সহজ ম্যাচ কঠিন বানিয়ে জিতল পাকিস্তান
Published: 4th, November 2025 GMT
ফয়সালাবাদে ফয়সালার আগে চরম নাটকীয়তা! ম্যাচটা দেখে থাকলে এমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে তখন মুখ গোমড়া করে ছিলেন বাবর আজম, সালমান আলী আগার মাথায় হাত। মুহূর্তের মধ্যেই কী হতে যেন কী হয়ে যাচ্ছিল।
৬ উইকেট হাতে নিয়ে এক সময় ২৭ বলে মাত্র ২৩ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। ক্রিজে দুই থিতু ব্যাটসম্যান সালমান ও হুসেইন তালাত।
এরপর লুঙ্গি এনগিডি এই জুটি ভাঙতেই স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে ধস নামল। হাসান নেওয়াজ ও সালমানকে ফেরানোর পর জয়ের সম্ভাবনা জাগাল দক্ষিণ আফ্রিকা। মোহাম্মদ নেওয়াজকে আউট করার পর প্রোটিয়ারা ম্যাচটা আরও জমিয়ে তুলল।
তবে শেষ পর্যন্ত পারল না। ফয়সালাবাদে ১৭ বছর পর আন্তজার্তিক ক্রিকেট ফেরার দিনে সহজ ম্যাচ কঠিন বানিয়ে জিতল পাকিস্তান। ড্রেসিংরুমের সবাই ফেললেন স্বস্তির নিশ্বাস। শহরটির ক্রিকেটপ্রেমীরা হাসিমুখেই বাড়ির পথে যাত্রা করলেন।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তান লক্ষ্যে পৌঁছাল ২ উইকেট আর ২ বল হাতে রেখে। এ জয়ে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১–০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকেরা।
এ ম্যাচ দিয়েই পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছে শাহিন আফ্রিদির। দলকে জিতিয়েই তিনি মাঠ ছাড়লেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরদক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৯.
পাকিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৬৪/৮ (সালমান ৬২, রিজওয়ান ৫৫, ফখর ৪৫, আইয়ুব ৩৯; বশ ২/৩২, এনগিডি ২/৪৬, ফেরেইরা ২/৫৩)।
ফল: পাকিস্তান ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সালমান আলী আগা।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ১–০ তে এগিয়ে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর: রানে মুশফিক, উইকেটে সাকিব ও আরও যাঁরা সেরা
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তি হলো আজ। ২০২০ সালের এই দিনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। ২৫ বছরের পথযাত্রায় টেস্টে বাংলাদেশের পথচলা কেমন ছিল। আর সেই পথচলায় পরিসংখ্যানের আলোয় সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেনই বা কারা। গ্রাফিকস: মো. আসাদ আলীএকনজরে টেস্টে বাংলাদেশ
১৫৪ টেস্টে বাংলাদেশের জয় ২৩টি। এই ২৩ জয়ের তিনটি বাংলাদেশ পেয়েছে ইনিংস ব্যবধানে। সবচেয়ে বড় জয়টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
টেস্টে বাংলাদেশের ১১২ হারের ৪৭টিই ইনিংস ব্যবধানে। সবচেয়ে বড় জয়ের মতো সবচেয়ে বড় হারটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশে কেউ চাইলেও বিরাট কোহলি হতে পারবে না ৫ ঘণ্টা আগেটেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই ৪০০ করেছিল বাংলাদেশ। তবে ৫০০–র দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১২ সাল পর্যন্ত। মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ৫০০ করে বাংলাদেশ। চার মাস পরেই ২০১৩ সালের মার্চে ৬০০–র দেখাও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করে ৬৩৮ রান। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিসং সেটিই। এরপর আরও ১০ বার ৫০০ ছুঁলেও আর ৬০০ ছোঁয়া হয়নি।
১০০ রানের নিচে অলআউট হতে কেমন লাগে সেই অভিজ্ঞতা প্রথম টেস্টেই হয়েছিল বাংলাদেশের। অভিষেকের প্রথম ইনিংসে ৪০০ করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ৯১ রানে। এরপর আরও ১২ বার টেস্টে ১০০ রানে নিচে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এর একটিই ৫০ রানের কমে, ২০১৮ সালে অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩।
আরও পড়ুনবাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট খেলা সেই ১১ জন এখন কে কোথায়১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৯৮টি টেস্ট খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। সবকিছু ঠিক থাকলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেই ১০০ টেস্টের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন সাবেক অধিনায়ক।
সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার মতো টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টসও করেছেন মুশফিকুর রহিম। ৩৪ টেস্টে অধিনায়কত্ব করা মুশফিকের নেতৃত্বেই সবচেয়ে বেশি টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ—৭টি।
আরও পড়ুন‘আমি দলেই ঢুকতে পারি কি না, এমন একটা অনিশ্চয়তা ছিল’ ৮ ঘণ্টা আগেসবচেয়ে বেশি খেলার মুশফিকুর রহিমই টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন। একমাত্র তাঁরই ৬ হাজার রান আছে। ৩৮.১২ গড়ে ৬৩২৮ রান করা মুশফিকের সেঞ্চুরি ১২টি, এর তিনটি আবার ডাবল সেঞ্চুরি।
সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডের মতো ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসও মুশফিকুর রহিমের। ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দেওয়া মুশফিক ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন রেকর্ড ২১৯ রানের ইনিংস।
টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটিতেও আছেন মুশফিকুর রহিম। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৩৫৯ রান যোগ করেন মুশফিক।
টেস্টে বোলিংয়ে বাংলাদেশের এক নম্বর সাকিব আল হাসান। ৭১ টেস্টে ২৪৬ উইকেট তাঁর। আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল আর ১০ উইকেট পেলেই ছাড়িয়ে যাবেন সাকিবকে। এ দুজনের বাইরে ২০০ উইকেট আছে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের।
টেস্টে ইনিংস–সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটা ২০১৪ সাল থেকেই তাইজুল ইসলামের। মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৯ রানে ৮ উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানের রেকর্ড ভেঙেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
টেস্টে এক ম্যাচে বাংলাদেশের কোনো বোলার সর্বোচ্চ ১২ উইকেট পেয়েছেন তিনবার, দুবারই মেহেদী হাসান মিরাজ। সেরা ১১৭ রানে ১২ উইকেট, ২০১৮ সালে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টেস্টে আটবার বাংলাদেশের বোলাররা ম্যাচে ১০ বা এর বেশি উইকেট পেয়েছেন।
আরও পড়ুনটানা আট বলে ছক্কা মারলেন আকাশ কুমার, গড়লেন দ্রুততম ফিফটির বিশ্বরেকর্ড০৯ নভেম্বর ২০২৫সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড জমেছে বেশ। ৪২ ক্যাচ নিয়ে সবার ওপরে মুমিনুল হক, ৪১ ক্যাচ নিয়েই এরপরই আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
উইকেটকিপার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল লিটন দাসের—১১৪টি। ৯৯টি ক্যাচ নেওয়ার লিটন স্টাম্পিং করেছেন ১৫টি।