নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে রোহিঙ্গা যুবক আটক
Published: 1st, December 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসে আটক হয়েছেন আজিজ খান নামের এক রোহিঙ্গা যুবক। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের সময় তার পরিচয় গরমিল ধরা পড়লে অফিসের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। তিনি নিজেকে হাফেজ পরিচয় দিয়ে “আব্দুল আজিজ” নাম ব্যবহার করেন। বয়স দেখানো হয় ২৫ বছর, জন্ম তারিখ ২০০০ সালের ১০ জানুয়ারি। বাবার নাম হাজী নজিবুল্লাহ এবং মায়ের নাম শুকরা বেগম উল্লেখ করেন তিনি।
কিন্তু বায়োমেট্রিক স্ক্যানেই বদলে যায় পুরো চিত্র। মিলানোর সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায় তার আসল পরিচয়—তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন; তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী আজিজ খান।
রোহিঙ্গা তথ্য অনুযায়ী তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি, পিতার নাম সালামত খান। তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তার রোহিঙ্গা রেফারেন্স নম্বর—১০৮২০১৮০৪১০০৮১৯৩৫।
জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, বর্তমান ঠিকানা দেখানো হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা গ্রাম। এখান থেকেই তিনি চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দক্ষিণ হাশিমপুরে। আর পাসপোর্টের আবেদনে বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেন সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর এলাকা।
নজিবুল্লাহ ও শুকরা বেগম নামে যাদের বাবা–মায়ের তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তাদের ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের খাজীরপাড়া ও হাশিমপুর এলাকায়। দুজনই চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এনআইডি সংগ্রহ করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, আজিজ খান বেশ কিছুদিন ধরে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যও অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বানানো হয়েছিল। তাদের সন্দেহ—এ ঘটনায় সংগঠিত কোনো দালালচক্র জড়িত।
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন তিনি রোহিঙ্গা। তিনি ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে এনআইডি সংগ্রহ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নিয়মিতভাবেই আবেদনকারীদের সব নথি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করি। আজ যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তিনি ভুয়া এনআইডি ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিতে এসেছিলেন।
বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে তাঁর প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই আমরা তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করি। পাসপোর্ট একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি—এখানে কোনোভাবেই ভুয়া তথ্য গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো বিদেশি নাগরিক ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট নিতে এলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি আবেদন শতভাগ যাচাই নিশ্চিত করতে আমাদের কার্যালয় আরও সতর্কভাবে কাজ করছে। আমরা চাই, শুধুমাত্র সঠিক নাগরিকই যেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট পান।”
আটক আজিজ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন দালালচক্র ও সংশ্লিষ্টদের খুঁজে দেখছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।
উপপরিচালক শামীম আহমেদ আরও বলেন, “বাংলাদেশি পরিচয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ দালালচক্রের খপ্পরে পড়ছে।
ভুয়া জন্মনিবন্ধন, ভুয়া এনআইডি—সবই তৈরি করা হচ্ছে মোটা টাকার বিনিময়ে। এ ধরনের জালিয়াতি রোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় আরও জোরদার করা হবে।”
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বক ন র য়ণগঞ জ ব যবহ র কর আজ জ খ ন অফ স র
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় না’গঞ্জ পূজা পরিষদের বিশেষ প্রার্থনা
বিএনপির চেয়ারপার্সন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের চাষাড়া শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দিরে এই প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময়ে অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপার্সন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ- সভাপতি তিলোত্তমা দাস, প্রদীপ সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, পংকজ কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব পাল, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন রুদ্র, কোষাধ্যক্ষ শান্তি দাস, প্রচার সম্পাদক তপন গোপ সাধু, দপ্তর সম্পাদক অভিরাজ সেন সজল, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহ- সভাপতি সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, সহ- সভাপতি দুলাল দাস, রতন পোদ্দার, রতন রাউদ, গোপাল দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শংকর রায়, সঞ্জয় দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্চয় সাহা, প্রচার সম্পাদক রিপন ঘোষ, ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, সিদ্ধিরগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, বন্দর থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাসসহ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।