গাজীপুরে ৭ দফা দাবিতে বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের অবস্থান কর্মসূচি
Published: 8th, October 2025 GMT
গাজীপুরে আত্মকর্মসংস্থান ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিতসহ সাত দফা দাবি তুলে ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। এ সময় তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। এতে গাজীপুর জেলা বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী সংস্থা ও জাতীয় বধির ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অর্ধশতাধিক প্রতিবন্ধী অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে—সংস্থার নামে খাসজমিতে নিজস্ব কার্যালয় নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ, দরিদ্র ও ভবঘুরে সদস্যদের পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তা, বধিরদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীদের জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান, ত্রাণ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ভিজিএফ কার্ড ও জিআর চাল বরাদ্দ, স্থানীয় গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা ও তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান।
গাজীপুর জেলা বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন অগ্রাধিকারের দাব
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অগ্রাধিকার হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’।
পার্বত্য চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান প্ল্যাটফর্মটির নেতারা। এ সময় তারা চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মিলিত বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বানও জানিয়েছেন।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো-চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংলাপ আয়োজন করা এবং কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণা ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর সংবিধানে পরিচয় অস্বীকারের মধ্য দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অধিকার ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সশস্ত্র সংঘাতের অবসানে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি আদিবাসী জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ, ভূমি অধিকার ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনের পথ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ২৮ বছর পরও চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো কার্যত বাস্তবায়ন হয়নি।”
তিনি বলেন, “চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির পুনর্গঠন আশা জাগালেও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিতকরণ এবং টাস্কফোর্সের কার্যক্রম থমকে যাওয়া গভীর উদ্বেগের। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরোক্ষভাবে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগে জটিলতাকেও চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার ফল বলে উল্লেখ করা হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, “২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান দেশের জন্য গৌরবের, যা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার শপথ তৈরি করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ সত্ত্বেও সংস্কার কমিশনগুলোতে আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্ন উপেক্ষিত হয়েছে। ভূমি, কৃষি ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন না করা সরকারের বড় ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা কাটাতে এখনো সময় আছে। এ কারণেই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।”
এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর গঠনমূলক ভূমিকা, জাতীয় সংলাপ এবং সবার অংশগ্রহণে একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরি হলে পাহাড়ে শান্তি ও গণতন্ত্রের পথ সুদৃঢ় হবে আশা প্রকাশ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রশ্নটি কখনোই দেশের মূলধারার গণতান্ত্রিক আলোচনায় যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। বরং দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত থেকেছে।”
তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা কোনো অঞ্চলের নয়। এটি সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।”
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে জাতীয় ইস্যু হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ, জাতীয় সংলাপ এবং নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ