ড্রেসিংরুমে বিশ্বাসের রেণু ছড়িয়ে দিতে মুশতাক আহমেদ সর্বদা প্রস্তুত থাকেন। স্পিন বোলিং কোচের সঙ্গে অনুশীলন শেষে সময় কাটাচ্ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। পায়ে প্যাড জোড়া খুলেননি। ওটা নিয়েই মাঠ চক্কর দিচ্ছিলেন কয়েকবার। দুজনের গুরুগম্ভীর কথা যেন শেষ-ই হচ্ছিল না। কি নিয়ে কথা তা জানার উপায় নেই। তবে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা মাহিদুলের সুযোগ আসবে, সেই বিশ্বাস দিচ্ছিলেন মুশতাক এতোটুকু নিশ্চিত। সঙ্গ এটা-ওটা নিয়ে কথা তো আছেই।
মাহিদুলকে বিশ্বাস দেওয়া ছাড়া বেশি কিছু করারও মুশতাকের নেই। যেমনটা নেই পেস বোলিং কোচ শন টেইটেরও। তাইতো সোজাসাপ্টা উত্তর দিলেন, ‘‘আমি নির্বাচক নই যে কাউকে দলে নেব।’’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির জন্য তাকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি দলে নেওয়া হয়েছিল। এর আগেই তার টেস্ট ও ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল। শেষ ম্যাচেও তাকে রাখা হয়েছে স্কোয়াডে। কিন্তু খেলার সুযোগ হবে কিনা নিশ্চিত নন মাহিদুলও।
এর মধ্যে আবার স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে। যাকে নিয়ে রীতিমত উত্তাপ, বিতর্ক, টালমাটাল হয়ে গেছে দেশের ক্রিকেট। নির্বাচকরা মাহিদুলকে দলে নিয়েছেন। শামীমকে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিনায়ক শামীমকে দলে চেয়েছিলেন। কেন বাদ পড়েছিলেন সেই কারণটা লিটন জানতেন না। সংবাদ সম্মেলনে বোমা ফাঁটানোর পর দুই মেরুতে চলে যান অধিনায়ক ও নির্বাচকরা।
যাকে ঘিরে এতো কিছু, শামীমের পরিবর্তে নেওয়া মাহিদুল কি শেষ ম্যাচে সুুযোগ পাবেন। টেইট বাড়তি এক লাইন যোগ করেছিলেন, ‘‘‘যারা দল ঠিক করে, তাদের জিজ্ঞেস করুন।’’ বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে দল দেন শুধু নির্বাচকরা। একাদশ তৈরি করেন কোচ ও অধিনায়ক। তবে উপমহাদের বাইরের সেই রীতি অনেকটাই পরিবর্তিত।
শন টেইট যেই জায়গা থেকে এসেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় দল বাছাই, একাদশ গঠনে নির্বাচকরা বড় ভূমিকা রাখেন। দল বাছাইয়ে অধিনায়ক ও কোচেরও থাকে ভূমিকা। এখানে সব কিছুই অধিনায়ক-কোচ কেন্দ্রিক। তৃতীয় ম্যাচে মাহিদুল কিংবা শামীমের খেলাটা নির্ধারণ করবেন তারাই।
তবে মাহিদুল নিজের কাজ করে রাখছেন। গতকাল দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া শামীমও তাই। দুজন আজ চট্টগ্রামে কড়া রৌদ উপেক্ষা করে টানা ব্যাটিং করেছেন নেটে। মাহিদুল দুই দফা নেটে ঘাম ঘরিয়েছেন। সেন্টার উইকেটে চলে তার প্রস্তুতি। আর শামীম ড্রেসিংরুমের কোনে পশ্চিমের নেটে অনুশীলন শেষে উল্টো পাশে এসে আশরাফুলের থ্রো ডাউন খেলেছেন।
শামীম, মাহিদুল কেউই ফর্মে নেই। নির্বাচকরা তাকে পারফরম্যান্সের কারণেই দল থেকে বাদ দিয়েছিল। সবশেষ পাঁচ ইনিংসে ১, ১, ০, ৩৩, ০ এই রান করেছেন শামীম। এর আগে কার্যকরী ইনিংস ছিল। কিন্তু দল থেকে বাদ পড়ার পর যথেষ্ট কারণ ছিল।
মাহিদুল কোথায়, কবে রান করেছেন সেটাও প্রশ্ন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। বছরখানেক আগে বিপিএলে তার উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স নেই। এ বছর ২৪ ইনিংস খেলে তার কোনো ফিফটি নেই। সেই ব্যাটসম্যানকেই নেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলে। কাতারে রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টে ৫ ইনিংসে ১১৬ রান করেছেন। ফাইনালে প্রথম বলে রিভার্স সুইপ করে দলকে ডুবিয়ে আসেন।
প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বকাপের আগে শেষ ম্যাচে কাকে খেলাবে বাংলাদেশ? নাকি দুজনই থাকবে ডাগআউটে! প্রস্তুতিতে স্পষ্ট কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। পরিশ্রমে দুজনই দুজনকে টেক্কা দিয়েছেন। সেরা একাদশে কে থাকবেন সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ব চকর কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ধরন বুঝে কেন টিভি কেনা জরুরি
ঘরে আর যা-ই থাকুক না কেন, একটি টেলিভিশন না থাকলে কি চলে? যতই আমরা আজকাল মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপে সিরিজ বা সিনেমা উপভোগ করি না কেন, টিভি দেখার ব্যাপারটিই যেন ভিন্ন। আয়োজন আর আয়েশ করে কিছু দেখতে গেলে টিভির কোনো জুড়ি নেই বললেই চলে।
তবে টিভি কিন্তু এখন আর একমুখী কোনো যন্ত্র নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি হয়ে উঠেছে একেবারে স্মার্ট, মাল্টি-ফাংশনাল ও ইন্টারঅ্যাকটিভ। তাই টিভি কেনার সময় শুধু ব্র্যান্ড বা দাম নয়, খেয়াল রাখতে হবে চাহিদা, ফিচার, প্রযুক্তি ও পারফরম্যান্সের সঠিক ভারসাম্য।
বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের টিভি—এলইডি, কিউএলইডি, মিনি-এলইডি ও ওএলইডি। এ ছাড়া আধুনিক স্মার্ট টিভিতে যুক্ত হয়েছে এআই প্রসেসিং, ভয়েস কন্ট্রোল, স্মার্ট হাব ও গেমিং ফিচারের মতো বৈশিষ্ট্য। তাই টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা জরুরি।
স্ক্রিন প্রযুক্তিস্ক্রিনের ওপর ভিত্তি করে এখন বিভিন্ন ধরনের টিভি পাওয়া যায়—এইচডি/এফএইচডি, ইউএইচডি, কিউএলইডি, ওএলইডি ও নিও কিউএলইডি এইটকে। এফএইচডি ও ইউএইচডি টিভি হলো সবচেয়ে প্রচলিত ও বাজেট-বান্ধব অপশন। এতে লাইট এমিটিং ডায়োড ব্যাকলাইট হিসেবে কাজ করে, ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয় এবং স্ক্রিনের আয়ুষ্কাল তুলনামূলক বেশি থাকে। খবর, টক শো, সিনেমা বা দৈনন্দিন সিরিজ দেখার জন্য এটি যথেষ্ট ভালো। তবে কালার ও নিখুঁত কনট্রাস্টের দিক থেকে এলইডি কিছুটা পিছিয়ে।
আর কিউএলইডি টিভি কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তিভিত্তিক। এর ফলে এই টিভিগুলোতে ছবির উজ্জ্বলতা ও পারফরম্যান্স অনেক উন্নত। এতে যেকোনো আলোতেই টিভি দেখা যায় স্বাচ্ছন্দ্যে। এ ছাড়া স্পোর্টস, গেমিং ও অ্যানিমেটেড সিনেমা উপভোগের জন্যও কিউএলইডি হতে পারে আদর্শ বিকল্প।
ওএলইডি টিভি এক ধাপ উন্নত। এখানে প্রতিটি পিক্সেল নিজেই আলো দেয়, তাই ব্ল্যাক লেভেল থাকে গভীর এবং কালার ও ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল হয় অসাধারণ। সিনেমাটিক এক্সপেরিয়েন্স, গেমিং বা গ্রাফিক্সভিত্তিক কনটেন্ট দেখার জন্য ওএলইডি টিভি সেরা। তবে এর দাম তুলনামূলক বেশি।
স্ক্রিন সাইজ, সাউন্ড ও রেজল্যুশনটিভির আকার বাছাই করার সময় ঘরের আয়তন ও দেখার দূরত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছোট রুমের জন্য ৩২ থেকে ৪৩ ইঞ্চির টিভি যথেষ্ট, যেখানে বড় ড্রয়িংরুমের জন্য ৫৫ থেকে ৮৫ ইঞ্চি বেশি উপযুক্ত। এখানে রেজল্যুশনের পাশাপাশি ব্যবহারকারীর পছন্দও বড় ভূমিকা রাখে।
এইচডি টিভিগুলো এখন অনেক পুরোনো ধরা হয়, তবে ফুল এইচডি এখনো ভালো মানের ভিউ দেয়। কিন্তু ফোরকে টিভিই এখন মূলধারায় রয়েছে। এতে ছবির ডিটেইল ও শার্পনেস অনেক বেশি। তবে ভালো ছবি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ভালো সাউন্ডও।
টিভির বিল্ট-ইন স্পিকারে যদি ডলবি অ্যাটমস বা ডিটিএস এক্স সাপোর্ট থাকে, তাহলে সাউন্ড হয় আরও ইমার্সিভ। তবে বড় ঘরে সিনেমা হলের মতো এক্সপেরিয়েন্স পেতে সাউন্ডবার বা হোম থিয়েটার সিস্টেম যুক্ত করা যেতে পারে।
প্রযুক্তির জন্য স্যামসাংয়ের টিভিগুলোতে ভিউইং এক্সপেরিয়েন্স অনেক বেশি আরামদায়ক ও স্বস্তিকর