গাজা উপত্যকার রাফাহ অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারালেন ফিলিস্তিনের জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড ও কিংবদন্তি ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদ। ফুটবল মাঠে অসাধারণ নৈপুণ্যের জন্য যিনি ‘ফিলিস্তিনের পেলে’ নামে পরিচিত ছিলেন। সেই ৪১ বছর বয়সী এই তারকা বুধবার (৬ আগস্ট) মানবিক সহায়তার আশায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় সরাসরি গুলির শিকার হন।

ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নিশ্চিত করেছে এই দুঃসংবাদ। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানায়, আল-ওবেইদ ছিলেন পাঁচ সন্তানের জনক। তিনি গাজা অঞ্চলের অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার হিসেবে দীর্ঘদিন খেলে গেছেন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে। শুরু করেছিলেন খাদামাত আল-শাতি ক্লাব থেকে, পরে খেলেছেন আল-আমারি ইয়ুথ সেন্টার ও গাজা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে।

২০১৬ ও ২০১৭ সালে গাজার সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেন তিনি। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় ছিলেন এবং তার ক্যারিয়ারে গোল সংখ্যা ১০০-এরও বেশি। জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেছিলেন ২০১০ সালে, ইয়েমেনের বিপক্ষে। এছাড়া ২০১২ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ ও ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ডি পল-সুয়ারেজে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিহীন মায়ামি

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে জয়ে শুরু বাংলাদেশের

ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলমান আগ্রাসনে এ পর্যন্ত অন্তত ৩২১ জন ক্রীড়াঙ্গনের সদস্য নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে খেলোয়াড়, কোচ, রেফারি, প্রশাসক ও বোর্ড কর্মকর্তারাও রয়েছেন।

আল-ওবেইদের নির্মম মৃত্যু বিশ্বজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ফুটবল কিংবদন্তি এরিক ক্যান্টনা সামাজিক মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, “আর কত দূর এই গণহত্যা চলতে থাকবে?” একইসঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে তার সমর্থনও জানিয়েছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় প্রতিদিনের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের মধ্যেও যারা এক সময় খেলার মাঠে জাতিকে গর্বিত করতেন, আজ তারাও অবরুদ্ধ মৃত্যুফাঁদে। বিশ্ব বিবেকের কাছে এই মৃত্যুগুলো যেন আর কোনো সংখ্যা না হয়ে ওঠে—এমনটাই প্রত্যাশা ফিলিস্তিনিদের। 

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সের ব্যাটিং ঝলক আর বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়

ডাবলিনের মালাহাইড ভিলেজে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের নায়ক জর্ডান কক্স করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। সঙ্গে লিয়াম ডসন, জেমি ওভারটন ও আদিল রশিদের বোলিং জাদুতেই ধরা খেল স্বাগতিকরা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের মূল ভরসা ছিলেন গ্যারেথ ডেলানি। শেষদিকে তার ঝড়ো ২৯ বলে অপরাজিত ৪৮ রানে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় দল। ইনিংসে ছিল ৪টি চার আর ৩টি বিশাল ছক্কা। ওপেনার রস অ্যাডায়ার ২৩ বলে ৩৩ এবং তিন নম্বরে নামা হ্যারি টেক্টর ২৭ বলে ২৮ রান যোগ করেন। তবে অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে দ্রুত ফেরান ডসন। পরে টেক্টরকেও আউট করে ২ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেটের বোলিং ফিগার দাঁড় করান তিনি।

আরো পড়ুন:

ভারতকে ১৭২ রানের টার্গেট ছুড়ল পাকিস্তান

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ভারত

জেমি ওভারটন তার চার ওভারে লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে আয়ারল্যান্ডের মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন। সবচেয়ে কার্যকরী ছিলেন লেগস্পিনার আদিল রশিদ। ইনিংসের শেষভাগে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২৯ রানে ৩ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই সিনিয়র ব্যাটার জস বাটলারকে শূন্য রানে ফেরান ব্যারি ম্যাককার্থি। অধিনায়ক জেকব বেথেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, করেন মাত্র ১৫ রান।

তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাট চালান ফিল সল্ট। ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংসে দুই চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে গড়েন কক্সের সঙ্গে ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। সেখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। কক্স খেলেন ৩৭ বলে ৫৫ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যেখানে ছিল নিয়ন্ত্রিত শটের ছড়াছড়ি। শেষ পর্যন্ত বেন হোয়াইট তাকে বোল্ড করলেও তখন জয় প্রায় নিশ্চিত।

বাকি কাজটা সেরে দেন টম ব্যান্টন ও রেহান আহমেদ। ব্যান্টনের ২৬ বলে অপরাজিত ৩৭ রানে ভর করে ১৭.১ ওভারেই ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ