ভারতের জম্মু–কাশ্মীরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস ফিরিয়ে আনার দায় পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্যের দক্ষ কর্মকর্তাদের জায়গায় বহিরাগত কর্তাদের হাতে প্রশাসনের ভার সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়াই সন্ত্রাসবাদের ফিরে আসার কারণ। ওই সিদ্ধান্তের জন্য তৃণমূল স্তর থেকে খবরাখবর আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

দ্য ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস ইন জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীরের (এফএইচআরজেকে) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বেসরকারি এই সংগঠনে রয়েছেন সাবেক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোপাল পিল্লাই, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মদন লোকুর ও রুমা পাল, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, দিল্লি ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এ পি শাহ, সাংবাদিক আনন্দ সহায় এবং কেন্দ্র ও জম্মু–কাশ্মীরের মধ্যে আলোচনার জন্য গঠিত মধ্যস্থতাকারী দলের অন্যতম সদস্য রাধা কুমারের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭৯ অনুচ্ছেদ খারিজ ও রাজ্য ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের পর এই সংগঠনের জন্ম। এই সংগঠনের ষষ্ঠ প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী পাওয়া তথ্য, গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন, বিভিন্ন বেসরকারি অলাভজনক সংস্থার তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার এবং তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিধানসভার নির্বাচন সত্ত্বেও জম্মু–কাশ্মীরের মানুষ নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করেননি। তাঁরা মনে করেন, ভোট হলেও তাঁরা ক্ষমতাচ্যুত থেকে গেছেন। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নন, আসল ক্ষমতাবান উপরাজ্যপাল। তিনিই পুলিশ, আমলাশাহি সবার নিয়ন্ত্রক।

জম্মু–কাশ্মীর রাজ্যের দ্বিখণ্ডীকরণ এবং সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের ছয় বছর পূর্তির সময় এই প্রতিবেদন পেশ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সমালোচনা করে তাতে বলা হয়েছে, জম্মু–কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর প্রশাসনিক ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকার কুক্ষিগত করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক রাজ্যের কর্তাদের ওপর বিশ্বাস না রেখে প্রশাসনের পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় বহিরাগত কর্মকর্তাদের হাতে। ফলে জনতা ও কর্তাদের মধ্যে তথ্য ও খবরাখবর আদান–প্রদানের যে যোগসূত্রগুলো ছিল, সব ছিন্ন হয়ে যায়। বিশ্বাসের অভাবে তৃণমূল স্তর থেকে খবরাখবর আসা বন্ধ হয়ে যায়। এতে জম্মুর পীর পাঞ্জাল ও চন্দ্রভাগা উপত্যকা এলাকায় ২০২০–২১ সাল থেকে সীমান্তপারের সন্ত্রাস নতুন করে মাথা তুলতে শুরু করে। পরে তা ছড়িয়ে যায় গোটা কাশ্মীর উপত্যকায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগামের সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা রোখার ব্যর্থতার কারণও এই। তৃণমূল স্তর থেকে প্রশাসনিক পর্যায় পর্যন্ত খবরাখবর আদান–প্রদান বন্ধ। প্রশাসন ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তারা সন্ত্রাসীদের কোনো খোঁজই আগাম পাননি। ফলে বিনা বাধায় হামলাকারীরা কাজ সেরে চলে যায়।

এতে বলা হয়, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মুঠো কতটা দৃঢ়, তা বোঝা যায় নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব পত্রপাঠ নাকচ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রস্তাব উপরাজ্যপাল নাকচ করে দেন। নির্বাচিত সরকার ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে বিরোধের যে মীমাংসা সূত্র মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন, উপরাজ্যপাল তা মানতেও অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলির খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্বীকার৭ ঘণ্টা আগে

এফএইচআরজেকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগাম–কাণ্ডের পর জম্মু–কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কাশ্মীরের জনতা পেহেলগাম হত্যালীলার নিন্দা করেছিলেন দৃঢ়ভাবে। সন্ত্রাসীরা চেয়েছিল হিন্দু–মুসলিম মেরুকরণ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে। কাশ্মীরি জনতা তা হতে দেননি। অথচ পুলিশ ও তদন্তকারীরা আগুপিছু না ভেবে তড়িঘড়ি দুই কাশ্মীরির জড়িত থাকার কথা জানিয়ে দেয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু সেই ঘোষণার ফলে সারা দেশের বিভিন্ন শহরে কাশ্মীরিদের ওপর আক্রমণ ঘটতে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, পেহেলগাম হামলার পর ২ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা বা আটক করা হয়। শতাধিক ব্যক্তিকে ইইউএপিএ অথবা পিএসএর মতো কঠোর আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। কর্ডন ও তল্লাশি হয়ে ওঠে প্রতিদিনের যন্ত্রণা। স্থানীয় গণমাধ্যমকে রাখা হয় হুমকির মধ্যে। প্রশাসনের স্থানীয় কর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হতে থাকে। নাগরিকদের হেনস্তা বাড়তে থাকে। ফলে হাল একেবারে বিগড়ে যায়।

আরও পড়ুনইতিহাসের সাক্ষী: ১৯৪৭ সালে কীভাবে দুই ভাগ হয়েছিল কাশ্মীর২৪ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, এই অবস্থা থেকে ফিরে আসার একমাত্র উপায় জম্মু–কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া। সরকার এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুপ্রিম কোর্টেও সেই প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছে। অথচ এখনো তার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। এই সংগঠন মনে করে, স্বাভাবিকতা ফেরাতে হলে এখনই ২০১৯ সালের জম্মু–কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন বাতিল করা দরকার। লাদাখের জনগণ রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত হওয়ার জন্য যে আন্দোলন চালাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত কালক্ষেপ না করে তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসা।

এফএইচআরজেকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতীত থেকে সরকার শিক্ষা নিচ্ছে না। দেখা গেছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যখন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে একজোট হয়ে মাঠপর্যায়ে শান্তি স্থাপনার কাজে নামেন, তখন পরিস্থিতি অনুকূল হয়। মানুষ আস্থাশীল হয় যখন দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা মানবাধিকার নির্দেশিকা মেনে চলছে। জম্মু–কাশ্মীরের জনজীবন স্বাভাবিক করে তোলার জন্য মানবাধিকার কমিশন, নারী কমিশন, জবাবদিহি কমিশন ও তথ্য কমিশনের মতো সংস্থা আবার চালু করার ওপর প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনকাশ্মীরে হামলা: কারা এই ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’২৪ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র ম খ যমন ত র এই স গঠন খবর খবর কর ত দ র র জন য র খবর ক ষমত র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীরে সন্ত্রাস ফিরে আসার জন্য দায়ী মোদি প্রশাসন: এফএইচআরজেকের প্রতিবেদন

ভারতের জম্মু–কাশ্মীরে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস ফিরিয়ে আনার দায় পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্যের দক্ষ কর্মকর্তাদের জায়গায় বহিরাগত কর্তাদের হাতে প্রশাসনের ভার সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়াই সন্ত্রাসবাদের ফিরে আসার কারণ। ওই সিদ্ধান্তের জন্য তৃণমূল স্তর থেকে খবরাখবর আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

দ্য ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস ইন জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীরের (এফএইচআরজেকে) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বেসরকারি এই সংগঠনে রয়েছেন সাবেক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোপাল পিল্লাই, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মদন লোকুর ও রুমা পাল, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, দিল্লি ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এ পি শাহ, সাংবাদিক আনন্দ সহায় এবং কেন্দ্র ও জম্মু–কাশ্মীরের মধ্যে আলোচনার জন্য গঠিত মধ্যস্থতাকারী দলের অন্যতম সদস্য রাধা কুমারের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭৯ অনুচ্ছেদ খারিজ ও রাজ্য ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের পর এই সংগঠনের জন্ম। এই সংগঠনের ষষ্ঠ প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী পাওয়া তথ্য, গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন, বিভিন্ন বেসরকারি অলাভজনক সংস্থার তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার এবং তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিধানসভার নির্বাচন সত্ত্বেও জম্মু–কাশ্মীরের মানুষ নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করেননি। তাঁরা মনে করেন, ভোট হলেও তাঁরা ক্ষমতাচ্যুত থেকে গেছেন। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নন, আসল ক্ষমতাবান উপরাজ্যপাল। তিনিই পুলিশ, আমলাশাহি সবার নিয়ন্ত্রক।

জম্মু–কাশ্মীর রাজ্যের দ্বিখণ্ডীকরণ এবং সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের ছয় বছর পূর্তির সময় এই প্রতিবেদন পেশ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সমালোচনা করে তাতে বলা হয়েছে, জম্মু–কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর প্রশাসনিক ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকার কুক্ষিগত করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক রাজ্যের কর্তাদের ওপর বিশ্বাস না রেখে প্রশাসনের পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় বহিরাগত কর্মকর্তাদের হাতে। ফলে জনতা ও কর্তাদের মধ্যে তথ্য ও খবরাখবর আদান–প্রদানের যে যোগসূত্রগুলো ছিল, সব ছিন্ন হয়ে যায়। বিশ্বাসের অভাবে তৃণমূল স্তর থেকে খবরাখবর আসা বন্ধ হয়ে যায়। এতে জম্মুর পীর পাঞ্জাল ও চন্দ্রভাগা উপত্যকা এলাকায় ২০২০–২১ সাল থেকে সীমান্তপারের সন্ত্রাস নতুন করে মাথা তুলতে শুরু করে। পরে তা ছড়িয়ে যায় গোটা কাশ্মীর উপত্যকায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগামের সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা রোখার ব্যর্থতার কারণও এই। তৃণমূল স্তর থেকে প্রশাসনিক পর্যায় পর্যন্ত খবরাখবর আদান–প্রদান বন্ধ। প্রশাসন ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তারা সন্ত্রাসীদের কোনো খোঁজই আগাম পাননি। ফলে বিনা বাধায় হামলাকারীরা কাজ সেরে চলে যায়।

এতে বলা হয়, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মুঠো কতটা দৃঢ়, তা বোঝা যায় নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব পত্রপাঠ নাকচ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রস্তাব উপরাজ্যপাল নাকচ করে দেন। নির্বাচিত সরকার ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে বিরোধের যে মীমাংসা সূত্র মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন, উপরাজ্যপাল তা মানতেও অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলির খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্বীকার৭ ঘণ্টা আগে

এফএইচআরজেকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগাম–কাণ্ডের পর জম্মু–কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কাশ্মীরের জনতা পেহেলগাম হত্যালীলার নিন্দা করেছিলেন দৃঢ়ভাবে। সন্ত্রাসীরা চেয়েছিল হিন্দু–মুসলিম মেরুকরণ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে। কাশ্মীরি জনতা তা হতে দেননি। অথচ পুলিশ ও তদন্তকারীরা আগুপিছু না ভেবে তড়িঘড়ি দুই কাশ্মীরির জড়িত থাকার কথা জানিয়ে দেয়। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু সেই ঘোষণার ফলে সারা দেশের বিভিন্ন শহরে কাশ্মীরিদের ওপর আক্রমণ ঘটতে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, পেহেলগাম হামলার পর ২ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা বা আটক করা হয়। শতাধিক ব্যক্তিকে ইইউএপিএ অথবা পিএসএর মতো কঠোর আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। কর্ডন ও তল্লাশি হয়ে ওঠে প্রতিদিনের যন্ত্রণা। স্থানীয় গণমাধ্যমকে রাখা হয় হুমকির মধ্যে। প্রশাসনের স্থানীয় কর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হতে থাকে। নাগরিকদের হেনস্তা বাড়তে থাকে। ফলে হাল একেবারে বিগড়ে যায়।

আরও পড়ুনইতিহাসের সাক্ষী: ১৯৪৭ সালে কীভাবে দুই ভাগ হয়েছিল কাশ্মীর২৪ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, এই অবস্থা থেকে ফিরে আসার একমাত্র উপায় জম্মু–কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া। সরকার এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুপ্রিম কোর্টেও সেই প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছে। অথচ এখনো তার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। এই সংগঠন মনে করে, স্বাভাবিকতা ফেরাতে হলে এখনই ২০১৯ সালের জম্মু–কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন বাতিল করা দরকার। লাদাখের জনগণ রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত হওয়ার জন্য যে আন্দোলন চালাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত কালক্ষেপ না করে তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসা।

এফএইচআরজেকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতীত থেকে সরকার শিক্ষা নিচ্ছে না। দেখা গেছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যখন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে একজোট হয়ে মাঠপর্যায়ে শান্তি স্থাপনার কাজে নামেন, তখন পরিস্থিতি অনুকূল হয়। মানুষ আস্থাশীল হয় যখন দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা মানবাধিকার নির্দেশিকা মেনে চলছে। জম্মু–কাশ্মীরের জনজীবন স্বাভাবিক করে তোলার জন্য মানবাধিকার কমিশন, নারী কমিশন, জবাবদিহি কমিশন ও তথ্য কমিশনের মতো সংস্থা আবার চালু করার ওপর প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনকাশ্মীরে হামলা: কারা এই ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ