সাংবাদিক অরুণ বসুর জানাশোনার পরিধি, বাংলা ভাষার ওপর তাঁর দখল প্রথম আলো ও তার বৃহত্তর পাঠক সমাজকে সমৃদ্ধ করেছে। শুদ্ধ বাংলা ভাষার চর্চা, শুদ্ধ বাক্য লেখার বিষয়ে তাঁর মতো আগ্রহ ও আন্তরিকতাসম্পন্ন মানুষ কমে গেছে। বাংলা ভাষা ও শিল্পের প্রতি তাঁর ভালোবাসা সব সময় ছিল। অরুণ বসুর প্রয়োজনীয়তার কথা এখনো স্মরণ করা হয়। তাঁর নৈতিক শক্তিও ছিল প্রবল।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক ও প্রথমা প্রকাশনের সমন্বয়ক অরুণ বসুর স্মরণসভায় তাঁর সাবেক সহকর্মী, স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে। অরুণ বসুর পছন্দের কবিতায়, গানে ও নানা স্মৃতিচারণায় তাঁকে স্মরণ করা হয়।

সভায় শিশুসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর সাবেক জ্যেষ্ঠ পাণ্ডুলিপি সম্পাদক আখতার হুসেন বলেন, অরুণ বসুর জানাশোনার যে পরিধি, বাংলা ভাষার ওপর তাঁর যা দখল, সেটা যেমন প্রথম আলোকে সমৃদ্ধ করেছে, ঠিক তেমনি প্রথম আলোর বৃহত্তর পাঠক সমাজকেও সমৃদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় ব্যাপার, বাংলা ভাষাকে শুদ্ধভাবে চর্চার ব্যাপারে, শুদ্ধ বাক্য লেখার ব্যাপারে তাঁর যে আগ্রহ ও আন্তরিকতা—সে রকম মানুষ একেবারে কমে গেছে। সেখানে তিনি ছিলেন একটা অতুলনীয় চরিত্র, অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব।

অরুণ বসুর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ের স্মৃতি তুলেন ধরে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘তাঁর (অরুণ বসু) মধ্যে থাকা সব নমনীয়তা, কমনীয়তা, কোমলতার পেছনে একটা প্রবল এবং বিরুদ্ধ প্রকাশ আমরা পেয়েছি। তাঁর এই বিরুদ্ধতার উৎস হচ্ছে একটা নৈতিক শক্তি।’

স্মরণসভায় সাংবাদিক অরুণ বসুকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ। ঢাকা, ৯ অক্টোবর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল র

এছাড়াও পড়ুন:

মাহফুজ-সারজিসরা নন, গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক ছিলেন সাধারণ মানুষ: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক মাহফুজ–সারজিসরা নন, প্রকৃত নায়ক দেশের সাধারণ মানুষেরা, যাঁরা জীবনের মায়া ছেড়ে বুলেটের মুখে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘মাহফুজ সারজিসরা গণ–অভ্যুত্থানের নায়ক নন। গণ–অভ্যুত্থানের নায়ক হলেন হাজার হাজার মানুষ, যাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের অন্যান্য সময়ের মতো যাঁরা নায়ক, তাঁদের বঞ্চিত করে একটা অংশ। তাঁদেরও ভূমিকা ছিল, আমি অস্বীকার করছি না। কিন্তু তাঁরা সেটাকে হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছেন।’

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এ কথা বলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

আন্দোলনের নায়ক দাবি করা পক্ষটি ৫ আগস্টের পর আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘তাঁরা বলেছেন, “আর রাজনৈতিক দলগুলোকে তো পাইনি।” কিন্তু ১৬ বছর ধরে যে সংগ্রাম চলল, সেই সংগ্রামের ফসল এবং চূড়ান্তভাবে জনগণের ভূমিকার ভেতর দিয়ে কিন্তু এই গণ–অভ্যুত্থান তাঁর সফলতা অর্জন করেছিল।’

মোহাম্মদ ফরহাদ প্রসঙ্গে সিপিবির এই নেতা বলেন, দেশের যেকোনো সংকটে মোহাম্মদ ফরহাদ প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন। তাঁর জীবদ্দশায় সংবিধান, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে সৃষ্টি হওয়া যেকোনো জটিল পরিস্থিতিতে তিনি পথ দেখাতে পারতেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সাংবিধানিক বিষয়াবলি নিয়ে গণভোট শুধু অপ্রয়োজনীয়, তা–ই নয়, এর তেমন কোনো আইনগত গুরুত্ব নেই। তিনি মনে করেন, ঐকমত্য না হওয়া বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের এখতিয়ার সরকারের নেই। বরং নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই এই সরকারের দায়িত্ব।

বৈষম্যহীন সমাজের কথা বললেও চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পরে দেশে মুক্তিযুদ্ধ ও নারীদের নতুন করে বৈষম্যের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম।

ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, ‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলন ছিল, তাঁকে উৎখাতের প্রয়োজন ছিল, সবই ঠিক আছে। সেই আন্দোলনে আমরাও আপনাদের সঙ্গে আছি, একমত। কিন্তু আমি একটা জায়গায় দেখি, এই যে জুলাই আন্দোলন আপনারা এটাকে বলছেন, সেই আন্দোলনের মূল কেন্দ্রটা কী, আপনারা ভেবে দেখেছেন কি না। আমি একজন মহিলা সংগঠক হিসেবে দেখি, আন্দোলনের ভিত্তিটা দাঁড়িয়েছে, একটা বৈষম্যহীনের কথা বলে একটা বৈষম্য সৃষ্টির জন্য তাঁরা আন্দোলনটা শুরু করেছেন। সেই বৈষম্য তাঁরা কোথায় সৃষ্টি করেছেন? মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বৈষম্য, নারী জাতির সঙ্গে বৈষম্য।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল উল্লেখ করে ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, এর নেপথ্যে ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাহফুজ-সারজিসরা নন, গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক ছিলেন সাধারণ মানুষ: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম