আলুর দামে ধস, সরকারি দর ২২, কৃষক পান ৫ টাকা
Published: 20th, September 2025 GMT
আলুর দামে ধস নামায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন রংপুরের তারাগঞ্জে কৃষকেরা। হিমাগার পর্যায়ে উৎপাদন খরচ ২৯ থেকে ৩০ টাকা হলেও আলু বিক্রি করে কৃষকেরা হাতে পাচ্ছেন মাত্র ৫ টাকা। অথচ ২৭ আগস্ট হিমাগার পর্যায়ে আলুর কেজি ২২ টাকা বেঁধে দেয় সরকার। কিন্তু এ দামে হিমাগারে কেউ আলু কিনছেন না।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার মৌসুমে তারাগঞ্জে ৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। তিনটি হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে ১৬ হাজার মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত হিমাগার থেকে আলু বের হয়েছে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন। অথচ গত বছর এ সময় তিন ভাগের দুই ভাগ আলু বের করা হয়েছিল।
ইকরচালীর বড় আলুচাষি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘হিমাগারে জায়গা না পেয়ে গোডাউনে, ঘরে আলু সংরক্ষণ করেছি। তা পচে যাওয়ায় ট্রাকে ট্রাকে সড়কের ধারে ফেলেছি। হিমাগারে যে আলু আছে, দাম না থাকলে ছেড়ে আসতে হবে।’
চাষিদের হিসাব অনুযায়ী, মাঠপর্যায়ে আলু উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা। বস্তা, গাড়িভাড়া, শ্রমিকের খরচ, হিমাগারে সংরক্ষণ খরচসহ এ খরচ দাঁড়াচ্ছে কেজিপ্রতি ২৯ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ১২ টাকা। হিমাগারে প্রতি কেজি আলুর দাম ১২ টাকা হলেও হিমাগারভাড়া বাদ দিয়ে কৃষকের হাতে আসছে মাত্র ৫ টাকার কিছু বেশি। ফলে সরকারি ক্রয় দর ২২ টাকা আর বাস্তবে কৃষকের প্রাপ্তি ৫ টাকার মধ্যে বিশাল বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এতে হিমাগার পর্যায়ে কেজিতে কৃষকের ১৮ টাকা লোকসান থাকছে।
গতকাল শুক্রবার তারাগঞ্জের তিনটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকারভেদে প্রতি কেজি আলু সাড়ে ১০ থেকে ১২ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা না থাকায় তেমন কর্মব্যস্ততা দেখা যায়নি। হিমাগারের শেডগুলো অধিকাংশ ফাঁকা। সিনহা হিমাগারে কথা হয় বামনদীঘি গ্রামের কৃষক সোনা মিয়ার সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তিন একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। জমিতে তাঁর উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি ২০ টাকা পড়েছে। মৌসুমের শুরুতে ১৪ টাকা কেজি হওয়ায় লোকসানের ভয়ে আলু হিমাগারে রেখেছেন। সরকার ২২ টাকা দাম বেঁধে দিলেও, সেই দামে কেউ আলু নেন না।
তারাগঞ্জের প্রামাণিকপাড়ার কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২০ টাকা, বস্তা, গাড়িভাড়া, হিমাগারভাড়াসহ ৩০ টাকা। অথচ বাজারে পাচ্ছি ১২ টাকা। হিমাগারের খরচ বাদ দিয়ে হাতে আসে ৫ টাকা। এভাবে লোকসান হলে কৃষকেরা আলু চাষ ছেড়ে তামাক চাষে ঝুঁকবেন।’
সিনহা হিমাগারের ব্যবস্থাপক দুলাল হোসেন বলেন, ‘হিমাগারের আলু সংরক্ষিত আছে১ লাখ ৫১ হাজার বস্তা। এই সময়ে গত বছর তিন ভাগের বেশি আলু বের হয়েছিল। এবার আজ পর্যন্ত মাত্র ২৮ হাজার বস্তা আলু বের হয়েছে। আলুর অবস্থা খুবই ভয়াবহ।’
তারাগঞ্জের এন এম হিমাগারের ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বরে মধ্যে হিমাগারের সব আলু বের হয়ে যায়। কিন্তু এবার যে পরিস্থিতি, তাতে মনে হয় না আলু সব বের হবে। ২ লাখ ৬০ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা থাকলেও এ পর্যন্ত আলু বের হয়েছে মাত্র ৪৫ হাজার বস্তা।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী রায় বলেন, সরকারিভাবে রংপুরে আলু কেনা হলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন। আগামী মৌসুমে আলুর চাষ কমবে। কৃষকেরা যাতে পরিকল্পিতভাবে আলু চাষ করেন, তা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন, যাতে কৃষকেরা লোকসানে না পড়েন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র বস ত আল র দ ম ব র হয় ছ ১২ ট ক স রক ষ ২২ ট ক পর য য় উৎপ দ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খাদ্য অধিদপ্তরের ৩য় পর্যায়ে বাছাই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
খাদ্য অধিদপ্তরের ২৫ ক্যাটাগরির ১ হাজার ৭৯১টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে তৃতীয় পর্যায়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (গ্রেড-১৬) পদের বাছাই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদের বাছাই পরীক্ষা (MCQ পদ্ধতিতে) ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষার সময়: সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
পরীক্ষার স্থান: দেশের আটটি বিভাগীয় জেলা শহরে এই পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুনএ সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর) সেরা সরকারি চাকরি, পদ ৪ হাজার১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনকারী প্রার্থীরা ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০টা থেকে ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারছেন। প্রবেশপত্রের রঙিন কপি প্রিন্ট করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। প্রবেশপত্র ডাউনলোড–সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে অফিস চলাকালীন ০১৭১০৮৮২৯৫৬ হটলাইনে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঅক্সফোর্ড–কেমব্রিজ নেই সেরা তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৩২ বছরে প্রথম ঘটনা১ ঘণ্টা আগে