নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বাছাই উপলক্ষ্যে মতামত গ্রহণ সম্পন্ন
Published: 11th, July 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বাছাই উপলক্ষ্যে মতামত গ্রহণ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৫টায় এ মতামত গ্রহণ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাও. লোকমান হোসাইন জাফরী।
আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাও.
প্রধান অতিথি বলেন, দেশে আজ চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম সীমাহীন বেড়ে গিয়েছে। তাদের কাছে মানুষের জীবন মূল্যহীন। এই হায়েনাদের দমন করার জন্য আরেকটি জুলাই আন্দোলন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই হতে হবে। এতে সকল জনগণের ভোট মূল্যায়িত হবে। ভোট পঁচে গিয়েছে বলতে কোন কথা থাকবে না। সুতরাং সকল জনগণের ভোট আমাদের কাছে অত্যন্ত দামী। তাই দেশের জনগণের সমর্থনকে আমরা যথাযথ মূল দিতে এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য পার্লামেন্ট চাই।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ইসল ম গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
খাল কেটে কুমির আনার অধিকার সরকারকে কেউ দেয়নি: জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় নিয়ে মামুনুল হক
ঢাকায় তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের একটি মিশন স্থাপনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, গত ১৬ বছরে ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও খুনের বিচার নিশ্চিত না করে এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য দরজা খুলে দেওয়া মানে অপরাধীদের দায়মুক্তি ও জনগণের প্রতি অবিচার। খাল কেটে কুমির আনার অধিকার সরকারকে কেউ দেয়নি। এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে দেবেন না তাঁরা।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে এক প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথাগুলো বলেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে না আসে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে হেফাজত নেতা মামুনুল হক বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা জন–আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী ও স্বাধীনতার মৌলিক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সরকারকে সতর্ক করে মামুনুল হক বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা স্পষ্ট করে বলি, শহীদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত এই সরকারকে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি। জাতিসংঘের তথাকথিত মানবাধিকার বাস্তবে ইসলাম ও মানবতার পরিপন্থী পশ্চিমা আদর্শের হাতিয়ার। খাল কেটে কুমির আনার অধিকার সরকারকে কেউ দেয়নি। আমরা এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না। আজ আমরা শুধু প্রাথমিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে না আসে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জালালুদ্দীন, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মুফতি শরীফুল্লাহ, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা ইমরানুল বারী সিরাজী, মাওলানা জোবায়ের রশীদ, মাওলানা এহতেশামুল হক সাকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
তিন দাবি
হেফাজতের সমাবেশে বক্তারা ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। বিষয়টিকে তাঁরা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ‘স্পষ্ট হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। হেফাজত নেতারা বলেন, জাতিসংঘ বা কোনো বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার ইস্যুতে হস্তক্ষেপ দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। এ ধরনের কার্যালয় স্থাপন সরকারের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতার প্রতিফলন। দেশীয় ইসলামি মূল্যবোধ, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি দীর্ঘ মেয়াদে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ইমানি দায়িত্ব ও জাতীয় কর্তব্য থেকে তাঁরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবেন এবং প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা করবেন।
এই সমাবেশ থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করা, দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে দেওয়া এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।