রান্নার যে উপকরণটি হতে পারে লিভারের ক্ষতির কারণ
Published: 3rd, July 2025 GMT
এ যুগের এক অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এ রোগে রক্তের চর্বি বেড়ে গিয়ে লিভারে জমা হয়। আপাতদৃষ্টে খুব বড় সমস্যা নয়। তবে একে অবহেলা করলে বিপদ হতে পারে। জীবনধারার সঙ্গে এ রোগ সরাসরি সম্পর্কিত।
রোজকার খাদ্যাভ্যাসই এ রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। রান্নায় ব্যবহৃত তেলের ব্যাপারটাই যেমন। তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর তেলও নানা কারণেই লিভারের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এ সম্পর্কে জানালেন ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা.
মুসআব খলিল।
যে তেলের জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তা না খাওয়াই ভালো। এই তেল রক্তে খারাপ চর্বির পরিমাণ বাড়াবে। আর তাতেই বাড়বে ফ্যাটি লিভার ডিজিজের ঝুঁকি। এ কারণে নারকেল তেল, পাম তেল, ঘি, মাখন, ডালডা–জাতীয় উপকরণ খাবারে ব্যবহার করা উচিত নয়।
উচ্চ তাপেও সব তেল নয়আমাদের দেশে রান্নায় বহুল ব্যবহৃত উপকরণ সয়াবিন তেল। এতে স্বাস্থ্যকর উপাদান তুলনামূলক কম। স্বাস্থ্যকর তেল হিসেবে বাজারে জায়গা করে নিয়েছে ক্যানোলা তেল, সূর্যমুখী তেল, রাইস ব্র্যান তেল, জলপাই তেল।
তিসির তেল আর তিলের তেলও স্বাস্থ্যকর। তবে সব তেল দিয়ে সব রান্না করা যাবে না। যে তাপমাত্রায় কোনো তেল থেকে ধোঁয়া উঠতে থাকে, সেই তাপমাত্রায় ওই তেলের গঠন ভেঙে যায়। তাতে তেলের উপকারিতা হারিয়ে যায়, আর তা থেকে বেরিয়ে আসে বিষাক্ত উপাদান। এসব উপাদান মিশে যায় খাবারে। এ কারণেও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আরও পড়ুনখরচ বাঁচাতে ভাজা তেল আবার ব্যবহার করছেন?১২ মার্চ ২০২৫কোন তেলে কোন রান্নাসয়াবিন তেল দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা যায়। ক্যানোলা তেল, সূর্যমুখী তেল আর রাইস ব্র্যান তেলও বেশ উচ্চ তাপমাত্রায় ব্যবহার করা যায়।
জলপাই থেকে পাওয়া যেকোনো তেল, তিসির তেল বা তিলের তেল দিয়ে কিন্তু আমাদের দেশের প্রচলিত ধারার রান্না করার সুযোগ নেই। কারণ, অনেক কম তাপমাত্রাতেই এসব তেল থেকে ধোঁয়া ওঠে।
এসব বরং কাঁচা অবস্থায় সালাদ–জাতীয় পদে যোগ করতে পারেন কিংবা সেদ্ধ ধরনের পদ চুলা থেকে নামানোর ঠিক আগে। কোনো খাবার সতে করা বা সাঁতলানোর জন্যও এসব তেল কাজে লাগানো যায়।
তেল নিয়ে আরও যাতেল যত স্বাস্থ্যকরই হোক, তা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলেই আপনি পাবেন বাড়তি ক্যালরি। রক্তে বাড়বে চর্বির মাত্রা, যা জমা হবে লিভারে।
কোনো তেলই রান্নায় পুনর্ব্যবহার করা উচিত নয়। একবার ব্যবহার করার পর পাত্রে রয়ে যাওয়া তেল অনেকেই সংরক্ষণ করেন আবার রান্নার জন্য। খরচ বাঁচাতে এটা দারুণ বুদ্ধি হলেও পদ্ধতিটি স্বাস্থ্যকর নয়। ব্যবহৃত তেল বড়জোর আর একটিবার রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন, যদি তার রং, ঘনত্ব ও ঘ্রাণ ঠিক থাকে। তেল ভালো আছে মনে হলেও কিন্তু এর বেশিবার ব্যবহার করবেন না। বারবার ব্যবহারে ট্রান্স ফ্যাট এবং লিভারের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য উপকরণ তৈরি হয়।
অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় ডুবোতেলে ভাজা পদগুলো বহুবার ব্যবহৃত তেল দিয়েই করা হয়। তাই বাইরে খেলেও এমন পদ এড়িয়ে চলুন।
তেলের রান্না খাবার বাড়িতে বারবার গরম করে খেলেও একই ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
কম তেলে রান্না করলে এবং এসব বিষয় খেয়াল রাখলে সয়াবিন তেলের রান্না খেয়েও সুস্থ থাকতে পারবেন।
আরও পড়ুনফ্যাটি লিভার ডিজিজ: উপসর্গ না থাকলেও এই সমস্যাকে অবহেলা করতে নেই২৬ জুন ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব যবহ র কর স ব স থ যকর ব র ব যবহ র ব যবহ ত সব ত ল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দ. কোরিয়ায় ১ লাখ ২০ হাজার হোম ক্যামেরা হ্যাক করে গোপন ভিডিও বিক্রি
দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ লাখ ২০ হাজারেও বেশি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভিডিও ক্যামেরা হ্যাক করার ও সেই ফুটেজ ব্যবহার করে একটি বিদেশি ওয়েবসাইটের জন্য যৌন কনটেন্ট তৈরি করার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পুলিশ সংস্থার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গোয়েন্দাপ্রধান গ্রেপ্তার
সাবমেরিন ইস্যুতে আটকে গেল দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) ক্যামেরার দুর্বলতা যেমন সহজ পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে হ্যাকিং চালাতো।
সিসিটিভির তুলনায় সস্তা হওয়ায় আইপি ক্যামেরা বা হোম ক্যামেরা সাধারণত বাড়ির নিরাপত্তা, শিশু ও পোষা প্রাণীর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। হ্যাক হওয়া ক্যামেরার অবস্থান ছিল ব্যক্তিগত বাসা, কারাওকে রুম, শরীরচর্চা কেন্দ্র, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ক্লিনিকসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল স্থান।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পুলিশ সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, চার সন্দেহভাজনের মধ্যে সমন্বয় করে হ্যাকের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা বিচ্ছিন্নভাবে এসব অপরাধ চালিয়েছে।
গ্রেপ্তার একজনের বিরুদ্ধে ৬৩ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৫৪৫টি যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও তৈরির অভিযোগ রয়েছে, যা তিনি ৩ কোটি ৫০ লাখ উন বা ১২ হাজার ২৩৫ মার্কিন ডলারের সমমূল্য ভার্চুয়াল সম্পদের বিনিময়ে বিক্রি করেছিলেন।
আরেকজনের বিরুদ্ধে ৭০ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৬৪৮টি ভিডিও এক কোটি ৮০ লাখ উনের বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
এ দুই ব্যক্তি গত এক বছরে অবৈধভাবে আইপি ক্যামেরার ফুটেজ বিতরণকারী একটি বিদেশি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিডিওর প্রায় ৬২ শতাংশের জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ এখন ওয়েবসাইটটি বন্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর পরিচালকের বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথ তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি সাইট থেকে ভিডিও কেনা বা দেখা-এমন আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জাতীয় পুলিশ সংস্থার সাইবার তদন্ত প্রধান পার্ক উ-হিউন বলেন, “আইপি ক্যামেরা হ্যাকিং এবং অবৈধ ভিডিও ধারণ ভুক্তভোগীদের ওপর গভীর মানসিক ও সামাজিক ক্ষতি তৈরি করে। এগুলো গুরুতর অপরাধ। অবৈধভাবে ধারণকৃত ভিডিও দেখা বা রাখাও অপরাধ। আমরা সেগুলোও কঠোরভাবে তদন্ত করব।”
পুলিশ এখন পর্যন্ত ৫৮টি স্থানে ভুক্তভোগীদের সরাসরি গিয়ে বা যোগাযোগ করে অবহিত করেছে এবং দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের ফুটেজ মুছে ফেলা ও ব্লক করতে সহায়তা করছে এবং আরও ভুক্তভোগীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে।
জাতীয় পুলিশ সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, যারা বাসায় বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আইপি ক্যামেরা ব্যবহার করেন, তাদের সচেতন থাকা ও নিয়মিতভাবে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাটা সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ঢাকা/ফিরোজ