ঝালকাঠিতে আইনজীবীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পাশে পড়েছিল চিরকুট
Published: 21st, September 2025 GMT
ঝালকাঠিতে ভাড়া বাসা থেকে এক আইনজীবীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে শহরের চাঁদকাঠি এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যাতে আত্মহত্যার কথা লেখা আছে।
মৃত শামিম হোসেন (৩৬) ঝালকাঠির আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন। তিনি শহরের চাঁদকাঠি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দুধালিয়া এলাকার মোজাম্মেল হক মোল্লার ছেলে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, একজন আইনজীবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। তবে সবকিছু তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।
ওই চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমার শরীরে যে রোগ বাসা বেঁধেছে, তাতে আমার মৃত্যু অনিবার্য। শরীরের কষ্ট, মানসিক চাপ আমি আর নিতে পারছি না। তাই সবকিছু ভেবেচিন্তে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি আমার ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি এবং অনুতপ্ত। আমাকে ভুল বুঝবেন না, পারলে ক্ষমা করে দিবেন।’
এদিকে শামিম হোসেনের মৃত্যুতে আজ রোববার জেলা আইনজীবী সমিতি আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সদস্যদের নোটিশ দিয়েছে। তবে বিচারপ্রার্থীদের নিয়মিত হাজিরা কার্যক্রম চলবে বলে আইনজীবী সমিতির নেতারা জানিয়েছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হাসান বলেন, ‘একজন আইনজীবীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে আমরা শোক প্রকাশ করছি। তাঁর সম্মানে এক দিনের জন্য আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল শ উদ ধ র আইনজ ব র ঝ লক ঠ চ রক ট
এছাড়াও পড়ুন:
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডের সেলিম প্রধান রিমান্ডে
রাজধানীর গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ জানান, গত ২৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তাঁর উপস্থিতিতে শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছিলেন। শুনানির জন্য আজ সেলিম প্রধানকে আদালতে আনা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, আগের সরকারের সময় সেলিম প্রধানকে নিয়ে অভিযোগ ছিল তিনি তারেক রহমানের কাছে টাকা পাঠাতেন এবং বর্তমান মামলাতেও একই রকম অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা যৌক্তিক নয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জিজ্ঞেস করেন, ‘তারেক রহমানকে কে টাকা দিয়েছেন?’ উত্তরে আসামিপক্ষের আইনজীবী একটি সংবাদ প্রতিবেদনের কপি আদালতে দেখান। এ সময় আদালতের ভেতর হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে সেলিম প্রধান বলেন, ২০১৯ সালের একটি মামলায় তিনি জামিন না পেয়ে কারাভোগ করেছেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি গাজী গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের আমলে তাঁর ব্যক্তিগত বাড়িতে হামলা হয়েছে। তিনি জোসেফ হারিছের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন।
শুনানি শেষে আদালত সেলিম প্রধানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বারিধারার নেক্সাস ক্যাফে প্লেস নামক একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
এর গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল সকাল ৭টায় গুলশান-১ এর জব্বার টাওয়ারের পাশের রাস্তায় আসামিসহ ৩০ থেকে ৩৫ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সমবেত হন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সংগঠনের অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতাদের নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। সেখানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে।