লড়াইহীন পরাজয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
Published: 9th, October 2025 GMT
সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার জন্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে তেজদীপ্ত, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ও প্রেরণামূলক পারফরমেন্সের প্রয়োজন ছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। আফগানিস্তান তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশকে হেসে খেলে হারিয়েছে।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে আবুধাবিতে মাত্র ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। বোলিংয়ে খানিকটা লড়াই করে বাংলাদেশ ম্যাচটা নিতে পেরেছে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। প্রাপ্তি এতটুকুই। ৪৭.
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানকে ১০৭ রানে হারাল অস্ট্রেলিয়া
মায়ের দেশের হয়ে অভিষেক রাঙাতে পারলেন না রস টেইলর
সবার নজর ছিল সাইফ হাসানের দিক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভালো করে ওয়ানডেতে সুযোগ পাওয়া এই ব্যাটসম্যান কেমন করেন সেটাই ছিল দেখার। লিস্ট এ ক্রিকেটে ৫০০০ রান করা এই ব্যাটসম্যান প্রথমবার ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। ভালো করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন। ফর্মে থাকা এ ব্যাটসম্যান ৩৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৬ রানও করেন৷ কিন্তু হঠাৎ করেই পথ ভুলে সাজঘরে ফিরে যান। তাতে ওয়ানডে অভিষেক রাঙানো হয়নি তার।
ভুলে ভরা ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। প্রচুর ডট বল খেলেছে দল। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৬৯। আসা যাওয়ার মিছিলে পুরোপুরি এলোমেলো ছিল ব্যাটিং। তাওহীদ ও মিরাজ বাদে তেমন কেউই ভালো করতে পারেননি৷ ৩ উইকেটে ৫৩ রান থেকে মিরাজ ও তাওহীদের লড়াই শুরু হয়৷ তাদের ব্যাটের দিকেই বাংলাদেশের স্কোর বোর্ড নির্ভর করছিল।
১০১ রানের জুটি গড়ার পথে দুজনের রসায়ন ছিল দারুণ। কিন্তু তাওহীদের ভুল ডাকে রান আউট হয়ে ভাঙে তাদের জুটি। ৫৬ রান করে তাওহীদ ফেরেন সাজঘরে৷ মিরাজ তাকে অনুসরণ করেন আরো চার রান যোগ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করা মিরাজ ৮৭ বলে ১টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান৷ তাওহীদের ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ৩ ছক্কা। শেষ দিকে চরম বাজে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ২২১ রান এ গুটিয়ে যায় ৭ বল বাকি থাকতেই।
আফগানিস্তানের সেরা বোলার রশিদ খান ও আজমত উল্লাহ উমারজাই। ৩টি করে উইকেট নেন এই দুই বোলার। ২ উইকেট পেয়েছেন গাজনাফার।
স্বল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে শুরুতে খুব একটা ভালো করেনি বাংলাদেশ৷ তাতে আফগানিস্তানের রান অনায়াসে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলে। দশম ওভারে তানভীর স্ট্যাম্পড করেন ইব্রাহিম জাদ্রানকে। ১৩ তম ওভারে পেসার সাকিব সিদ্দিকুল্লাহ অটলের উইকেট নেন। ৬ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ কিছুটা ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল।
কিন্তু তৃতীয় উইকেটে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহ প্রতিরোধ করে বাংলাদেশ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেয়। দুজনের কেউই ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি তবে লক্ষ্য নাগালে রেখে এসেছিলেন। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রান।
এরপর আজমতউল্লাহর ৪০ ও হাসমতউল্লাহ শাহীদির ৩৩ রানে আফগানিস্তান জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অতি সহজেই। বোলিংয়ে তানজিম ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আজমতউল্লাহ হয়েছেন ম্যাচ সেরা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ১১ অক্টোবর একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে৷
আফগানিস্তান আট ও বাংলাদেশ চার মাস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাঠে নেমেছিল। জড়তা ছিল দুই দলেরই। কিন্তু আফগানিস্তান দেখিয়েছে পেশাদারিত্ব৷ জয়ী তীব্র চাওয়া ছিল তাদের৷ শেষমেষ হাসিটা তাদের মুখেই ফুটেছে৷
ঢাকা/ ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
ফার্গুসন-ওয়েঙ্গারের মতো কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলে গার্দিওলার ইতিহাস
পেপ গার্দিওলা আবারও ইতিহাস লিখলেন। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির রোববার (০৫ অক্টোবর) রাতের জয় তাকে নিয়ে গেল এক নতুন উচ্চতায়, প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত ২৫০ জয় পাওয়া কোচ হিসেবে। মাত্র ৩৪৯ ম্যাচেই এই অসাধারণ মাইলফলকে পৌঁছে গেছেন স্প্যানিশ এই মাস্টারমাইন্ড।
এই যাত্রায় পেছনে ফেলেছেন ফুটবল ইতিহাসের দুই মহাতারকা- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন (৪০৪ ম্যাচে ২৫০ জয়) এবং আর্সেনালের প্রাক্তন কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার (৪২৩ ম্যাচে ২৫০ জয়)।
আরো পড়ুন:
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই সূর্যবংশীর ছক্কার বিশ্বরেকর্ড
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
রবিবারের ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডকে ১-০ গোলে হারায় সিটি, একমাত্র গোলটি করেন আরলিং হালান্ড এবং ম্যাচের প্রথমার্ধে নবম মিনিটে। এই জয়ের ফলে লিগ টেবিলে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
প্রিমিয়ার লিগে ২৫০ জয়ের মাইলফলক ছোঁয়া কোচের সংখ্যা কম নয়, কিন্তু গার্দিওলার মতো দ্রুত কেউ পারেননি। যেখানে ডেভিড ময়েসকে এই সংখ্যায় পৌঁছাতে লেগেছে ৬৪৫ ম্যাচ, সেখানে গার্দিওলা তা করেছেন প্রায় ৩০০ ম্যাচ কমে। এটি প্রমাণ করে কেন গার্দিওলার ফুটবল দর্শন, তার কৌশল আর শৃঙ্খলা আধুনিক ফুটবলের এক অনন্য পাঠ।
মৌসুমের শুরুটা তেমন সুখকর ছিল না ম্যানচেস্টার সিটির জন্য। টানা দুটি ম্যাচ হেরেছিল টটেনহ্যাম ও ব্রাইটনের বিপক্ষে। কিন্তু এরপর থেকেই যেন আবার পুরনো ছন্দে ফিরেছে ‘দ্য সিটিজেনস’। সবশেষ চারটি লিগ ম্যাচে অপরাজিত তারা, আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচে অজেয়।
এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই গার্দিওলার দলের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে, এবং লিগ টেবিলেও তাদের অবস্থান দিন দিন মজবুত হচ্ছে।
তবে রবিবারের জয়েও দুশ্চিন্তা আছে একটা, রদ্রির ইনজুরি। ম্যাচের মাত্র ২০ মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে হয় স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকে। যদিও তিনি হেঁটে মাঠ ছাড়েন। কিন্তু ব্যথায় তার মুখের অভিব্যক্তি বলছিল ভিন্ন কথা। গার্দিওলার দলে রদ্রির ভূমিকা অপরিসীম, ফলে তার অনুপস্থিতি সিটির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
নরওয়ের গোলমেশিন হালান্ড যেন আবার আগুনে ফর্মে ফিরেছেন। নতুন মৌসুমে এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র ৯ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ১২। তবে নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স সত্ত্বেও হালান্ড জানিয়েছেন, ইউরোপের শীর্ষ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে হ্যারি কেইন ও কিলিয়ান এমবাপ্পের চাপ তিনি টের পাচ্ছেন। “চাপ সবসময় থাকে,” বলেছেন হালান্ড, “কিন্তু আমি সেটাকেই প্রেরণা হিসেবে নিচ্ছি।”
গার্দিওলার এই ২৫০তম জয় তাই শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি এক যুগান্তকারী অধ্যায়। যেখানে ফুটবল কৌশল, দৃঢ়তা আর নেতৃত্ব মিলেমিশে তৈরি করেছে এক নতুন ইতিহাস। যা আগামী প্রজন্মের কোচদের জন্য হবে এক অনুপ্রেরণার পাঠ।
ঢাকা/আমিনুল