তারুণ্যের কণ্ঠস্বর জোরালো করতে বাংলাদেশে ‘ইয়াং পিপল অ্যাডভাইজারি গ্রুপ’ চালু ইউনিসেফের
Published: 7th, August 2025 GMT
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল ইউনিসেফের ‘ইয়াং পিপল অ্যাডভাইজারি গ্রুপ’ (ওয়াইপিএজি)। যেসব নীতি ও কর্মসূচি শিশু ও তরুণদের ওপর প্রভাব ফেলে, তা গ্রহণে তারুণ্যের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই ইউনিসেফ এই উদ্যোগ নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ইউনিসেফ বাংলাদেশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউনিসেফের ‘ইয়াং লিডারশিপ প্রোগ্রাম’-এর সাবেক সদস্যদের নিয়ে ওয়াইপিএজি গঠিত হয়েছে। প্রোগ্রামটি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ‘লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসি’ (এলকেওয়াইএসপিপি)-এর সহযোগিতায় যৌথভাবে আয়োজন করা হয়। তরুণদের জ্ঞান, দক্ষতা ও নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে সমাজে টেকসই প্রভাব তৈরির লক্ষ্যে নতুন প্ল্যাটফর্মটি কাজ করবে।
গত বছর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। তাঁর সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাংলাদেশে ওয়াইপিএজি গঠনের পথ খুলে যায়।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘তরুণদের জন্য বিনিয়োগ করলে তারা নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসে, আমাদের অনুপ্রাণিত করে এবং বাস্তব পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। ওয়াইপিএজি নিছক একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি জবাবদিহি, অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার একটি শক্তির জায়গা।’
তরুণদের জাতীয় বিষয়গুলোতে সম্পৃক্ত করতে ওয়াইপিএজি ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। ইয়াং পিপল অ্যাডভাইজারি গ্রুপের একজন সদস্য সারিয়া চৌধুরী বলেন, ওয়াইপিএজি গঠনের জন্য এটিই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারণ, তরুণেরা শুধু প্রস্তুত নয়, এরই মধ্যে তাঁরা ভবিষ্যৎ গঠনে কাজ শুরু করেছেন।
আরেক সদস্য নেয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু মানসিকতার পরিবর্তন নয়, তরুণদের নীতিনির্ধারণে সচেতনতা তৈরি করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।’
ওয়াইপিএজির সদস্যরা ইউনিসেফের কর্মসূচি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে কৌশলগত ভূমিকা রাখবে। তারা শিশু অধিকার বিষয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেবে, ইউনিসেফের উদ্যোগে অংশ নেওয়া তরুণদের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবে। তা ছাড়া তারা শিশুদের জন্য নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নেও যুক্ত থাকবে।
এই মডেল মালয়েশিয়া, ইরাক ও থাইল্যান্ডে ইউনিসেফের সফল অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশে চালু করা হয়েছে। ইউনিসেফের বিশ্বাস, তরুণদের নেতৃত্ব ও দক্ষতা তৈরিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু ও তরুণের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।
প্রতিবছর ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী তরুণদের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও ক্ষমতায়ন বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৯৯ সালে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘ। পরের বছর ২০০০ সাল থেকে দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যাপন শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চিহ্নিত গণহত্যাকারীদের ছবি প্রদর্শন করে ঢাবিকে কলঙ্কিত করেছে শিবির, বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবসে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের ছবি প্রদর্শন করে জাতির গৌরবময় ইতিহাসকে ইসলামী ছাত্রশিবির বিকৃত করেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। অবিলম্বে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সংগঠন হিসেবে ক্যাম্পাসে শিবিরের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি তামজিদ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকারের পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেছে সংগঠনটি।
ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, ’৯০–এর সামাজিক চুক্তি অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক-ফ্যাসিস্ট সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্লজ্জভাবে শিবিরকে নরমালাইজ করার চেষ্টা করেছে। ঢাবি প্রক্টরের পক্ষপাতমূলক আচরণ শিবিরের এই জঘন্য কাজকে উৎসাহিত করেছ। তাঁর এ রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ আগামী দিনের সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ঢাবি প্রক্টর ক্যাম্পাসের ভেতরে তোফাজ্জল ও সাম্য হত্যাকাণ্ড, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক গ্রাফিতি মুছে ফেলা, চারুকলার ভেতরে ঢুকে শোভাযাত্রার মোটিফে আগুন দেওয়া, একাধিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আমলে না নেওয়াসহ নানা অভিযোগের সুষ্ঠু বিচারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অতএব ঢাবি প্রক্টরকে অপসারণ না করলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের মতোই শিবিরের দলীয় আধিপত্য কায়েম হবে।’
চব্বিশের নাম দিয়ে একাত্তরকে অবমূল্যায়নের মাধ্যমে ছাত্রশিবির জুলাই গণ–অভ্যুত্থান পরিপন্থী অবস্থান নিয়েছে বলে বলা হয়েছে ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনীতিতে পুর্নবাসনের সুযোগ পেয়ে স্বাধীনতাবিরোধী গণহত্যকারীদের উদ্যাপনের চেষ্টা গণ–অভ্যুত্থানকে জনতার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের পকেটস্থ করার অপচেষ্টা বলে আমরা মনে করি। এর আগেও ছাত্রশিবির মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করে তাদের নিজস্ব প্রকাশনায় বিতর্কিত লেখা ছেপে বাংলাদেশবিরোধী রাজনীতি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’