আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বেহালা। পড়ে আছে একতারার ভাঙা অংশ। ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে হারমোনিয়ামসহ বাদ্যযন্ত্র ও গানের জিনিসপত্র। সরাজ, মন্দিরা, জিপসিসহ বাদ্যযন্ত্রগুলোতেই সুর উঠত। গাওয়া হতো সামা কাওয়ালি।

কিন্তু ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে ময়মনসিংহ নগরের ‘আত্তায়ে রাসুল চার তরিকা খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামের ওই খানকায়। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ নগরের সুতিয়াখালী বাজারে প্রায় ১৭ বছর আগে সরকারি জমিতে ওই খানকা গড়ে তোলেন স্থানীয় উসমান গণি ফকির। গতকাল শনিবার দুপুরে খানকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা স্থাপনা দেখতে ভিড় করেছেন অনেকে। টিনের খুপরিঘরের চারপাশ কুপিয়ে তছনছ করা হয়েছে। সিমেন্টের পিলারগুলো ভাঙা। পাশেই পড়ে আছে পুড়িয়ে দেওয়া গানের জিনিসপত্র। একটি সাউন্ড বক্স বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। মাইকগুলো ভাঙা। থালাবাসন, দানবাক্সসহ সব জিনিসপত্রই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনময়মনসিংহে প্রতি সপ্তাহে কাওয়ালি গানের আসর বসা খানকা শরিফে ভাঙচুর১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খানকা শরিফের খাদেম উসমান গণি ফকির বলেন, ১৭ বছর ৯ মাস ধরে তাঁকে কেউ বাধা দেয়নি। হঠাৎ শুক্রবার বেলা ১টা ৪০ মিনিটে কিছু দুর্বৃত্ত এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে তাঁর ১০–১২ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট করেছে। এখানে প্রতি শুক্রবার অনেক লোক এসে মিলাদ পড়ে। জিকির শেষে সামা কাওয়ালি গান হয়। তিনি শুনেছেন, মসজিদে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়। তিনি বলেন, ‘সরাজ, বেহালা, হারমোনিয়ামসহ গানের সব জিনিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কী কারণে হামলা করেছে, বুঝতে পারছি না। এখানে কোনো অসামাজিক কাজ হতো না। বাজারের ইজারাদারদেরও কোনো অভিযোগ ছিল না। মসজিদ কমিটিও কোনো দিন কিছু বলেনি। আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থাতেই আছি।’

মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা

সুতিয়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও খানকা শরিফের দূরত্ব ৫০ গজের মতো। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইমাম মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা তুলতে মাইকে কথা বলেন। তখন ইমামের কাছ থেকে মাইক নিয়ে খানকা ভাঙার ঘোষণা দেন স্থানীয় রুবেল মিয়ার ছেলে মো.

তানভীর (১৯)।

ময়মনসিংহ নগরের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আত্তায়ে রাসুল চার তরিকা খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামের খানকায় ভাঙা জিনিসপত্র ঘুরে দেখেন খাদেম উসমান গণি ফকির। গতকাল শনিবার দুপুরে তোলা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ন সপত র শ ক রব র

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে খানকা শরিফে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আসামি ৬০

ময়মনসিংহ নগরের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকা ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে একদল লোক সেখানে ভাঙচুর চালায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের সুতিয়াখালী বাজারে প্রায় ১৭ বছর আগে স্থানীয় উসমান গণি ফকির সরকারি জমিতে একটি ঘর তুলে ওই খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তিনি ভক্তদের নিয়ে আড্ডা দিতেন। স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে এটি ‘গণি ফকিরের আস্তানা’ নামে পরিচিত। প্রতি শুক্রবার রাতে সেখানে সামা-কাওয়ালি গানের আয়োজন করা হতো। সম্প্রতি একদল মুসল্লি এই অনুষ্ঠানকে ‘অসামাজিক’ আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

সুতিয়াখালী বাজারে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকা ভাঙচুর করে কিছু মানুষ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অভিযানের পর ধর্মঘটে অ্যাম্বুলেন্সচালকেরা, ময়মনসিংহ মেডিকেলের রোগীদের দুর্ভোগ
  • রবিবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পা‌রে
  • ময়মনসিংহে খানকা শরিফে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আসামি ৬০
  • ময়মনসিংহে প্রতি সপ্তাহে কাওয়ালি গানের আসর বসা খানকা শরিফে ভাঙচুর
  • ময়মনসিংহে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ
  • আজ ‘ছিটেফোঁটা’ বৃষ্টির সম্ভাবনা, তবে লঘুচাপ হতে পারে আবার