চেয়ার দুটি মুখোমুখি। এক পাশে ৫০ বছরের অভিজ্ঞ রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভ। অন্য পাশে মাত্র ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আলিশা হায়দার। বয়স যতই ছোট হোক, চোখের চাহনিতে কিন্তু কোনো ভয় নেই। বোর্ডের ওপারে তাকাতে হলে একটু হেলে বসতে হয়, গুটি ধরার সময়েও হাত কাঁপে। তবু খেলার উৎসাহে বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই।

আজ সকালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের ক্রীড়াকক্ষে দেখা গেল সেই বিরল দৃশ্য। অনূর্ধ্ব–১৪ বয়সী ২৬ দাবাড়ুর বিপক্ষে একসঙ্গে খেললেন পিটার কিরিয়াকভ। একটার পর একটা বোর্ডে গিয়ে চাল দিয়েছেন, ২৩ জনকে হারিয়েছেন, দুজনের সঙ্গে ড্র, একজনের কাছে হেরেছেন। সবই অবশ্য হয়েছে মজার ছলে।

আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবল: প্রথম ধাপে বিক্রি হলো ১০ লাখের বেশি টিকিট৯ ঘণ্টা আগে

সেই মজার ছলে খেলাতেই ঢাকা চেস একাডেমির কিশোর সায়ান মীরাব হাসান রুশ গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে সবাইকে। মহিলা ফিদে মাস্টার ওয়ারসিয়া খুশবু আর সাফায়েত কিবরিয়া আজান ড্র করে আলো কাড়লেন।

রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার পিটার কিরিয়াকভের সঙ্গে ওয়ারসিয়া খুশবু (বাঁ থেকে প্রথম), সাফায়েত কিবরিয়া (বাথেকে দ্বিতীয়) ও সায়ান মীরাব হাসান (ডান থেকে প্রথম)।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মহাকাশ থেকে দেখা গেল আটলান্টিকের রহস্যময় কাঠামো

মহাকাশে থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগরের অসাধারণ একটি ছবি তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে আটলান্টিক মহাসাগরের ৮ হাজার ৮৫০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে বাদামি ফিতার মতো একটি কাঠামো দেখা যায়। ছবিটি দেখে প্রথমে বিজ্ঞানীরা ক্যামেরার ত্রুটি আছে বলে মনে করেছিলেন। তবে পরে বাদামি ফিতার মতো কাঠামোটিকে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট বলে চিহ্নিত করা হয়।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আটলান্টিক মহাসাগরে সারগাসাম নামে পরিচিত বাদামি সামুদ্রিক শৈবালের বিশাল উত্থান হয়েছে। বিশালাকার এই শৈবাল কাঠামোর নাম দেওয়া হয়েছে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় শৈবাল কাঠামো। পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল থেকে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই কাঠামোকে আটলান্টিকের বাদামি সাপও বলা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আটলান্টিক মহাসাগরে থাকা গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট তৈরির পেছনে সমুদ্রের রসায়ন ও মানুষের প্রভাব রয়েছে। গত এক দশকে আমাজন, কঙ্গো ও মিসিসিপি নদীর মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগরে কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার, অপরিশোধিত বর্জ্য, নগরীর আবর্জনাসহ বিভিন্ন বস্তু জমা হয়েছে। নদীগুলোর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ নাইট্রোজেন ও ফসফরাসও আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করেছে। এসব আবর্জনা ও রাসায়নিক পদার্থ সারগাসাম নামে পরিচিত বাদামি সামুদ্রিক শৈবালের দ্রুত বৃদ্ধিতে সারের মতো কাজ করেছে। এ ছাড়া সাহারা মরুভূমি থেকে উড়ে আসা সূক্ষ্ম ধূলিকণার কারণে আটলান্টিক মহাসাগরের লৌহ উপাদান বেড়ে যাওয়ায় শৈবালের বিস্তার দ্রুত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোতের ধরন পরিবর্তনও বিশাল এই শৈবাল কাঠামো তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০১০ সালের দিকে নর্থ আটলান্টিক অসিলেশন স্রোতের ধরন পরিবর্তনের কারণে বাতাসের দিক ও স্রোতের গতি পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে সারগাসাম তার নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে সরে গিয়ে দ্রুত বাড়তে থাকার পাশাপাশি উপসাগরীয় স্রোত ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বায়ুর মাধ্যমে বিশাল অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্বাভাবিকভাবে সারগাসাম শৈবাল সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মাছ, কচ্ছপ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীবনের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় সরবরাহ করে। তবে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট বিশাল এলাকাজুড়ে থাকায় প্রবাল প্রাচীর ও সি-গ্রাস বেডে ঠিকমতো সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। এতে সালোকসংশ্লেষণে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি পানিতে অক্সিজেন কমে যেতে পারে। ফলে গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ