উত্তরবঙ্গের মহাসড়ক বন্ধের হুঁশিয়ারি রবি শিক্ষার্থীদের
Published: 7th, August 2025 GMT
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদনের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া না পেলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরববঙ্গের সব যান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টায় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুল গোল চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, “দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ভাড়া ভবনে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সাত দফায় ডিপিপি সংশোধন করে ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় কমিয়ে ৫৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এরপরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি একনেক সভার এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিশ্বকবির নামে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমরা বারবার আন্দোলন করার পরও শুধু আশ্বস্তই করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
জাবিতে বামপন্থিদের মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনি
সিলেটে জুলাই স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪
তিনি আরো বলেন, “সরকার আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাসের ডিপিপি অনুমোদনে আশ্বস্ত না করলে আগামী রবিবার থেকে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হব। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মহাসড়ক ছাড়ব না।”
মানবনন্ধনে জাকারিয়া, হৃদয় সরকার, মেরাজ, হাসান প্রমুখ শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
এর আগে, সকাল থেকেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আধবেলা প্রশাসনিক কর্মবিরতি দিয়ে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
প্রতিষ্ঠার ৯ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। ৭ দফায় ডিপিপি সংশোধন করেও প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত সেটির অনুমোদন না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে তাদের দাবি, হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানিয়ে আসছেন।
দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ২৬ জুলাই থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হয়েছে। সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও গণসংযোগসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এ কর্মসূচির সঙ্গে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা একাত্মতা প্রকাশ করে ক্যাম্পাসের দাবিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঢাকা/রাসেল/হাবিবুর/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম প্রায় ‘পুরুষশূন্য’ বলে দাবি করেছেন নারীরা। আজ মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি গ্রামের শতাধিক নারী এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ এলাকাছাড়া। দীর্ঘ সময় তাঁরা এলাকাছাড়া থাকায় তাঁদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কড়ইবাড়ি স্ট্যান্ড এলাকায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।
গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
মামলায় ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আলোচিত তিন খুনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ এখনো গ্রেপ্তার হননি।
আজ দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা আক্তার বলেন, তিন খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কে গত এক মাসের বেশি ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো কড়ইবাড়ি গ্রাম। এ ছাড়া ঘটনাটি নিয়ে একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। যার কারণে গ্রামের পুরুষেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরে আসছেন না।
জায়েদা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের বিচার হোক। কিন্তু গ্রামের সবাইকে যেন হয়রানি না করা হয়।’
সালমা বেগম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামের সবার মধ্যে। সব মিলিয়ে গ্রামের নারীরা আতঙ্কে আছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিরীহ একজন মানুষকেও হয়রানি করা হয়নি। তাঁরা শুরু থেকেই মামলাটি নিয়ে সতর্ক। গ্রামবাসীর আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের গ্রামে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।’