তুরস্ক বাংলাদেশকে একটি ভ্রাতৃপ্রতিম জাতি হিসেবে বিবেচনা করে। ফলে পারস্পরিক স্বার্থের সব ক্ষেত্রে অব্যাহত সংহতি ও সহযোগিতা করবে তারা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তুরস্কের সংসদীয় প্রতিনিধিদল এ আশ্বাস দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সফররত পাঁচ সদস্যের একটি তুর্কি সংসদীয় প্রতিনিধিদল গতকাল সোমবার তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। বাংলাদেশ-তুরস্ক পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারপারসন মেহমেত আকিফ ইলমাজ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তুরস্কের প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। রোহিঙ্গাদের মানবিক চাহিদা পূরণে তুরস্কের অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তুর্কি প্রতিনিধিদল গত শনি–রবিবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশ-তুরস্ক পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারপারসন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা জানান। শিবিরগুলোতে ব্যবস্থাপনা, সুযোগ-সুবিধাসহ মানবিক কার্যক্রমের প্রশংসা করেন তিনি।

সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে শক্তিশালী ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক তুলে ধরেন। তিনি বহুমাত্রিক খাতে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত ও গভীর করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির অনুরোধ করেন। তুরস্ক বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ এবং আধা দক্ষ পেশাদারদের নিয়োগ শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তৌহিদ হোসেন জানান, সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশে ‘ইউনুস এমরে ইনস্টিটিউট’–এর একটি শাখা প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে। এটা বাংলাদেশ ও তুরস্কের জনগণকে আরও ঘনিষ্ঠ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট ত রস ক র সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইন জুয়ায় জড়িতদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার চিন্তা

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।

সভায় ফয়েজ আহমদ বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংকের গতি ধীর করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকেওয়াইসি (গ্রাহকের পরিচয় যাচাই) সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন

কমিশনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে বিটিআরসি থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেইল দেওয়া শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো কীভাবে তাদের ওয়েব ব্রাউজার ও এডসেন্স সেটআপ করবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভেটিং শেষে তা সংশ্লিষ্ট সব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত গাইডলাইনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।

সভায় তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস হিসাব ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।

সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছে, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।

সভায় অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।

সভায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ