প্লট দুর্নীতি: রেহানা, টিউলিপদের বিরুদ্ধে আরও চারজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন
Published: 21st, September 2025 GMT
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে আরও চারজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আজ রোববার যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁরা হলেন ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের অপারেটর শেখ শমশের আলী, সহকারী নির্বাহী সদস্য হিমেল চন্দ্র দাস এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।
আগামী ৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪–এর বিচারক মো.
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।
এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।
এই ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন। অন্য তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম।
মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
দুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ষ য গ রহণ পর ব র র ক সদস য র জউক র গণপ র ত ত মন ত মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে জমি দখলের অভিযোগ, ৯৯৯-ফোন করে রক্ষা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক ব্যবসায়ীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, এ সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রাচীর ভেঙে গাছপালা কেটে ফেলার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের বাড়ির মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
গত মঙ্গলবার উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঁইগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঁইগাছা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে ব্যবসায়ী এমরানের সঙ্গে একই গ্রামের নওশের আলী ও তাঁর ভাই এবাদত হোসেনের মধ্যে সাড়ে ছয় শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জেরে থানা ও আদালতে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলাও চলমান আছে। সম্প্রতি একটি মামলায় এমরানের পক্ষে রায় হয়। এরপর দখল নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত মঙ্গলবার নওশের ও এবাদতের নেতৃত্বে ১২-১৩ জনের একটি দল দেশি অস্ত্র নিয়ে এমরানের বাড়ির পাশে ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে যান। একপর্যায়ে সেখানে থাকা ইটের প্রাচীর ভেঙে লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গাছ কেটে ফেলে। এ সময় হামলাকারীরা বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে এমরানের পরিবারের সদস্যদের বাড়ির মধ্যে অবরুদ্ধ করে জমিটি দখলে নেয়।
এমরানের পরিবার জানায়, অবরুদ্ধ অবস্থায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। তাঁদের অভিযোগ, বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর একটি পক্ষ দলবল নিয়ে জমিটি দখল করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামাল হোসেন বলেন, তিনি এ ধরনের ঘটনার খবর পেয়েছেন। তবে এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।