পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে আরও চারজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আজ রোববার যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁরা হলেন ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের অপারেটর শেখ শমশের আলী, সহকারী নির্বাহী সদস্য হিমেল চন্দ্র দাস এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।

আগামী ৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪–এর বিচারক মো.

রবিউল আলম। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।

এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

এই ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন। অন্য তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম।

মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।

দুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ষ য গ রহণ পর ব র র ক সদস য র জউক র গণপ র ত ত মন ত মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তি রক্ষা মিশনের মাধ্যমে বিশ্বশান্তিতে অবদান রাখছে বাংলাদেশ

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে অবদান রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বশান্তিতে পরোক্ষভাবে অবদান রাখছে। শুরু থেকেই বিভিন্ন বৈশ্বিক মিশনে বাংলাদেশের চিকিৎসক, প্রকৌশলীরাও অংশ নিয়েছেন। এটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের অবদানের একটি দুর্দান্ত স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।

‘গ্লোবাল পিস অ্যান্ড হারমনি: বাংলাদেশি’স রোল ইন ইউএন পিসকিপিং’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেছেন বক্তারা। বিশ্বশান্তি দিবস উপলক্ষে আজ রোববার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সিন্ডিকেট হলে এ সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস)।

সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিংয়ের (বিআইপিএসওটি) কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল হুসেন মুহাম্মদ মসিহুর রহমান। তিনি বলেন, সংঘাত কখনো কখনো আদর্শিক স্বার্থ থেকে আসে, কখনো এটি ঔপনিবেশিক স্বার্থ থেকে আসে। যখন এটি ঘটে, তখন অভ্যন্তরীণ সংঘাত, মৃত্যু, সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। এগুলো বন্ধ করার জন্য শেষ পর্যন্ত একটি মিশন যায় এবং সহায়তা প্রদান করে, যাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে থাকা বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরে মেজর জেনারেল মসিহুর রহমান বলেন, ‘এটি আমাদের জাতীয় ভাবমূর্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। কিছু ক্ষেত্রে আমরা অনেক বৈশ্বিক ফোরামে নেতৃত্ব দিই।’

বিশ্বশান্তি দিবসের সেমিনারে অংশ নেওয়া অতিথিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ