জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান প্রশ্নে রুল
Published: 1st, December 2025 GMT
নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধিত এমন বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) অধ্যাদেশের ওই বিধান–সংবলিত ৯ অনুচ্ছেদ সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের (২৮, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না—রুলে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নতুন ওই বিধান যুক্ত করে ৩ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। আগে কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত।
ওই বিধান–সংবলিত অধ্যাদেশের ৯ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মহাসচিব মোমিনুল আমিন গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাহেদুল আজম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো.
উল্লেখ্য, জোট করলেও দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি। দলটি নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরে। বিএনপি মনে করে, জোটগত নির্বাচন করলেও নিজস্ব প্রতীকে ভোট করে ছোট দলগুলোর নেতাদের জয় সহজ হবে না। এর ফলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সুফল পেয়ে যেতে পারে।
তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই সংশোধনের পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জোট করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে হবে নিজ দলের প্রতীকে, শেষ পর্যন্ত এমন বিধান যুক্ত করেই ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুনজোটেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি ০৪ নভেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইনুর আবেদন খারিজ, আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে গঠন করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। এর মধ্য দিয়ে ইনুর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই মামলার বিচার চলছে। আজ রোববার ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার উপস্থিত ছিলেন।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যাসহ মোট আটটি অভিযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ২ নভেম্বর এ মামলায় ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। তারপর এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন ইনুর আইনজীবী। পুনর্বিবেচনার আবেদন ২৭ নভেম্বর অনির্ধারিত তারিখে বাতিলের আরজি জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আজ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ইনুর আইনজীবী। উভয় পক্ষে শোনার পর আজ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
এরপর এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। এর মাধ্যমে এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। এ মামলার একমাত্র আসামি ইনু। তিনি গ্রেপ্তার আছেন। আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।