শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Published: 10th, August 2025 GMT
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে লোকপ্রশাসন বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি হয়। এতে বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও লোকপ্রশাসন শিক্ষার্থী সংসদের নেতারা অংশ নেন।
মানববন্ধনে লোকপ্রশাসন শিক্ষার্থী সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক মাহ্ আলম সঞ্চালনা করেন। এ সময় বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহিন রানা বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, লোকপ্রশাসন বিভাগকে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে আমাদের কারিকুলামের ৫০ শতাংশ মিল রয়েছে। সারা বিশ্ব যখন বহুবিষয়ক শিক্ষাব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে, সেখানে আমাদের সুযোগ সীমিত রাখা উন্নয়নের পথে বাধা।’
লোকপ্রশাসনের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুন নাহার বলেন, ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রশাসনিক শাখা থেকেই লোকপ্রশাসনের উৎপত্তি। পাঠ্যসূচি, কোর্স ও বিষয়বস্তু প্রায় অভিন্ন। যদি অন্য বিভাগ ক্যাডারভিত্তিক দাবি করতে পারে, তবে আমরাও প্রশাসনিক ক্যাডারের দাবি করতে পারি। তবে সর্বোত্তম সমাধান হবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও লোকপ্রশাসন বিভাগকে একীভূত করে একটি একক ক্যাডার তৈরি করা।’
লোকপ্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হরে কৃষ্ণ কুণ্ডু বলেন, লোকপ্রশাসন দেশে স্বীকৃত একটি স্বনামধন্য বিভাগ। অনেক বিভাগ শিক্ষা ক্যাডারের সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু লোকপ্রশাসন পাচ্ছে না—এটি বৈষম্য। আপাতত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সঙ্গে একীভূত করা যেতে পারে। তবে ভবিষ্যতে কলেজপর্যায়ে লোকপ্রশাসনের জন্য আলাদা শিক্ষা ক্যাডার চালুর ব্যবস্থা করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিন হত্যা: বিচার চেয়ে শরীয়তপুর ও ঝিনাইদহে বিক্ষোভ
গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর ও ঝিনাইদহে বিক্ষোভ করেছেন সাংবাদিকরা। রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।
সংবাদিকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তুহিনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি সাংবাদিক নিপীড়নের ঘটনায় তারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন।
শরীয়তপুর:
আজ সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ পেশাদার সাংবাদিক ফোরাম (বিপিজেএফ) শরীয়তপুর জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এর আগে জেলা প্রশাসক মিজ তাহসিনা বেগমের কাছে স্মারকলিপি দেন সাংবাদিকরা।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
সাংবাদিকদের ওপর হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ ডিআরইউয়ের
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শুধু গাজীপুরে নয়, সারা দেশেই এখন সাংবাদিকরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিপিজেএফ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জামাল মল্লিকের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক রোমান আকন্দের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- মানবজমিনের শেখ খলিলুর রহমান, যুগান্তরের কেএম রায়হান কবীর, চ্যানেল আইয়ের এসএম মজিবুর রহমান, নয়া দিগন্তের বোরহান উদ্দিন রাব্বানী, প্রথম আলোর সত্যজিৎ ঘোষ, চ্যানেল ২৪-এর নুরুল আমিন রবিন, এনটিভির আব্দুল আজিজ শিশির, এখন প্রতিনিধি কাজী মনিরুজ্জামান, সময় টিভির বিএম ইস্রাফিল, দিনকাল প্রতিনিধি ও বিটিএসএফর মহাসচিব মো. আল-আমিন শাওন, নিউ এইজের এমবি কাজী নাসির, চ্যানেল এস-এর খোরশেদ আলম বাবুল, কালের কন্ঠের শরীফুল আলম ইমন। মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
ঝিনাইদহ:
সারা দেশে সাংবাদিক নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং গাজীপুরে আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার বিচার চেয়ে ঝিনাইদহে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করেছেন মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সকালে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে ঝিনাইদাহ শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে মৌন মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মডার্ন মোড়ে দিয়ে শেষ হয়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক সাংবাদিক এম আর রাসেলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- ঝিনাইদহ মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সদস্য সচিব সাংবাদিক শেখ ইমন, ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ রিপোর্টার্স ইউনিটের সভাপতি এম এ কবির, সাংবাদিক সম্রাট হোসেন, সুজন বিপ্লব, এম বুরহান উদ্দীন, এস এ এনাম। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠনের নেতারা।
সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক হতে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এসময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্রাপে ফেলার চেষ্টা করে। এটি যখন বাদশা বুঝতে পারে, তখন তার থেকে ছুটতে চায় এবং কিল-ঘুষি মারে। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে একটি মুদী দোকানে বাদশাকে কোপানো শুরু করে। বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকে।
ঘটনাটি সাংবাদিক তুহিন নিজের পেশাগত কারণেই ভিডিও করে। আসামিরা সাংবাদিক তুহিনকে ভিডিও ডিলেট করতে বলে কিন্তু তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে ওই আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
তুহিন হত্যা মামলায় গাজীপুর পুলিশ সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে তাদের গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আদালতের বিচারক মো. আলমগীর আল মামুন প্রত্যেক আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল।
ঢাকা/সাইফুল/শাহরিয়ার/মাসুদ