অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে একসঙ্গে অভিষেক হতে যাচ্ছে ওপেনার জেক ওয়েদারাল্ড এবং পেসার ব্রেন্ডান ডগেটের। জশ হ্যাজলউড হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ছিটকে পড়ায় ডগেট খেলবেন, এটা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। তবে ওপেনিংয়ে ওয়েদারাল্ডকে নামানো হবে, নাকি মার্নাস লাবুশেন ওপেন করবেন; এই ধন্দে ছিল দল। শেষ পর্যন্ত নর্দান টেরিটরিতে বেড়ে ওঠা ওয়েদারাল্ডই জায়গা পেলেন। ডেভিড ওয়ার্নার অবসরের পর উসমান খাওয়াজার এটি ষষ্ঠ নতুন ওপেনিং সঙ্গী।

ওয়েদারাল্ডকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ বললেন, “ওর ভেতর প্রচণ্ড সাহস আছে। নেটে সে সারাক্ষণ পেসারদের মুখোমুখি হতে চায়। সবাই গতিতে বল করছিল, আর সে সেগুলো দারুণভাবে সামলেছে। তার ব্যাকফুট ও ফ্রন্টফুট পজিশন নিখুঁত ছিল।”

আরো পড়ুন:

মুশফিকের ইতিহাসের পর লিটনের সেঞ্চুরি, আয়ারল‌্যান্ডকে চাপে রেখেছে বাংলাদেশ

পেছাল বিপিএল নিলাম, ব‌্যাংক গ‌্যারান্টি পায়নি বিসিবি

তিনি আরও যোগ করেন, “গত দেড় বছরে পারফরম্যান্স দিয়েই সে জায়গা পেয়েছে। তাসমানিয়ার হয়ে ওপরে ব্যাট করে সে অসাধারণ ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। আশা করছি, সেই ফর্মটাই টেস্ট ক্রিকেটেও নিয়ে আসবে।”

এর ফলে ওয়েদারাল্ডের তাসমানিয়া সতীর্থ বো ওয়েবস্টার বাদ পড়লেন। জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে চমকজাগানো অভিষেকের পর সাতটি টেস্ট খেললেও এবার জায়গা পেলেন না।

২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কুর্টিস প্যাটারসন ও ঝাই রিচার্ডসনের অভিষেক ম্যাচের পর এই প্রথম একই টেস্টে দুই নতুন মুখ নামাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাদ পড়লেও এবার দুর্দান্ত ঘরোয়া মৌসুমের পারফরম্যান্সে আবার দলে ফিরে এসেছেন লাবুশেন। স্মিথ বললেন, “মার্নাস যখন তিন নম্বরে ছন্দে থাকে, তখন আমরা ভীষণ শক্তিশালী দল হয়ে যাই। ফিরেই সে প্রমাণ করেছে কেন তাকে রাখা জরুরি।”

পিঠের গুরুতর ইনজুরি থেকে ফিরে কিছুদিন তিন নম্বরে খেললেও ক্যামেরন গ্রিন এবার আবার নেমে যাচ্ছেন তার পুরনো জায়গা- ছয় নম্বরে। তবে দীর্ঘমেয়াদে তিনি স্মিথের পর চার নম্বরে ওঠার প্রবল দাবিদার বলে মনে করা হয়। ২৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এ বছর চার টেস্টে ব্যাটার হিসেবেই খেলেছিলেন, সদ্যই আবার বল করতে শুরু করেছেন।

ইংল্যান্ডও বুধবার তাদের ১২ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। পেসার জোফরা আর্চার ও মার্ক উড দু’জনই আছেন একাদশে। তারা অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ঐতিহ্যবাহী বাউন্সি উইকেট কাজে লাগাতে প্রস্তুত। ৪০ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি অ্যাশেজ সিরিজ হতে চলেছে বলেই ধারণা অনেকের।

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্টের একাদশ:
উসমান খাজা, জেক ওয়েদারাল্ড, মার্নাস লাবুশেন, স্টিভ স্মিথ (অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেটকিপার), মিচেল স্টার্ক, স্কট বোল্যান্ড, নাথান লায়ন ও  ব্রেন্ডান ডগেট।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকুর পারফরম‌্যান্স করেই নিজেকে কিংবদন্তির স্থানে নিয়ে গেছে: সিমন্স

ষোলো বছর বয়সে ২০০৫ সালে মুশফিকুর রহিমের যে যাত্রা লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হয়েছিল, নানা পথ ঘুরে, চড়াই-উৎরাই শেষে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনন‌্য এক মাইলফলকের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। 

দুই দশক পর বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে মুশফিকুর। পেশাদারিত্ব, অধ‌্যবসায়, নিবেদন, পরিশ্রম সব মিলিয়ে মুশফিকুর নিজেকে নিয়ে গেছে অনন‌্য এক উচ্চতায়। সঙ্গে পারফরম‌্যান্স তো আছেই। বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের মতে, কিংবদন্তির জায়গাটাই দখল করেছেন মুশফিকুর। সেটা পারফরম‌্যান্স দিয়েই করতে পেরেছেন। 

আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট দিয়ে মুশফিকুর টেস্ট ক্রিকেটের তিন সংখ‌্যা ছুঁয়ে ফেলবেন। ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন‌্য অনেক বড় বলেই মনে করছেন সিমন্স, ‘‘আমার মনে হয় সবার আগে আমাদের তার পেশাদারিত্ব, দীর্ঘায়ু এবং বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার তার আকাঙ্ক্ষাকে স্বীকৃতি দিতে হবে কারণ ১০০ টেস্ট ম্যাচ পেতে বাংলাদেশকে অনেক সময় দিতে হয়েছে। কারণ বছরে বাংলাদেশ ১৫টিও খেলে না। তার জন্য কিছুটা সময় লেগেছে এবং আমাদের অবশ্যই এটি উপলব্ধি করতে হবে। তার সঙ্গে অল্প সময় কাজ করার ফেলে তার পেশাদারিত্ব নিয়ে অত‌্যন্ত উচ্চ ধারনা পেয়ছি। আগামীকাল তার যখন শততম টেস্ট খেলার সুযোগ আসবে তখন আমি খুব খুশি হবো।’’

বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তিনি। ৯৯ ম‌্যাচে ৬ হাজার ৩৫১। গড় রান ৩৮.০২। নামের পাশে ১২টি সেঞ্চুরি। যার তিনটিই ডাবল। মুশফিকুরের পারফরম‌্যান্স তার হয়ে কথা বলছে বলে বিশ্বাস করেন সিমন্স, ‘‘তিনি অবশ্যই একজন কিংবদন্তি। আমার মনে হয় না খুব বেশি খেলোয়াড় আছেন যারা টেস্ট ক্রিকেটে তার করা ডাবল সেঞ্চুরির সংখ‌্যায় পৌঁছেছেন এবং তিনি বহু বছর ধরে পারফর্ম করেছেন। কী বলব, ২০ বছর? সুতরাং তাকে কিংবদন্তি হতেই হবে কারণ এই দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং পারফরম্যান্স তাকে সেই অবস্থানে নিয়ে গেছে।’’

৩৮ পেরোনো মুশফিকুর কোথায় থামবেন তা নিয়ে নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা চলে। ক্রিকেটের বাকি দুই ফরম‌্যাট থেকে তিনি বিদায় নিয়েছেন। খেলে যাচ্ছেন টেস্ট ক্রিকেট। সমর্থক, সঙ্গীরা তাকে ২২ গজে আরো বেশি সময় দেখতে চান। মুশফিকুর কি ভাবছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে প্রধান কোচের সঙ্গে এখনও কোনো কথা হয়নি বলে জানালেন সিমন্স। তবে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা তার উপরই দিলেন কোচ। 

বিশেষ করে পারফর্ম করলে কেন খেলবেন না সেই প্রশ্নও যেন তুললেন, ‘‘না (কোনো কথা হয়নি)। আমি যখন এসেছিলাম, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ চলছিল। আমি কেবল মুশিকে বলেছিলাম, এই সময় তুমি যা করছ তা উপভোগ করতে হবে এবং তুমি প্রতিদিন ক্রিজে যাও এবং উপভোগ করো। আপনি একবার পারফর্ম করলে, আপনাকেই নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি কতদিন খেলতে চান। কারণ পারফরম‌্যান্স অপরিহার্য। তাই একবার সে পারফর্ম করতে থাকলে, তার পেশাদারিত্ব তাকে ততদিন এগিয়ে নিয়ে যাবে যতক্ষণ না সে না বলার জন্য প্রস্তুত হয়।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুশফিকুর পারফরম‌্যান্স করেই নিজেকে কিংবদন্তির স্থানে নিয়ে গেছে: সিমন্স