয়ালে অস্বস্তি হতে পারে। তখন এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করেন।

কেন হয়

নাইট ব্রুকসিজমের মূল কারণ সাধারণত মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ঘুমের ব্যাধি বা অনিয়মিত রুটিন।

কখনো জেনেটিক প্রবণতা, মাদক বা ক্যাফেইনও দায়ী হতে পারে।

এ সমস্যা শুধু দাঁতের ক্ষয় নয়; বরং ধীরে ধীরে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে।

চিকিৎসা

নাইট ব্রুকসিজমের চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যক্তির অভ্যাস ও পরিস্থিতির ওপর। সাধারণত দাঁতে ‘নাইট গার্ড’ ব্যবহার, রিলাক্সেশন থেরাপি, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, ভালো ঘুমের রুটিন ও প্রয়োজনে কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ অভ্যাসকে অবহেলা করলে দাঁতের স্থায়ী ক্ষয়, চোয়ালের জটিলতা ও দিনের ক্লান্তি বাড়তেই থাকে। তাই কারও রাতের বেলা দাঁতে দাঁত ঘষার অভ্যাস লক্ষ করলে তা অবহেলা করা উচিত হবে না। গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করান।

ডা.

জেবিন জান্নাত: ডেন্টাল ইউনিট, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান প্রশ্নে রুল

নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধিত এমন বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) অধ্যাদেশের ওই বিধান–সংবলিত ৯ অনুচ্ছেদ সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের (২৮, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না—রুলে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নতুন ওই বিধান যুক্ত করে ৩ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। আগে কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত।

ওই বিধান–সংবলিত অধ্যাদেশের ৯ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মহাসচিব মোমিনুল আমিন গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাহেদুল আজম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জোট করলেও দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি। দলটি নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরে। বিএনপি মনে করে, জোটগত নির্বাচন করলেও নিজস্ব প্রতীকে ভোট করে ছোট দলগুলোর নেতাদের জয় সহজ হবে না। এর ফলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সুফল পেয়ে যেতে পারে।

তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই সংশোধনের পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জোট করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে হবে নিজ দলের প্রতীকে, শেষ পর্যন্ত এমন বিধান যুক্ত করেই ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

আরও পড়ুনজোটেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি ০৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ