বিএনপি নেতার নির্দেশে এএসপির ওপর হামলা: পুলিশ
Published: 9th, October 2025 GMT
নরসিংদী শহর বিএনপির সহ-সভাপতি ও পৌর শহরের ইজারাদার আলমগীর হোসাইনের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীমের ওপর হামলা হয়। মামলার এজাহারে পুলিশ এমনটি দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে মোবাইল ফোনে মামলার বাদী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লাকু আর নেই
শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা ও চাকরি স্থায়ীকরণে কমিশন গঠন করবে বিএনপি
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন- ফজলুল রশিদ ওরফে আদর (৪০), মো.
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শেখ সাইয়াদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ফজলুল রশিদের নামে একটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার সকালে নরসিংদী পৌর এলাকার আরশীনগরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে অভিযানে যান। দুইজন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের চালানো হমলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গুরুতর আহত হন। সহকর্মী পুলিশ সদস্য ও স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।
হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় শহর বিএনপির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসাইনকে হুকুমদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় আরো পাঁচজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ২৫–৩০ জনকে আসামি করা হয়।
এসআই শেখ সাইয়াদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের সবাই বিএনপি নেতা আলমগীর হোসাইনের অনুসারী।
মামলার বাদী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ বলেন, “পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মামলার তদন্ত চলছে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ অভ য গ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অভাবের কথা বলে পরিচিত হন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে হাতিয়ে নেন টাকা
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্দেহভাজন দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম শাখার একটি আভিযানিক দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. হাসানুজ্জামান (৩৫) ও মো. আলমগীর শিকারী (৪৬)।
সিআইডি জানায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সিআইডি বা পুলিশের পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে অপহরণ, মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদা আদায় এবং বিব্রতকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল। তাঁরা মূলত তাবলিগ জামাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে মানুষের সঙ্গে পরিচয় তৈরি করে বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর অভাবের কথা বলে টাকা নেওয়ার মাধ্যমে ফাঁদ পাতত।
সিআইডি সূত্র আরও জানায়, কাকরাইল মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত শামসুল হক খানের (৫৬) সঙ্গে জামাল (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যবসায়ীর এভাবেই পরিচয় হয়। চক্রের সদস্য শামসুল প্রায়ই অসুস্থতা ও অভাবের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন।
সূত্রটি জানায়, গত ১৪ অক্টোবর রাতে ব্যবসায়িক কাজ সেরে খুলনা থেকে ঢাকায় এলে জামালের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাঁচাবাজার গোলচত্বরে দেখা করেন সামসুল। নাশতা শেষে তাঁকে দুই হাজার টাকা দিয়ে রেস্তোরাঁ থেকে বের হতেই সামসুসহ আরও সাতজন নিজেদের সিআইডি পরিচয় দিয়ে জাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে জামালকে জোর করে গাড়িতে তোলেন। এ সময় জামালের এক ব্যবসায়িক অংশীদারও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
ভুক্তভোগীদের ঢাকার হাসনাবাদ এলাকায় বসুন্ধরা সিটির বি-ব্লক, রোড-৮–এর একটি ছয়তলা বাড়ির ছয়তলায় নিয়ে যাওয়া হয় উল্লেখ করে সিআইডি জানায়, সেখানে প্রথমে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জামালকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ভয় দেখিয়ে তাঁর নগদ টাকা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১ কোটি ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। জামালের ব্যবসায়িক অংশীদারের কাছ থেকেও ২৭ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
সিআইডি আরও জানায়, জামালকে বিবস্ত্র করে এক নারীর সঙ্গে বসিয়ে ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয় এবং ১৮টি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। দুজনকে টানা প্রায় ১৭ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ঘটনাটি পুলিশে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সিআইডি জানায়, এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর চক্রটি ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ঘটনার পর জামাল যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা (নং-১৬, তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৫) দায়ের করেন। এরপর মামলার তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে এবং চক্রের সদস্য হাসানুজ্জামান ও আলমগীর শিকারীকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশের এই সংস্থা।