ইসরায়েল গাজা পুরোপুরি দখল করবে কি না, সেটি তার ব্যাপার: ট্রাম্প
Published: 6th, August 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা পুরোপুরি দখল করতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে বাধা না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকেরা জানতে চান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা পুরোপুরি দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না—এমন খবর নিয়ে তাঁর কী মত। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি এখন গাজার মানুষের ‘খাবারের ব্যবস্থা’ নিয়ে বেশি মনোযোগী।
ট্রাম্প বলেন, ‘বাকিটা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। এটা মূলত ইসরায়েলের বিষয়।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় নজিরবিহীন ও নৃশংস তাণ্ডব শুরু করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে প্রতিবছর দেওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা আরও বাড়িয়েছে।
ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ অংশকে সামরিক এলাকা ঘোষণা করে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে এনে সীমিত কিছু জায়গায় গাদাগাদি করে রেখেছে। ফলে এ উপত্যকার প্রায় ৮৬ শতাংশই এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।
ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ অংশকে সামরিক এলাকা ঘোষণা করে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে এনে সীমিত কিছু জায়গায় গাদাগাদি করে রেখেছে। ফলে এ উপত্যকার প্রায় ৮৬ শতাংশই এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।তবে অবশিষ্ট যেসব এলাকায় এখনো সামরিক অভিযান হয়নি, সেখানেও সেনা অভিযান চালালে ফিলিস্তিনিদের জীবন আরও হুমকির মুখে পড়বে। কারণ, প্রতিদিন বোমা হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার মানুষ চরম খাদ্যসংকটে ভুগছেন।
নেতানিয়াহু গাজা পুরোপুরি দখলের যে পরিকল্পনা করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে, তাতে হামাস ও অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর হাতে আটক ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মিরোস্লাভ জেনচা গতকাল সতর্ক করে বলেন, গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার মতো পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জেনচা বলেন, আন্তর্জাতিক আইন এ বিষয়ে স্পষ্ট। গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই সেটি এমনই থাকতে হবে।
২০০৫ সালে ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সেনা ও বসতি তুলে নেয়। তবে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েল গাজার আকাশপথ, উপকূলীয় জলসীমা ও প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ করায় অঞ্চলটি তখনো ‘কার্যত দখলাধীন’ অবস্থায় ছিল।
২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই উগ্রপন্থী ইসরায়েলি নেতারা গাজায় আবার সামরিক ঘাঁটি ও বসতি গড়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
আন্তর্জাতিক আইন এ বিষয়ে (গাজার মর্যাদা প্রশ্নে) স্পষ্ট। গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই সেটি এমনই থাকতে হবে।মিরোস্লাভ জেনচা, জাতিসংঘের কর্মকর্তানেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, ইসরায়েল গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দিতে চায়। তাঁর এ পরিকল্পনা জাতিগত নিধনের শামিল। এ পরিকল্পনাকে গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প নিজেও সমর্থন করেছিলেন।
তখন ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছিলেন, গাজা খালি করে সেখানে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ (সৈকতের অবকাশ শহর) তৈরি করা যেতে পারে।
গাজায় আরও বড় পরিসরে সেনা অভিযান চালাতে চায় ইসরায়েল—সম্প্রতি এমন খবরে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ, গাজায় এখন নিহত মানুষের সঙ্গে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তীব্র খাদ্যসংকট ছড়িয়ে পড়েছে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সংস্থা গ্লোবাল হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত কিছু কেন্দ্রই এখন ফিলিস্তিনিদের খাদ্যের একমাত্র উৎস।
নেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, ইসরায়েল গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দিতে চায়। এ পরিকল্পনাকে গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প নিজেও সমর্থন করেছিলেন। তখন ট্রাম্প প্রস্তাব দেন, গাজা খালি করে সেখানে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ (সৈকতের অবকাশ শহর) তৈরি করা যেতে পারে।তবে বিতর্কিত সংস্থাটির কেন্দ্রগুলোর দিকে খাবার আনতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এ সংস্থাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যদিও জাতিসংঘকে সহায়তা বিতরণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী আহ্বান চলছে।
সম্প্রতি ইসরায়েল কিছু খাদ্যবাহী ট্রাক ও আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিয়েছে। তবে এখনো এসব সহায়তা গাজার বাসিন্দাদের প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
আরও পড়ুনপশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি পরিদর্শনে মার্কিন স্পিকার, ফিলিস্তিনের নিন্দা২২ ঘণ্টা আগেউত্তর গাজায় জিএইচএফের কেন্দ্রগুলোর বাইরেও ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
গতকাল ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় মানবিক সহায়তা হিসেবে ছয় কোটি ডলার দিয়েছে। এর মধ্যে তিন কোটি ডলার গেছে জিএইচএফের তহবিলে।
আরও পড়ুনগাজার পুরোটাই দখলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে খবর২০ ঘণ্টা আগেট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা জানেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি গাজায় ছয় কোটি ডলার দিয়েছে। এতে প্রচুর খাবার পাঠানো হয়েছে। বাস্তবে অনেক খাবারই পাঠানো হয়েছে। কারণ, গাজার মানুষ খাবারের দিক দিয়ে খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই।’
আরও পড়ুনইসরায়েল বলছে তারা গাজায় ত্রাণ দিচ্ছে, তাহলে ফিলিস্তিনিরা না খেয়ে মরছে কেন২৭ জুলাই ২০২৫ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি জানি, ইসরায়েল এ সহায়তা বিতরণে আমাদের সাহায্য করবে। অর্থের দিক থেকেও সাহায্য করবে। আমাদের সঙ্গে আরব দেশগুলোও আছে। তারাও অর্থ দিয়ে ও সম্ভবত বিতরণেও আমাদের সাহায্য করবে।’
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করার পর তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যার শামিল।
আরও পড়ুনগাজায় কেউ না খেয়ে নেই—দাবি নেতানিয়াহুর, দ্বিমত ট্রাম্পের২৯ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ১ লাখ শিশু: ‘৯ মাসে একটিও ডিম খাইনি’২৭ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল গ জ ইসর য় ল র সমর থ
এছাড়াও পড়ুন:
খেলাধুলায় ‘চ্যাম্পিয়ন’ ফিলিস্তিনি কিশোরকে মরতে হলো খাবারের অভাবে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগে গতকাল শনিবার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর মারা গেছে। আগে তার কোনো অসুস্থতা ছিল না। কিন্তু খাবারের অভাবে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে সে মারা যায়। কিশোরের স্বজনেরা ও চিকিৎসাকর্মীরা এমনটাই বলেছেন।
ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজা উপত্যকার মানুষ তীব্র সংকটে আছে। সেখানকার মানুষ এখন খাবারের জন্য মরিয়া। ইসরায়েল সেখানে ত্রাণ পৌঁছাতে দিচ্ছে না।
শনিবার মারা যাওয়া ওই কিশোরের নাম আতেফ আবু খাতের। গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের একটি সূত্র আল–জাজিরাকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
গাজায় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাবার নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে নিয়মিত গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। জাতিসংঘ চলতি সপ্তাহে বলেছে, গত মে মাসে এই সংস্থার কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এক হাজার তিন শতাধিক ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হয়েছে।আল–জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ বলেন, আতেফ স্থানীয়ভাবে খেলাধুলায় চ্যাম্পিয়ন ছিল। কিন্তু খাবার খেতে না পারায় তার ওজন কমে যায়। প্রচণ্ড অপুষ্টিতে ভোগার পর অবশেষে সে মারা যায়। হানি আরও বলেন, আতেফ গাজায় তীব্র অপুষ্টির শিকার হাজার হাজার মানুষের একজন মাত্র।
আল–জাজিরার যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আতেফের পরিবার তাকে শেষ বিদায় জানাচ্ছে। সেখানে তার শীর্ণকায় মরদেহ দেখা যাচ্ছে। তাঁর মুখ ক্যামেরা থেকে আড়াল রাখা হয়েছে।
আতেফ আবু খাতেরের পরিবার বলেছে, মৃত্যুর সময় তার ওজন কমে মাত্র ২৫ কেজি হয়েছিল। আগে তার ওজন ছিল ৭০ কেজি। ২৫ কেজি ওজন সাধারণত নয় বছর বয়সী শিশুদের হয়ে থাকে। আতেফের গালে একটুও চর্বি ছিল না। মুখমণ্ডলের হাড়গুলো স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, আতেফের এক আত্মীয় তার পাঁজরের প্রতিটি হাড় আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখাচ্ছিলেন। তার পাঁজরের হাড়গুলো যেন গোনা যাচ্ছিল।
উইসাম শাবাত নামের এক সাংবাদিক ভিডিওটি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন না খেতে পেরে এবং চিকিৎসার অভাবে আতেফের শরীরে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিয়েছিল। আতেফ যখন হাসপাতালে আসে, তখন তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন ছিল। শেষ পর্যন্ত সে মারা যায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬৯ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে বা অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে। এর মধ্যে ৯৩ জনই শিশু।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোয় গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ওপর ইসরায়েলি বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হলেও ফিলিস্তিনিরা পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। তাদের পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক সমালোচনার মুখে ইসরায়েল বলেছে, তারা ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণসহায়তা বাড়াচ্ছে। এর মধ্যে উড়োজাহাজ থেকে নিচে খাবার ফেলার মতো ব্যবস্থাও আছে।
আরও পড়ুনগাজায় ত্রাণ নেওয়ার কয়েক মিনিট পর হত্যা করা হয় ক্ষুধার্ত শিশুটিকে: সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা০১ আগস্ট ২০২৫তবে মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের সহায়তা ঝুঁকিপূর্ণ ও অকার্যকর। তাদের দাবি, গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া হোক, যেন প্রয়োজনীয় সহায়তা অবাধ প্রবেশ করতে পারে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি শনিবার বলেন, ‘গাজায় যে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ চলছে, তা মূলত জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রমকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা জিএইচএফকে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টার ফল।’
গাজায় জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে খাবার নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে নিয়মিত গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। জাতিসংঘ চলতি সপ্তাহে বলেছে, মে মাসে এই সংস্থার কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এক হাজার তিন শতাধিক ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হয়েছে।
লাজারিনির অভিযোগ, ইসরায়েল সক্রিয়ভাবে জাতিসংঘ ও অন্য মানবিক সংস্থাগুলোকে ফিলিস্তিনিদের জন্য জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। তিনি একে গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ প্রয়োগ ও তাদের শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পিত চেষ্টা বলেছেন।
এক্সে দেওয়া পোস্টে লাজারিনি লিখেছেন, আর সময় নষ্ট করা যাবে না। সীমান্তগুলো নিঃশর্তভাবে খুলে দেওয়ার জন্য এখনই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।
গাজার হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার মরিয়া হয়ে খাবার ও অন্যান্য জরুরি জিনিস খুঁজে বেড়াচ্ছে। গতকাল শনিবার গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ থেকে আল–জাজিরার সংবাদকর্মী হিন্দ খৌদারি বলেন, ইসরায়েল সৃষ্ট খাদ্যসংকটের কারণে শিশুসহ অনেক মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।শিশুরা ধুঁকে ধুঁকে মরছেএদিকে গাজার হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার মরিয়া হয়ে খাবার ও অন্যান্য জরুরি জিনিস খুঁজে বেড়াচ্ছে। গতকাল গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ থেকে আল–জাজিরার সংবাদকর্মী হিন্দ খৌদারি বলেন, ইসরায়েল সৃষ্ট খাদ্যসংকটের কারণে শিশুসহ অনেক মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তেমনই একজন মিস্ক আল-মাধুন। অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছর বয়সী শিশুটিকে খাওয়ানোর মতো কোনো কিছুই তাঁদের কাছে নেই। তাঁরা বলছেন, প্রতিদিন চোখের সামনে তাঁরা তাঁদের মেয়েটিকে ধুঁকে ধুঁকে মরতে দেখছেন। মা-বাবারা তাঁদের সন্তানদের বাঁচাতে যা যা করা সম্ভব, সবই করছেন বলে উল্লেখ করেন খৌদারি।
খৌদারি বলেন, ‘আমরা এমন অনেক মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি, যাঁরা দুধ না পেয়ে বাধ্য হয়ে শিশুদের শুধু পানি খাওয়াচ্ছেন। কারণ, তাঁদের হাতে আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা আরও দেখছি, ফিলিস্তিনি মা-বাবারা প্রতিদিন প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ পথ হেঁটে রান্না করা খাবার বা ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র খুঁজে ফিরছেন। এমনকি কেউ কেউ জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতেও যাচ্ছেন। সেখানে তাঁরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকেন, আহত হন কিংবা খালি হাতেই বাড়ি ফেরেন।
আরও পড়ুনগাজায় কেউ না খেয়ে নেই—দাবি নেতানিয়াহুর, দ্বিমত ট্রাম্পের২৯ জুলাই ২০২৫গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ক্ষুাবিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) বলেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র উন্মোচিত হচ্ছে। সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার বেশির ভাগ এলাকায় মানুষ এত কম খাবার পাচ্ছে যে তা এখন দুর্ভিক্ষের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, অবিরাম সংঘর্ষ, গণহারে বাস্তুচ্যুতি, মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর বাধা, স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রয়োজনীয় সব পরিষেবায় ধস নামার কারণে এই সংকট এখন এক ভয়ংকর ও প্রাণঘাতী পর্যায়ে পৌঁছেছে।