যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ—বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্যই শৈশবের দুঃসহ স্মৃতি। পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে অনেকেই অঙ্কের কঠিন সব ধাধা থেকে বেঁচে যাওয়ার স্বস্তির শ্বাস ছাড়েন— বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখে গণিতের সমীকরণের পথ পেরোতে হবে না এমন বিষয় খোঁজেন কেউ কেউ।
কিন্তু তিনি যদি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমর্থক হন? তাহলে তাঁর আর ওই সুযোগ কই। আগে তো তাও টিউশনে গিয়ে আলাদা করে অঙ্কটা বুঝে নেওয়া যেত। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটের অঙ্কটা মেলাতে সে সাহায্যও নেই। উল্টো উচ্চরক্তচাপ মেপে নেওয়ার মেশিনটা কোথায় আছে, অল্প বয়সেই শুরু করতে হয় সেই খোঁজ।
হৃদয়ে যাঁদের রোগ আছে, তাঁদের শঙ্কা থাকে হার্ট অ্যাটাকের। কে কত রান করলে কী হবে, কার জয়ে কী ক্ষতি—এসব সমীকরণ মেলাতে মেলাতে পার হয় বহু নির্ঘুম রাত। বিশ্বাস হচ্ছে না? ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনো হ্যাশট্যাগ দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করুন কাল রাতে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপের ম্যাচের আগে-পরেও এমন কত অভিজ্ঞতা ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমটিতে।
আফগানিস্তানের ইনিংসের শেষ ওভারে মোহাম্মদ নবী যখন ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে দিলেন দুনিত ভেল্লালাগেকে—নবম-দশম শ্রেণির অঙ্কে ফাঁকি দেওয়া ছেলেটাও নিশ্চয়ই বসে গিয়েছিলেন অঙ্ক মেলাতে। এখন যদিও কাজটা সহজ, কোনো এক ব্রাউজারে ক্লিক করলেই ভেসে ওঠে লেখাটা ‘শ্রীলঙ্কা যদি…বাংলাদেশ তাহলে…।’
আরও পড়ুনসুপার ফোরে বাংলাদেশ৮ ঘণ্টা আগেযদি-কিন্তুর সমীকরণ মেলানো সহজ হয়ে গেলেও ম্যাচের দুশ্চিন্তা কমানোর কোনো অ্যাপ তো আর বের হয়নি। দুনিয়া আধুনিক হয়ে গেছে— কিন্তু বাংলাদেশের সমর্থকদের ম্যাচ জেতানোর রীতি তো রয়ে গেছে সেকেলেই। ‘এই এখান থেকে কিন্তু উঠবে না, উঠলেই আর শ্রীলঙ্কা জিতবে না’—কিছু মুহূর্তের জন্য আবুধাবির প্রেসবক্সের পাশের গ্যালারিতে গিয়েও শোনা গেল তা।
নিজের দলের হলেও তা না হয় মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন কি কাজ বাদ দিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ দেখা যায়? বাংলাদেশের সমর্থকদের করতে হয় তাও। কারণ তাঁদের ভাগ্য তো আর নিজেদের হাতে না। এবারের এশিয়া কাপেই দেখুন, দুটো ম্যাচ জিতেও স্বস্তি ছিল না একদমই।
হংকংয়ের বিপক্ষে সহজে জিততে পারেনি লিটন দাসের দল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুইজ জিতে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ
বিশ্বজুড়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘গ্লোবাল এটমিক কুইজ’। ১০ নভেম্বর এর আয়োজন করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি সংস্থা রসাটম। বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে প্রতিবছর এই কুইজের আয়োজন করে থাকে সংস্থাটি। এতে থাকছে কুইজ জিতে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ।
রসাটমের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এবারের কুইজটি অনলাইন ও অফলাইনে বাংলাসহ বিশ্বের ১৬টি ভাষায় আয়োজিত হচ্ছে। রাশিয়া, বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশে আয়োজন করা হচ্ছে অফলাইন প্রতিযোগিতা। মূল অফলাইন প্রতিযোগিতাটি মস্কোতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবেন।
বাংলাদেশের দুটি স্থানে অফলাইন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। একটি হলো ঢাকার নভোথিয়েটারে অবস্থিত পরমাণু শক্তিবিষয়ক তথ্যকেন্দ্র ‘আইকোন’ এবং আরেকটি ঈশ্বরদী পৌরসভায় অবস্থিত পারমাণবিক তথ্যকেন্দ্র ‘পিআইসি’। নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এখানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এ ছাড়া অনলাইনে অংশগ্রহণের জন্য ১০ নভেম্বর যেকোনো সময় https://quiz. atomforyou.com সাইটে নিবন্ধন করে যে কেউ অংশ নিতে পারবেন।
অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন মাত্রার জটিল টেস্ট বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অনুশীলনের সুযোগ নিতে পারেন। কুইজ প্রতিযোগিতায় তিনটি থিমের (ইতিহাস, বর্তমান প্রযুক্তি ও ভবিষ্যৎ) ওপর ১৮টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, যার জন্য প্রতিযোগীরা সময় পাবেন ২৪ ঘণ্টা।
২২ নভেম্বর একই ওয়েবসাইটে বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করা হবে। ১০০ জন বিজয়ী এক্সক্লুসিভ পুরস্কার পাবেন, তবে প্রথম তিনজনের জন্য থাকবে রসাটমের আতিথেয়তায় রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য থাকবে একটি ইলেকট্রনিক সার্টিফিকেট।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, পরমাণু শক্তিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিস্ময়কর সব পরমাণুর আবিষ্কার সম্পর্কে জানার এক অনন্য সুযোগ এই গ্লোবাল এটমিক কুইজ। এটা সাধারণ কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক কুইজ নয়। এর মাধ্যমে পারমাণবিক পদার্থবিদ্যার মূল বিষয়গুলো আগ্রহীদের ব্যাখ্যা করার একটি উদ্যোগ। প্রাত্যহিক জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির প্রভাব এবং বিশ্বের সুরক্ষায় এই প্রযুক্তির ভূমিকা সম্পর্কেও জানার সুযোগ তৈরি করা হয় এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।
বিজ্ঞপ্তি বলছে, গ্লোবাল এটমিক কুইজের সূচনা ২০২০ সালে। এখন পর্যন্ত শতাধিক দেশের ৬৫ হাজারের বেশি প্রতিযোগী কুইজে অংশগ্রহণ করেছেন। রসাটমের শিক্ষামূলক কার্যক্রমের লক্ষ্য শুধু পরমাণু প্রযুক্তিকেই জনপ্রিয় করে তোলা নয়, বরং বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার সুযোগ সৃষ্টি, এ সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করাও এর উদ্দেশ্য। রসাটমের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক রাশিয়াসহ সারা বিশ্বে ২৫টি পরমাণু তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে।