খুলনা মহানগরীর বাস্তুহারা এলাকায় মাদক কারবারি, চাঁদাবাজি, জমি দখলের অভিযোগে খালিশপুর থানার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভুট্টোকে (৫৩) গ্রেপ্তার করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন (কেএমপি) গোয়েন্দা পুলিশ। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর তৈমুর ইসলামের নেতৃত্বে বাস্তুহারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

আরো পড়ুন:

গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্রেই: মঈন

পাথর চুরির ঘটনায় জামায়াত নেতার নামও এসেছে : রিজভী 

গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর তৈমুর ইসলাম বলেন, ‘‘বাস্তুহারা এলাকায় মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণের অভিযোগের ভিত্তিতে গোলাম মোস্তফা ভুট্টোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দাঙ্গাহাঙ্গামা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে খালিশপুর থানায় সাতটি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এ সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

ইন্সপেক্টর তৈমুর ইসলাম জানান, রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ রাকিবুল হাসানের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কেএমপি ডিবি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ভুট্টো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। বাস্তুহারা এলাকার মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও কিশোর গ্যাং পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে পূজা ফ্রন্টের নেতারা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নেতারা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে তারা এ পরিদর্শনে আসেন।

এসময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা তাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। নেতারা তাদের সমস্ত অভিযোগ অত্যান্ত মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ^াস দেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর আমরা অনুরোধ করতে করতে অবশেষে গেট খুলে আমাদের পূজার করতে দেয়। পূজা শেষ গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা আর এসে ধূপ-ধোয়া কিছুই করতে পারি না। এভাবেই থাকে। এ মন্দিরের জায়গাটাও আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তারা বলে জায়গা বুঝি দেবে কিন্তু আর দেয় না।

তারা বলে, ডিসি এসপি সহ সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিক। আমরা আমাদের মত যাতে কোন বাধা বিঘ্ন ছাড়াই পূজা-অর্চনা করতে পারি।

সব কথা শুনে পরিদর্শনে আসা মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে আজ আমরা এখানে এসেছি। আমরা সব সময় জেনেছি যে, এটা আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ। আমরা ঈদে যেমন আনন্দ করি, তেমনি পূজার মধ্যেও মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের সহযোগীতা করে। কিন্তু এখানে এসে কিছুটা ভিন্নতা লাগলো।

শুনলাম প্রতিবছরই নাকি এখানে পূজা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এটা ঠিক নয়। বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যে এটা কোনভাবেই শোভা পায় না। আমরা পূজা নিয়ে আর কোন যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই সকলের সহযোগীতায় এখানে একটি উৎসমুখর পরিবেশে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হোক।

আমি এ জন্য নীট কনর্সানের কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে জয়নাল ও জাহাঙ্গীর ভাইকে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার আহ্বান জানাবো। তারা যেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্দির নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে তার সমাধান করে এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে শান্তি ছড়িয়ে দেয়।

জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাস বলেন, আসলে এখানে যা দেখলাম, যা শুনলাম তা আমাদের কল্পনার মধ্যেও ছিলো না। সত্যিই প্রায় ৮৩ বছরের ঐহিত্যবাহী একটি মন্দিরকে এভাবে অবহেলিত দেখতে পেয়ে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ভাবছি, এটাই কি আমাদের নতুন স্বাধীনতা! যেখানে হিন্দু সম্প্রদায় এখনও তাদের পূজা-অর্চনা করতে গিয়ে বাধা-বিঘ্নের শিকার হচ্ছে।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে হলে এটা মেনে নিতাম। কিন্তু ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা আনলো প্রকৃত অর্থে সেই স্বাধীনতা কি সর্বক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে, তাহলে আজও কেন এমন দৃশ্য দেখতে হচ্ছে, আজও কেন পূজা করার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের চোঁখের কোণে জল জ¦লমল করবে? প্রশাসনের কাছে আমরা এর উত্তর চাই।

তিনি বলেন, লক্ষীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপটি শুধু সিদ্ধিরগঞ্জেরই নয়, এটা গোটা নারায়ণগঞ্জের একটি ঐতিহ্য। এর সাথে মিশে আছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৮৩ বছরের স্মৃতি। তাই জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার জন্য।

সকল বাধা বিপত্তির শিকর উপড়ে ফেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা যাতে তার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাসহ সকল পূজা বাধাহীনভাবে করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট অনুরোধ করছি।

পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে। তাই আমি আমার বিএনপি ভাইদেরও এ সমস্যা সমাধানে পাশে থাকার অনুরোধ করছি।

স্থানীয় ১০ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: জামাল উদ্দিন প্রধান বলেন, আমরাও চাই এ সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হোক। এ মন্দির নিয়ে প্রতিবছরই যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় সেই দ্বন্দ্বের সমাধান জরুরী। এক পক্ষ বলছে, তাদের জায়গা দ্রুত বুঝিয়ে দেয়া হবে। অন্যপক্ষ বলছে, এখনও জায়গা বুঝে পাচ্ছি না। তাই বলছি, পূজাটা শেষ হোক এরপর সবাই বসে এর স্থায়ী সমাধানের বন্দবস্ত করার ব্যবস্থা করা হোক। যাতে এটা নিয়ে প্রতিবছর আর কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, লক্ষীনারায়ণ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিন্টু চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ^াস, সহ সভাপতি বিদ্যুৎ দে, সৌরভ বারৈই, উপদেষ্টা বাবু লাল, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম শফিক, ১০নং যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: মঞ্জুর হোসেন, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক দীপ্তি গাজী, সাহাবুদ্দিন, শেকান্তর, হারুন, নাজমুল, শাহীন, সজল প্রমূখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ