বিশ্বজুড়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘গ্লোবাল এটমিক কুইজ’। ১০ নভেম্বর এর আয়োজন করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি সংস্থা রসাটম। বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে প্রতিবছর এই কুইজের আয়োজন করে থাকে সংস্থাটি। এতে থাকছে কুইজ জিতে রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ।

রসাটমের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এবারের কুইজটি অনলাইন ও অফলাইনে বাংলাসহ বিশ্বের ১৬টি ভাষায় আয়োজিত হচ্ছে। রাশিয়া, বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশে আয়োজন করা হচ্ছে অফলাইন প্রতিযোগিতা। মূল অফলাইন প্রতিযোগিতাটি মস্কোতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবেন।

বাংলাদেশের দুটি স্থানে অফলাইন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। একটি হলো ঢাকার নভোথিয়েটারে অবস্থিত পরমাণু শক্তিবিষয়ক তথ্যকেন্দ্র ‘আইকোন’ এবং আরেকটি ঈশ্বরদী পৌরসভায় অবস্থিত পারমাণবিক তথ্যকেন্দ্র ‘পিআইসি’। নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এখানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এ ছাড়া অনলাইনে অংশগ্রহণের জন্য ১০ নভেম্বর যেকোনো সময় https://quiz.

atomforyou.com সাইটে নিবন্ধন করে যে কেউ অংশ নিতে পারবেন।

অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন মাত্রার জটিল টেস্ট বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অনুশীলনের সুযোগ নিতে পারেন। কুইজ প্রতিযোগিতায় তিনটি থিমের (ইতিহাস, বর্তমান প্রযুক্তি ও ভবিষ্যৎ) ওপর ১৮টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, যার জন্য প্রতিযোগীরা সময় পাবেন ২৪ ঘণ্টা।

২২ নভেম্বর একই ওয়েবসাইটে বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করা হবে। ১০০ জন বিজয়ী এক্সক্লুসিভ পুরস্কার পাবেন, তবে প্রথম তিনজনের জন্য থাকবে রসাটমের আতিথেয়তায় রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য থাকবে একটি ইলেকট্রনিক সার্টিফিকেট।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, পরমাণু শক্তিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিস্ময়কর সব পরমাণুর আবিষ্কার সম্পর্কে জানার এক অনন্য সুযোগ এই গ্লোবাল এটমিক কুইজ। এটা সাধারণ কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক কুইজ নয়। এর মাধ্যমে পারমাণবিক পদার্থবিদ্যার মূল বিষয়গুলো আগ্রহীদের ব্যাখ্যা করার একটি উদ্যোগ। প্রাত্যহিক জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির প্রভাব এবং বিশ্বের সুরক্ষায় এই প্রযুক্তির ভূমিকা সম্পর্কেও জানার সুযোগ তৈরি করা হয় এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।

বিজ্ঞপ্তি বলছে, গ্লোবাল এটমিক কুইজের সূচনা ২০২০ সালে। এখন পর্যন্ত শতাধিক দেশের ৬৫ হাজারের বেশি প্রতিযোগী কুইজে অংশগ্রহণ করেছেন। রসাটমের শিক্ষামূলক কার্যক্রমের লক্ষ্য শুধু পরমাণু প্রযুক্তিকেই জনপ্রিয় করে তোলা নয়, বরং বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার সুযোগ সৃষ্টি, এ সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করাও এর উদ্দেশ্য। রসাটমের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক রাশিয়াসহ সারা বিশ্বে ২৫টি পরমাণু তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ক ইজ র জন য পরম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

উড়োজাহাজ খাতে প্রতিযোগিতায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য বিলোপের তাগিদ ইইউ রাষ্ট্রদূতের

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে হঠাৎ এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিল। আর চলতি বছর পাল্টা শুল্কের দর–কষাকষির ইস্যুতে বোয়িং অন্যতম শর্ত হিসেবে সামনে এসেছে।

এমন এক প্রেক্ষাপটে ঢাকায় এক আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার উড়োজাহাজ খাতে ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন। এই খাতে ‘অন্য অংশীদারদের’ তুলনায় ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে কম গুরুত্ব দেওয়া না হয়, সে বিষয়টি বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে বলেছেন।

মঙ্গলবার ঢাকায় ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন গ্রোথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ অভিমত দেন। আলোচনায় মাইকেল মিলার ছাড়াও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ এবং এয়ারবাসের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ, বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া অংশ নেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এ দেশে এয়ারবাসের উপস্থিতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিতে জোর দিচ্ছি। আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্বচ্ছতা এবং বৈষম্যহীনতার দীর্ঘদিনের আশ্বাস পূরণ করে এটিকে যেন বিমানের বহরকে আধুনিকীকরণ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দেশের উড়োজাহাজ খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিত।’

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের উড়োজাহাজ শিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই এটিকে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই খাতে বাংলাদেশের বিকাশ পর্বে এয়ারবাস হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর মতে, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগ ও ভৌগোলিক অবস্থান এই দেশকে আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিমান বাংলাদেশের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে এর স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও বাড়বে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যেখানে এয়ারবাস শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে থাকবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাণিজ্যিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ইইউর অর্থনৈতিক উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রত্যাশা করি। এর অর্থ হলো বাংলাদেশকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেটরদের অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের তুলনায় কম সুবিধা দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, বোয়িং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২৫টি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, আর এয়ারবাস দিয়েছে ১৪টির। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি এ৩৫০ ও ৪টি এ৩২০ নিও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ