দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ লাখ ২০ হাজারেও বেশি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভিডিও ক্যামেরা হ্যাক করার ও সেই ফুটেজ ব্যবহার করে একটি বিদেশি ওয়েবসাইটের জন্য যৌন কনটেন্ট তৈরি করার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পুলিশ সংস্থার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গোয়েন্দাপ্রধান গ্রেপ্তার

সাবমেরিন ইস্যুতে আটকে গেল দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) ক্যামেরার দুর্বলতা যেমন সহজ পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে হ্যাকিং চালাতো।  

সিসিটিভির তুলনায় সস্তা হওয়ায় আইপি ক্যামেরা বা হোম ক্যামেরা সাধারণত বাড়ির নিরাপত্তা, শিশু ও পোষা প্রাণীর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। হ্যাক হওয়া ক্যামেরার অবস্থান ছিল ব্যক্তিগত বাসা, কারাওকে রুম, শরীরচর্চা কেন্দ্র, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ক্লিনিকসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল স্থান। 

দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পুলিশ সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, চার সন্দেহভাজনের মধ্যে সমন্বয় করে হ্যাকের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা বিচ্ছিন্নভাবে এসব অপরাধ চালিয়েছে।

গ্রেপ্তার একজনের বিরুদ্ধে ৬৩ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৫৪৫টি যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও তৈরির অভিযোগ রয়েছে, যা তিনি ৩ কোটি ৫০ লাখ উন বা ১২ হাজার ২৩৫ মার্কিন ডলারের সমমূল্য ভার্চুয়াল সম্পদের বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন।

আরেকজনের বিরুদ্ধে ৭০ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৬৪৮টি ভিডিও এক কোটি ৮০ লাখ উনের বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

এ দুই ব্যক্তি গত এক বছরে অবৈধভাবে আইপি ক্যামেরার ফুটেজ বিতরণকারী একটি বিদেশি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিডিওর প্রায় ৬২ শতাংশের জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ এখন ওয়েবসাইটটি বন্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর পরিচালকের বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথ তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি সাইট থেকে ভিডিও কেনা বা দেখা-এমন আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জাতীয় পুলিশ সংস্থার সাইবার তদন্ত প্রধান পার্ক উ-হিউন বলেন, “আইপি ক্যামেরা হ্যাকিং এবং অবৈধ ভিডিও ধারণ ভুক্তভোগীদের ওপর গভীর মানসিক ও সামাজিক ক্ষতি তৈরি করে। এগুলো গুরুতর অপরাধ। অবৈধভাবে ধারণকৃত ভিডিও দেখা বা রাখাও অপরাধ। আমরা সেগুলোও কঠোরভাবে তদন্ত করব।”

পুলিশ এখন পর্যন্ত ৫৮টি স্থানে ভুক্তভোগীদের সরাসরি গিয়ে বা যোগাযোগ করে অবহিত করেছে এবং দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের ফুটেজ মুছে ফেলা ও ব্লক করতে সহায়তা করছে এবং আরও ভুক্তভোগীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে।

জাতীয় পুলিশ সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, যারা বাসায় বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আইপি ক্যামেরা ব্যবহার করেন, তাদের সচেতন থাকা ও নিয়মিতভাবে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাটা সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ য ক কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

মাহিদুল নাকি শামীম?

ড্রেসিংরুমে বিশ্বাসের রেণু ছড়িয়ে দিতে মুশতাক আহমেদ সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। স্পিন বোলিং কোচের সঙ্গে অনুশীলন শেষে সময় কাটাচ্ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। পায়ে প‌্যাড জোড়া খুলেননি। ওটা নিয়েই মাঠ চক্কর দিচ্ছিলেন কয়েকবার। দুজনের গুরুগম্ভীর কথা যেন শেষ-ই হচ্ছিল না। কি নিয়ে কথা তা জানার উপায় নেই। তবে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা মাহিদুলের সুযোগ আসবে, সেই বিশ্বাস দিচ্ছিলেন মুশতাক এতোটুকু নিশ্চিত। সঙ্গ এটা-ওটা নিয়ে কথা তো আছেই।  

মাহিদুলকে বিশ্বাস দেওয়া ছাড়া বেশি কিছু করারও মুশতাকের নেই। যেমনটা নেই পেস বোলিং কোচ শন টেইটেরও। তাইতো সোজাসাপ্টা উত্তর দিলেন, ‘‘আমি নির্বাচক নই যে কাউকে দলে নেব।’’ 

আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির জন‌্য তাকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি দলে নেওয়া হয়েছিল। এর আগেই তার টেস্ট ও ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল। শেষ ম‌্যাচেও তাকে রাখা হয়েছে স্কোয়াডে। কিন্তু খেলার সুযোগ হবে কিনা নিশ্চিত নন মাহিদুলও।

এর মধ‌্যে আবার স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে। যাকে নিয়ে রীতিমত উত্তাপ, বিতর্ক, টালমাটাল হয়ে গেছে দেশের ক্রিকেট। নির্বাচকরা মাহিদুলকে দলে নিয়েছেন। শামীমকে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিনায়ক শামীমকে দলে চেয়েছিলেন। কেন বাদ পড়েছিলেন সেই কারণটা লিটন জানতেন না। সংবাদ সম্মেলনে বোমা ফাঁটানোর পর দুই মেরুতে চলে যান অধিনায়ক ও নির্বাচকরা। 

যাকে ঘিরে এতো কিছু, শামীমের পরিবর্তে নেওয়া মাহিদুল কি শেষ ম‌্যাচে সুুযোগ পাবেন। টেইট বাড়তি এক লাইন যোগ করেছিলেন, ‘‘‘যারা দল ঠিক করে, তাদের জিজ্ঞেস করুন।’’ বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে দল দেন শুধু নির্বাচকরা। একাদশ তৈরি করেন কোচ ও অধিনায়ক। তবে উপমহাদের বাইরের সেই রীতি অনেকটাই পরিবর্তিত। 

শন টেইট যেই জায়গা থেকে এসেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় দল বাছাই, একাদশ গঠনে নির্বাচকরা বড় ভূমিকা রাখেন। দল বাছাইয়ে অধিনায়ক ও কোচেরও থাকে ভূমিকা। এখানে সব কিছুই অধিনায়ক-কোচ কেন্দ্রিক। তৃতীয় ম‌্যাচে মাহিদুল কিংবা শামীমের খেলাটা নির্ধারণ করবেন তারাই। 

তবে মাহিদুল নিজের কাজ করে রাখছেন। গতকাল দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া শামীমও তাই। দুজন আজ চট্টগ্রামে কড়া রৌদ উপেক্ষা করে টানা ব‌্যাটিং করেছেন নেটে। মাহিদুল দুই দফা নেটে ঘাম ঘরিয়েছেন। সেন্টার উইকেটে চলে তার প্রস্তুতি। আর শামীম ড্রেসিংরুমের কোনে পশ্চিমের নেটে অনুশীলন শেষে উল্টো পাশে এসে আশরাফুলের থ্রো ডাউন খেলেছেন।

শামীম, মাহিদুল কেউই ফর্মে নেই। নির্বাচকরা তাকে পারফরম‌্যান্সের কারণেই দল থেকে বাদ দিয়েছিল। সবশেষ পাঁচ ইনিংসে ১, ১, ০, ৩৩, ০ এই রান করেছেন শামীম। এর আগে কার্যকরী ইনিংস ছিল। কিন্তু দল থেকে বাদ পড়ার পর যথেষ্ট কারণ ছিল।

মাহিদুল কোথায়, কবে রান করেছেন সেটাও প্রশ্ন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। বছরখানেক আগে বিপিএলে তার উল্লেখযোগ‌্য পারফরম‌্যান্স নেই। এ বছর ২৪ ইনিংস খেলে তার কোনো ফিফটি নেই। সেই ব্যাটসম্যানকেই নেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলে। কাতারে রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টে ৫ ইনিংসে ১১৬ রান করেছেন। ফাইনালে প্রথম বলে রিভার্স সুইপ করে দলকে ডুবিয়ে আসেন।

প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বকাপের আগে শেষ ম‌্যাচে কাকে খেলাবে বাংলাদেশ? নাকি দুজনই থাকবে ডাগআউটে! প্রস্তুতিতে স্পষ্ট কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। পরিশ্রমে দুজনই দুজনকে টেক্কা দিয়েছেন। সেরা একাদশে কে থাকবেন সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ