লিবরা ইনফিউশনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি
Published: 25th, June 2025 GMT
পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি লিবরা ইনফিউশন লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এরই ধরাবাহিকতায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে সাতটি নির্দেশনা সাপেক্ষে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্তের বিষয়টি আরএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
হস্তান্তর হবে ঢাকা ব্যাংকের প্রয়াত উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার
গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির উপ- পরিচালক মো.
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, গঠিত তদন্ত কমিটি কোম্পানিটির কারখানা, অফিস, আর্থিক হিসাব এবং ব্যবসায়িক অন্যান্য কার্যক্রম তদন্ত করা হবে। এছাড়া সঠিক নথির মাধ্যমে কমিশনের বিধান অনুসারে আয় ও ব্যয় নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ২০২০ ও ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনের সম্পদ, দায় এবং নগদ অর্থের পরিমাণের সত্য যাচাই করা হবে। এছাড়া আর্থিক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন মান এবং আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা মান পালন হয়েছে কিনা তা যাচাই করবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া ঋণের দায়বদ্ধতা যাচাই করবে গঠিত তদন্ত কমিটি।
বিএসইসির তদন্তের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এ মর্মে অভিমত দিয়েছে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে লিবরা ইনফিউশনের ১০টি বিষয়ে তদন্ত পরিচালনা করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর সেকশন ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তিনজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা হলো। তদন্ত কর্মকর্তাদের ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে কমিশনে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি
কোম্পানিটির ২০২০ ও ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পদ, দায়, ইক্যুইটি, মুনাফা এবং নগদ অর্থের পরিমাণের সত্য এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করেছে কি-না তা যাচাই করা। এছাড়া আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন মান এবং আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা মান পালন হয়েছে কিনা তা যাচাই করবে তদন্ত কমিটি।
কোম্পানিটির বিক্রয়, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নগদ, বকেয়ার পরিমাণ, ব্যয়, ইনভেন্টরি (মজুদ পণ্য), কাঁচামাল ক্রয় এবং অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয়গুলোর সত্যতা যাচাই করা।
কোম্পানিটির ইউনিট-২-এ স্থায়ী সম্পদের কোনো অবচয় হয়েছে কি-না, তা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা। ইউনিট-২ এর ভবন নির্মাণ ও পুনর্মূল্যায়নের জন্য ডেফার্ড কর দেখানো হয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করা।
সেই সঙ্গে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডের কাছে বকেয়া ঋণের দায়বদ্ধতা ও অবস্থান যাচাই করা। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে ঋণের দায়বদ্ধতার তথ্য যাচাই করা। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখবে গঠিত তদন্ত কমিটি।
সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি লিবরা ইনফিউশন। এর আগে সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ৮০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বোনাস ও ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ রয়েছে। এরপর থেকে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আর কোনো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। ফলে বিগত ৪ বছর ধরে কোম্পানিটি পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার হোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।
শেয়ার ধারণ পরিস্থিতি
লিবরা ইনফিউশন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৪ সালে। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। এ কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২২ লাখ ৫২ হাজার ৮৮০টি। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে ৩৪.৪২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪.২৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬১.৩৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৭৯৭.১০ টাকায়।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল র ৩০ জ ন ২০২১ স ল র ব এসইস র ইনফ উশন য চ ই কর র আর থ ক র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
তিন ব্যাংকের ২৩০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন
তিন ব্যাংকের ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির ৯৭৫তম কমিশন সভায় এই বন্ড অনুমোদন করেছে কমিশন। বিএসইসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
প্রিফারেন্স শেয়ার, বন্ডের বিনিয়োগ সিআইবিতে রিপোর্ট করতে নির্দেশ
পুঁজিবাজারে সূচকের পতনে সপ্তাহ শুরু, কমেছে লেনদেন
ব্র্যাক ব্যাংক:
ব্র্যাক ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন-কনভার্টিবল, ফুললি রিডিমেবল, কুপন রেয়ারিং, ফ্লোটিং রেট, সোস্যাল সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কুপর মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০ লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ব্র্যাক ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল:
কমিশন সভায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন-কনভার্টিবল,রিডিমেবল, ফ্লোটিং রেট সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ৩ শতাংশ কুপন মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক:
কমিশন সভায় ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন কনভার্টিবল, রিডিমেবল, ফ্লোটিং রেট সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ৩ শতাংশ কুপন মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ট্রাস্ট ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ