দৌড় দৌড়! হুড়মুড়িয়ে বাসে উঠতেই বাস ছুটে চলে কৃষ্ণসাগরের পাড় ঘেঁষে সিরিয়াস সম্মেলন কেন্দ্রের পথে। উজ্জ্বল সূর্যালোক আর কৃষ্ণসাগরের মাতাল করা হাওয়া স্বাগত জানায় ছুটে চলা মানুষদের। বলছিলাম, ‘চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ২০২৫’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলের অংশগ্রহণের কথা।

ভিসা সঠিক সময়ে পাওয়া যাবে কি না, সে অনিশ্চয়তা থেকে অগ্রিম টিকিট কাটা হয়নি। ফলে শেষ মুহূর্তে ১৩ ঘণ্টার ট্রানজিট কবুল করে ৩৪ ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে রাশিয়ার সোচি শহরে পৌঁছাই।

ঘড়িতে স্থানীয় সময় শনিবার রাত প্রায় ১২টা। আয়োজকদের খোঁজ না পেয়ে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা হোটেলে পৌঁছে যাই। ততক্ষণে হোটেলের রেস্তোরাঁ বন্ধ। রাতটা বুঝি পানি খেয়েই পার করতে হবে!

হোটেলের প্রাথমিক কাজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কক্ষে যাওয়ার পথে হোটেল ব্যবস্থাপক প্রত্যেকের হাতে খাবারের ব্যাগ ধরিয়ে দেন। এর চেয়ে ভালো কিছু হতেই পারে না! কক্ষে ফিরে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমাতে ঘুমাতে ঘড়ি জানান দেয় যে রাত দুইটা প্রায়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রোববার উদ্বোধন হয় চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় রাশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী সের্গেই খারসভ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলকে এক হয়ে বিজ্ঞানের কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের পরিচালক (অ্যাস্ট্রোনমি) অলেয়াগুখ মালকভ, সিরিয়াস শিক্ষাকেন্দ্রের ডেপুটি প্রধান আন্তন গুসেভসহ আরও কয়েকজন। আনিসিয়া গরোবেতস ইয়োহান জেবাস্টিয়ান বাখের সিম্ফনি পরিবেশন আয়োজনকে স্বপ্নময় করে তোলে।

সশরীর ও অনলাইন মিলিয়ে ২০টি দেশের ৯০ জন প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে শুরু হলো ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রনমি অলিম্পিয়াডের চতুর্থ আসর। ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দল এতে অংশ নিচ্ছে।

ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের জন্য নির্বাচিত ছয় সদস্যের মধ্যে আছে ঢাকার হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘এ’ লেভেল শিক্ষার্থী সপ্তর্ষি রহমান, ঢাকা আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো.

রদিত রাইয়ান, ঢাকা আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শোহিনী শম্ভার কংকা, খুলনার পুলিশ লাইন মাধ্যমিক স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মোখদুম আমিন ফাহিম, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন জিসান ও সাউথ হেরাল্ড ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজর ‘ও’ লেভেল শিক্ষার্থী সায়ন্তন রায়। এ ছাড়া দলনেতা হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন।

প্রতিযোগিতাটিকে চারটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। তাত্ত্বিক পর্ব ও তথ্য বিশ্লেষণ পর্ব দুটি পাঁচ ঘণ্টা করে দুদিনে মোট ১০ ঘণ্টা অনুষ্ঠিত হবে। আর আকাশ পর্যবেক্ষণ ও সাধারণ জ্ঞানের পর্ব দুটি দুই ঘণ্টা করে দুদিনে মোট চার ঘণ্টা হবে।

ফলাফল ঘোষণা এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে আয়োজনটি শেষ হবে ২৭ সেপ্টেম্বর।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অল ম প য় ড অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সের ব্যাটিং ঝলক আর বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়

ডাবলিনের মালাহাইড ভিলেজে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের নায়ক জর্ডান কক্স করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। সঙ্গে লিয়াম ডসন, জেমি ওভারটন ও আদিল রশিদের বোলিং জাদুতেই ধরা খেল স্বাগতিকরা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের মূল ভরসা ছিলেন গ্যারেথ ডেলানি। শেষদিকে তার ঝড়ো ২৯ বলে অপরাজিত ৪৮ রানে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় দল। ইনিংসে ছিল ৪টি চার আর ৩টি বিশাল ছক্কা। ওপেনার রস অ্যাডায়ার ২৩ বলে ৩৩ এবং তিন নম্বরে নামা হ্যারি টেক্টর ২৭ বলে ২৮ রান যোগ করেন। তবে অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে দ্রুত ফেরান ডসন। পরে টেক্টরকেও আউট করে ২ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেটের বোলিং ফিগার দাঁড় করান তিনি।

আরো পড়ুন:

ভারতকে ১৭২ রানের টার্গেট ছুড়ল পাকিস্তান

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ভারত

জেমি ওভারটন তার চার ওভারে লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে আয়ারল্যান্ডের মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন। সবচেয়ে কার্যকরী ছিলেন লেগস্পিনার আদিল রশিদ। ইনিংসের শেষভাগে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২৯ রানে ৩ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই সিনিয়র ব্যাটার জস বাটলারকে শূন্য রানে ফেরান ব্যারি ম্যাককার্থি। অধিনায়ক জেকব বেথেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, করেন মাত্র ১৫ রান।

তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাট চালান ফিল সল্ট। ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংসে দুই চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে গড়েন কক্সের সঙ্গে ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। সেখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। কক্স খেলেন ৩৭ বলে ৫৫ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যেখানে ছিল নিয়ন্ত্রিত শটের ছড়াছড়ি। শেষ পর্যন্ত বেন হোয়াইট তাকে বোল্ড করলেও তখন জয় প্রায় নিশ্চিত।

বাকি কাজটা সেরে দেন টম ব্যান্টন ও রেহান আহমেদ। ব্যান্টনের ২৬ বলে অপরাজিত ৩৭ রানে ভর করে ১৭.১ ওভারেই ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ