পঞ্চগড় জেলা শহরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জাবেদ উমর জয় (১৯) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো শহর। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। তারা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চৌরঙ্গী মোড়সহ আশপাশের সড়কে বাঁশ ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে করতোয়া সেতু থেকে মিলগেট বাজার এবং চৌরঙ্গী মোড় থেকে তেতুঁলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা পর্যন্ত সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষকেও চলাচলে বাধা দেন এবং নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

আরো পড়ুন:

উত্তরবঙ্গের মহাসড়ক বন্ধের হুঁশিয়ারি রবি শিক্ষার্থীদের

জাবিতে বামপন্থিদের মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনি

এর আগে, বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে জাবেদ উমর জয় নামে এক যুবক ছুরিকাঘাতের শিকার হন। পরে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত জয় জেলার পুরাতন ক্যাম্প এলাকার জহিরুল হকের ছেলে এবং তিনি ছাত্রদলের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই হামলা হয়েছে। নতুনবস্তি এলাকার আল আমিন, পারভেজসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে, অবরোধ চলাকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।

শইমী ইমতিয়াজ বলেন, “ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই অন্যদের গ্রেপ্তার করা হবে।

ঢাকা/নাঈম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

অল্প দুধের সঙ্গে পানি ও রাসায়নিক মিশিয়ে নকল দুধ, স্বামী-স্ত্রীর কারাদণ্ড

অল্প দুধের সঙ্গে পানি ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে শৌচাগারে যন্ত্র বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল নকল দুধ। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা হতো প্রায় ৪০ মণ দুধ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এমন একটি নকল দুধ তৈরি কারখানার সন্ধান পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ নকল দুধ তৈরির সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৩০ মণ নকল দুধ জব্দ করে নষ্ট করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সানাউল মোরশেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের মো. তারেক হোসেন (২৬) ও তাঁর স্ত্রী মুন্নি খাতুন (২০)। তাঁদের মধ্যে তারেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং মুন্নি খাতুনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারেক হোসেনের বড় ভাই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরি হচ্ছিল। এর আগে দুবার শফিকুলকে নকল দুধ তৈরির অপরাধে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে তিনি বেশ কিছুদিন নকল দুধ তৈরি থেকে বিরত ছিলেন। এরপর আবার নকল দুধ তৈরি শুরু করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুর ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে শফিকুল পালিয়ে যান। তবে বাড়িটির শৌচাগারে নকল দুধ তৈরির সময় তারেক ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করা হয়।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সানাউল মোরশেদ জানান, নকল দুধ তৈরির যন্ত্রে শব্দ হওয়ার কারণে তাঁরা সেটি শৌচাগারে বসিয়েছিলেন। যন্ত্র চালানোর সময় বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হতো। চক্রটি দিনে প্রায় ৪০ মণ নকল দুধ তৈরি করে বিভিন্ন দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে আসছিলেন। তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নকল দুধ তৈরির কথা স্বীকার করেছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন বলেন, সাধারণত গুরুর দুধে ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত ফ্যাট থাকে। কিন্তু নকল এই দুধে প্রায় ১৩ শতাংশ ফ্যাট পাওয়া গেছে, যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই দুধপানে লিভার, কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ