চাকরি ফেরত পাওয়ার আশায় এক বছর ধরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় এক কারখানার ফটকে অবস্থান করছেন নজরুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কারখানার সামনে অপেক্ষা করলেও মিলছে না চাকরি ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা। পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার সুরিলা গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, নজরুল ইসলাম গাজীপুরের সফিপুর রঙ্গারটেক এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সফিপুর পশ্চিম পাড়ার মাহমুদ ডেনিম কারখানার উইভিং সেকশনে উৎপাদন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতেন তিনি। প্রায় এক বছর আগে কারখানায় ঝামেলা সৃষ্টি হলে অনেক শ্রমিকের সঙ্গে নজরুল ইসলামেরও চাকরি চলে যায়। বার বার কারখানায় যোগাযোগ করলেও তাকে আর চাকরিতে ফেরত নেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই তিনি চাকরি ফিরে পেতে প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে কারখানার সামনে একটি আমগাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকেন। দুপুরে এক ঘণ্টার জন্য বাড়িতে যান। দুপুরের খাবার খেয়ে আবার কারখানার সামনে অবস্থান নেন। কারখানা যখন ছুটি হয়, তখন আবার বাড়িতে ফিরে যান। 

সম্প্রতি নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, এক বছর আগে থেকে বিনা কারণে আমাকে কারখানায় যেতে দিচ্ছে না। আমার চাকরিও যায়নি। কেন আমাকে তারা কারখানায় যেতে দিচ্ছে না? এর প্রতিবাদে আমি অবস্থান ধর্মঘট পালন করছি। যতদিন চাকরিতে যোগ দিতে দেবে না, ততদিন এভাবেই প্রতিবাদ জানাব।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, নজরুল ইসলাম আগে মাহমুদ ডেনিম কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য প্রতিদিন কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। 

সফিপুর বাজারের ব্যবসায়ী ফিরোজ আল মামুন বলেন, এক বছর ধরে তিনি চাকরি ফিরে পেতে এভাবেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। তাকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে মাহমুদ ডেনিম কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো কথা না বলার নির্দেশনা আছে৷ 

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নজর ল ইসল ম এক বছর

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসুতে শিবিরের ইশতেহার, ১২ মাসের ২৪ প্রস্তাবনা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামি ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। প্রতি মাসে দুইটি করে দফা বাস্তবায়ন করতে চায় প্যানেলটি।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।

আরো পড়ুন:

রাকসুতে দুঃখ ঘোচাতে চায় ছাত্রদল, জয় ধরে রাখতে মরিয়া শিবির

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: পোষ্য কোটা নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক হাতাহাতি

তাদের ইশতেহারের বিষয় গুলো হলো- জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন, মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অধিকার সংস্কার, শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বারেপ, লাইব্রেরি ও রিডিং রুম সম্প্রসারণ ও সংস্কার, শিক্ষা কারিকুলাম আন্তর্জাতিকীকরণ, প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন, চিকিৎসা কেন্দ্রর আধুনিকীকরণ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা, নিরাপদ ক্যাম্পস, পরিবহন ব্যবস্থা সহজীকরণ, নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা, টিচার্স ইভ্যালুয়েশন, তথ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, অন ক্যাম্পস জব, পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষা, সংস্কৃতির বৈচিত্র্যায়ন, হাইজেনিক স্যানিটাইজেশন, ক্রীড়া উন্নয়ন, সাহিত্য, প্রকাশনা ও সামাজিক সংগঠন, ক্লিন অ্যান্ড গ্রীন ক্যাম্পাস এবং অপরাধ দমন।

এছাড়া ইশতেহারে সাতটি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ বলে জোর দিয়েছে প্যানেলটি। সেগুলো হলো, শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ, আবাসন সংকট নিরসন, মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ক্যাম্পাস, তথ্যসেবা ও আধুনিকায়ন, সকল অংশীজনের মাঝে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি, সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ।

অন্যদিকে সাতটি বিষয়কে ‘না’ বলেছে এই প্যানেল। সেগুলো হলো- ৫০ টাকা হল ফি, হল দখল ও সিট-বাণিজ্য, ট্যাগিং ও ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি, ফ্লাটশেমিং-সাইবার বুলিং ও শারীরিক নির্যাতন, ধর্মীয় বিদ্বেষ, মাদক ও ছিনতাই, সন্ত্রাস ও সহিংসতা।

এ সময় সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “আমরা যেই ইশতেহারটা দিয়েছি তার একটি চার্ট আমরা ক্যাম্পাসে টানিয়ে দিব। প্রতি মাসে যেই দুইটা ইশতেহার পূরণ করা হবে, সেখানে আমরা টিক চিহ্ন দিয়ে দিব। আমরা কথা দিয়ে কথা রাখতে চাই। এটি আকাশ কুসুম কোনো প্রস্তাবনা নয় । আমরা এই সংস্কার বাস্তবায়ন করবো। এছাড়া এর জবাবদিহিতার জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকবো।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ