৫ আগস্ট একটি চেতনা, একটি জাগরণ, একটি অঙ্গীকার: ইলিয়াস কাঞ্চন
Published: 5th, August 2025 GMT
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অভিনেতা, সমাজকর্মী এবং জনতা পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) লন্ডন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন—“৫ আগস্ট শুধু একটি দিন নয়, এটি একটি চেতনা, একটি জাগরণ, একটি অঙ্গীকার।”
৫ আগস্টের বার্তা দিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “গভীর শ্রদ্ধা জানাই সেই সকল সাহসী মানুষদের, যারা বুক চিতিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, সত্যের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। যারা জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা। ৫ আগস্টের বার্তা হচ্ছে—আমরা আর নীরব থাকব না।”
আরো পড়ুন:
শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ
শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধায় সারা দেশে পালিত হচ্ছে গণঅভ্যুত্থান দিবস
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে রাজপথে ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তা স্মরণ করে এই নায়ক বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের নারকীয় তাণ্ডব, হত্যা, গুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমি রাজপথে ছিলাম। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছি, ফেসবুক লাইভে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়েছি। সরকারের কাছে বারবার যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার তখন পেশিশক্তি দিয়ে শিশু, ছাত্র, সাধারণ মানুষের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমি শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অন্যান্য শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছিলাম—এই সব হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন হোক। আজ এক বছর পরও বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এটি দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমি এই দাবি জানাই।”
যেসব হত্যাকারী ফ্যাসিস্ট সরকারে থেকে মায়েদের বুক খালি করেছে, যদি তারা শাস্তি না পায়, তবে ভবিষ্যতে আরো ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট জন্ম নেবে। এই চক্রকে চূড়ান্তভাবে থামাতে হবে। দায়মুক্তি দিলে দেশে কখনো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে না বলেও জানান ইলিয়াস কাঞ্চন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জনতা পার্টির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “গত এক বছরে শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব এসেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন সেগুলো সব পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে বাস্তবায়ন করে। যারা আন্দোলনের প্রতিকূল সময়েও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
জুলাই সনদকে স্বাগত জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমি আগেও বলেছি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করা সকলের দায়িত্ব। যারা দেশকে বাঁচাতে সহায়তা করেছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা। আমি ৫ আগস্ট জুলাই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণার উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।”
পর্দার নায়ক রাজনীতির মাঠে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমি রাজনীতির মাঠে এসেছি দায়িত্ববোধ থেকে। বর্তমানে আমি বিদেশে থাকায় সক্রিয়ভাবে সময় দিতে পারছি না, তবে আমার রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ সবসময়ই ইনসাফভিত্তিক শাসনব্যবস্থার কথা বলে এসেছে।”
দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হোক, ঘুষ-দুর্নীতি দূর হোক, অপকর্ম ও অবিচার চিরতরে নিঃশেষ হোক। সকল নাগরিক যেন নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারেন সেই প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন সরক র র ৫ আগস ট ন বল ন র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের ব্যাপারে প্রতিবেদন তৈরি করছে ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটি
ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন শশী থারুর জানিয়েছেন, বাংলাদেশ নিয়ে কমিটির একাধিক বৈঠক হয়েছে। ৪ আগস্ট ওই বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সদস্যদের উত্থাপিত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। মঙ্গলবার ইকোনোমিক টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
থারুর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে বলেছেন, “আমরা বাংলাদেশ সম্পর্কে ৩-৪টি বৈঠক করেছি এবং এটিই ছিল শেষ বৈঠক যেখানে পররাষ্ট্র সচিব আমাদের একটি ব্রিফিং দিয়েছেন। এই ব্রিফিংয়ে, সদস্যদের সব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব তাদের সবার উত্তর দিয়েছেন।”
তিনি জানান, কমিটি এখন তার প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে, যা সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
থারুর বলেন, “এর পরে একটি প্রতিবেদন লেখা, গ্রহণ করা এবং সংসদে উপস্থাপন করা আমাদের কাজ। তা করার আগে, আমরা কী সিদ্ধান্ত নেব, কী পরামর্শ দেব তা আমি বলতে পারছি না।”
সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) কর্মকর্তারা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রমাণ উপস্থাপন করেন। এজেন্ডায় ২০২৪-২৫ সালের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুদানের দাবি সম্পর্কিত পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে দেওয়া সুপারিশের উপর সরকার গৃহীত পদক্ষেপের খসড়া প্রতিবেদনের পর্যালোচনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্যানেলটি এর আগে ২৭ জুন বৈঠক করেছিল। সেখানে তারা ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যত’ বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞদের মতামত শুনেছিল। বৈঠকের পর, থারুর জানিয়েছিলেন, কমিটি ‘চারজন প্রথম শ্রেণীর বিশেষজ্ঞ’ এর অন্তর্দৃষ্টি থেকে উপকৃত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেছেন, “আপনারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের প্রতিবেদনটি দেখতে পাবেন... আমরা (ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সমস্যা) নিয়ে আলোচনা করিনি। তবে আমাদের একটি পরিসংখ্যান সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে আমাদের দেশে আসা বাংলাদেশিদের সংখ্যা এখন হ্রাস পেয়েছে।”
ঢাকা/শাহেদ