সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন দাবি
Published: 12th, July 2025 GMT
সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সময়ের দাবি। দীর্ঘদিন ধরে মনোনয়নের মাধ্যমে নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করা হলেও তা নারীর নেতৃত্ব বিকাশে পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করছে না। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সংসদে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন নারী নেতৃবৃন্দ।
শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান। ‘জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের দাবিতে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা.
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারী আন্দোলন কোনো একক সংগ্রাম নয়, এটি সমাজেরই অংশ। কাউকে পিছিয়ে রেখে গণতন্ত্র এগোয় না। নারীর এক-তৃতীয়াংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি আমরা বারবার জানিয়ে আসছি। এখনই সময় এ দাবি বাস্তবায়নের।’
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘সংসদে নারীর মনোনীত হয়ে আসার পদ্ধতি বাতিল করে ভোটের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। নারী নেতৃত্বের বিকাশে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’
আন্দোলন সম্পাদক ও বেলাবো জেলাশাখার সভাপতি রাবেয়া খাতুন শান্তি বলেন, জন্মসূত্রে মানুষ স্বাধীন, সার্বজনীন মানবাধিকারের আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কাজ করছে, নারী আন্দোলন বৃথা যায়নি। আজকের নারীর সিদ্ধান্তগ্রহণ ও পালনের সক্ষমতা নারী আন্দোলনের ফসল। আজ মানবিক বিপর্যয় চরমে, এমতাবস্থায় নারীর ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সংসদে এক তৃতীয়াংশ নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সহ সরাসরি নির্বাচনে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রশিক্ষণ, সম্পাদক, গবেষণা ও পাঠাগার উপ-পরিষদ ও নারায়ণগঞ্জ জেলাশাখার সভাপতি রীনা আহমেদ বলেন, বর্তমানে নারী সমাজের প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু নারী সাংসদদের এসব নিয়ে কাজ করতে তেমন কথা বলতে শুনিনা। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কাজের বাস্তবায়নে নারী সাংসদদের গুরুত্ব দিতে হয়। তিনি এ সময় নারী কমিশনের সদস্যদের প্রতি সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দিকটি সরকারের নিকট জোরালোভাবে তুলে ধরার উপর গুরুত্বরোপ করেন।
ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস বলেন, ৫৫ বছরে নারীর রাজনৈতিক ভূমিকা খুব বেশি অগ্রসর হয়নি, সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। জাতীয় সংসদে দেশের রাজনৈতিক নারীকে শুধু নির্বাচিত হলেই হবে না, তাকে কাজের সুযোগ দিতে হবে। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় নারীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। এর বিকল্প নাই।
বক্তারা আরও বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া গণতন্ত্র অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। শুধু মনোনয়ন নয়, সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ব্যতীত রাজনৈতিক এজেন্ডাও সফল হবে না।
মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও টঙ্গী জেলাশাখার সভাপতি আনোয়ারা বেগম, নারী শ্রমিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য সাহিদা পারভীন শিখা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র র র জন ত ক স রক ষ ত ন র সদস য ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
ভোট পেছাতে কয়েকটি দল ষড়যন্ত্র করছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
ভোট পেছাতে কয়েকটি দল ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘তারা কারা—আপনারা জানেন। কিন্তু আপনারা কি সে সুযোগ দেবেন? বাংলাদেশের মানুষ কি সে সুযোগ দেবে? গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে, জনগণই তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়ায় রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথাগুলো বলেন। পাঁচ দিনের সফরে আজ তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা কক্সবাজার-১ আসনে (চকরিয়া-পেকুয়া) আসেন।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুতুবউদ্দিনের সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, বিএনপি নেতা এম আবদুর রহিম, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাছিমা আকতার প্রমুখ।
২০০৮ সালের নির্বাচন ও ওয়ান–ইলেভেন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ওয়ান–ইলেভেনের সরকার কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে। সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গণতন্ত্র ফিরে পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জনগণকে অপেক্ষা করতে হয়েছে—রক্ত দিতে হয়েছে, শহীদ হতে হয়েছে, গণ–অভ্যুত্থান করতে হয়েছে। এখন আমরা ভোটাধিকার ফেরত পেয়েছি, কিন্তু প্রয়োগ করতে পারিনি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আপসহীন নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এ দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। এ দেশের জনগণের ঐক্যের প্রতীক তিনি। আজ তিনি অসুস্থ। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তাঁর শরীরে স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসায় যেতে দেওয়া হয়নি, দেশে চিকিৎসাও ঠিকমতো নিতে পারেননি। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে একাকিত্বে দিন কাটাতে হয়েছে। এত অত্যাচার সত্ত্বেও তিনি দুঃশাসনের সঙ্গে আপস করেননি, শেখ হাসিনার সঙ্গেও আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই–সংগ্রাম করে গেছেন।’
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন অমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশতে যাবে—এটা কেমন কথা? ইসলাম কি ভোটে দাঁড়িয়েছে? দুনিয়ার স্বার্থে ধর্মকে বিক্রি করা নাজায়েজ। আমাদের মা–বোনদের বিভ্রান্ত করতে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এটা সহ্য করা হবে না।’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘এখন যারা জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে, তারা নিজেরাই কোথায় যাবে আল্লাহ জানেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে—এমন বক্তব্য স্বাধীনতার নামে ছড়ানো যাবে না।’
সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছে সালাহউদ্দিন আহমদ খুটাখালীতে পীর হাফেজ আবদুল হাইয়ের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর খুটাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন, খুটাখালী ও ডুলাহাজারার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন। বিকেল পাঁচটার দিকে ডুলাহাজারার পীর হাফেজ আবদুর রশিদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।