আনুপাতিক হারে ভোট এবং আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি যারা তুলছে, তারা জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে রমনা থানা বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, বড় বড় সমাবেশ করে জাতির কাছে ভুল বার্তা পৌঁছাবেন না। সমাবেশ দিয়ে যদি প্রমাণ করা যায় কে কত জনপ্রিয়, আমরা সারা বাংলাদেশকে এক দিনে সমাবেশের আওতায় আনতে পারি। কেউ কোনো জায়গা ছাড়বে না। এটা তো সিস্টেম হলো না। সবাইকে অনুরোধ জানাব, আউল-ফাউল কথাবার্তা বলবেন না কেউ। আপনারা এসব কথাবার্তা বলে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করবেন না।

ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীমকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, যখন বিএনপি-জামায়াতের ওপর স্টিমরোলার চালানো হচ্ছিল, তখন ওই দলটি এবং তার নেতা দূরে থেকে বাহবা দিয়েছেন। কৌশলে হাসিনাকে সমর্থন দিয়েছেন। কালো নির্বাচন, রাতের নির্বাচন, দিনের নির্বাচন; তিনবার নির্বাচন হয়েছে, তারা কোনো প্রতিবাদ করেনি। এখন লম্বা কথা বলছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, দেশটাকে সুন্দর করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কিছু করেন। শুধু আপনার কথামতোই হতে হবে, স্থানীয় সরকার আগে হতে হবে, আবার পিআর ভোট করতে হবে। কই থেকে আবিষ্কার করেন এগুলা? কে দেয় বুদ্ধি আপনাদের? এসব কুপরামর্শ নিয়ে এই দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার জন্য একদল লোক আজ মাঠে নেমেছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শরীফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই স্মৃতি উদযাপনে মেলার অনুমতি চেয়ে ডিসির কক্ষে অবস্থান

জুলাইযোদ্ধা ও জুলাই স্মৃতি উদযাপন কমিটির ব্যানারে মাসব্যাপী প্রদর্শনী ও বিভিন্ন দোকান বসানোর অনুমতি দিতে খুলনার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কক্ষে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনপিপির নেতাকর্মীরা। 

রোববার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কক্ষের মেঝেতে বসে ছিলেন তারা। পরে সচিব বরাবর আবেদনের কথা জানিয়ে তারা কক্ষ ত্যাগ করেন।

নগরীর শিববাড়ী মোড়ের জিয়া হলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনে জুলাইকেন্দ্রিক অনুপ্রেরণা সৃষ্টির জন্য মাসব্যাপী কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে  শিববাড়ী মোড়ের জিয়া হলের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের ফাঁকা জায়গায় জুলাই মঞ্চ, জুলাই কর্নার, প্রদর্শনী, এলইডি স্কিনে প্রদর্শন এবং সেই সঙ্গে বই, দেশীয় কুটির শিল্প, সংস্কৃতি ও খাবারের স্টল দেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, অতীতে জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করেন মূল আয়োজকরা।

দুপুর ১২টার দিকে নেতাকর্মীরা খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। জেলা প্রশাসক তাদের মেলার আয়োজন করার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করেন। এ সময়  ছাত্রনেতারা জুলাই নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসককে  ফ্যাসিস্টের দোসর এবং অনুমতি না দিলে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কক্ষের মেঝেতে বসে পড়েন। সেখানেই বসে তারা অনুমতি চেয়ে আবেদনপত্র লেখেন। পর্যায়ক্রমে সেখানে উপস্থিত হন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক ওয়াহিদুজ্জামান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সদস্য সচিব ও এনপিপির সংগঠক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি, মহানগর সদস্য সচিব জহুরুল তানভীর, কদরুল হাসান, রুমি রহমান, সানজিদা আঁখিসহ অনেকে। কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন তারা।

বিকেল ৪টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী জুলাই নিয়ে আমরাও খুলনায় মাসব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছি। কর্মসূচিতে জুলাই স্মৃতি প্রদর্শনী ও দেশীয় স্টল থাকবে। মেলা শব্দটি সবাই নেতিবাচক হিসেবে নেয়। জেলা প্রশাসকের মেলা বসানোর শব্দটি কটূক্তির মতো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি একা একা মেলার অনুমতি দিতে পারি না। এটা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এদিকে জুলাই স্মৃতি উদযাপনের নামে মেলার আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্য সংগঠকরা। সংগঠনের মহানগর সভাপতি আল শাহরিয়ার বলেন, আগে ৭১ ও বিজয় দিবসের নামে জিয়া হল প্রাঙ্গণে মেলা হয়েছে, এখন মেলা হচ্ছে জুলাই স্মৃতির নামে। এই আয়োজন আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি বলেন, জুলাইয়ের মাসজুড়ে আলোচনা সভা, দোয়া, শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময়, জুলাই ক্যালেন্ডার বিতরণ, শহর পরিষ্কার, পথনাটকসহ মোড়ে মোড়ে প্রদর্শনীর  পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আলোচনা না করেই যারা মেলার আয়োজন করেছে, তাদের উদ্দেশ্য জুলাই স্মৃতি রক্ষা নয়, অন্য কিছু।

সম্পর্কিত নিবন্ধ