সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিচ্ছে ভারত
Published: 3rd, December 2025 GMT
বাংলাদেশি দাবি করে জবরদস্তি সে দেশে ঠেলে পাঠানো অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি ও তাঁর আট বছর বয়সী ছেলেকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মত হওয়ার কথা আজ বুধবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তর এজলাসে জানান।
আদালত বলেছেন, সোনালি বিবিদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত এনে তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্তও সরকারকে করতে হবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলা থেকে কাজের সন্ধানে সোনালি বিবি ও তাঁর পরিবার দিল্লি এসেছিল। গত জুন মাসে বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের ধরা হয়। তারপর আসাম সীমান্ত দিয়ে জবরদস্তি করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর পর পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশের অপরাধে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংশোধনাগারে ছিলেন। পরে জামিনে মুক্তি পান।
ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সোনালি বিবিদের ফেরত আনার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তেমন উদ্যোগী হচ্ছিল না।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মানবিক কারণে সোনালি বিবিদের দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দেন। আজ বুধবার তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতির কথা জানান।
সোনালি বিবি বারবার বলেছেন, তিনি চান দ্রুত ভারতে ফিরে আসতে, যাতে তাঁর সন্তান ভারতে জন্মাতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টও সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আজ তুষার মেহতা তাঁদের দিল্লি নিয়ে আসার কথা জানালে প্রধান বিচারপতি বলেন, সোনালি বিবিদের বীরভূমের বাড়িতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হোক। সেখানে স্থানীয় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন। সোনালির পরিবারও তেমনই চায়। সোনালির প্রসবসংক্রান্ত সব চিকিৎসা–সুবিধা বিনা মূল্যে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
আজ প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পদ্ধতি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাজে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু নাগরিকত্বের যাচাই যেভাবে হচ্ছে, সেই পদ্ধতি ঠিক নয়।’
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, মামলার বাদী ভদু শেখ ভারতীয়। তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে কেন্দ্র প্রশ্ন তোলেনি। তিনি সোনালির বাবা। তাহলে তাঁর মেয়ে সোনালিও ভারতীয়। কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণের পদ্ধতি মানা হয়নি।
এই একই কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে শুনতে হয়েছিল গত ২৫ নভেম্বরের শুনানিতেও। সেদিনও বলা হয়েছিল, ঠিকমতো যাচাই না করেই সোনালি বিবিসহ ছয়জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। সোনালিদের কোনো ওজর-আপত্তি শোনা হয়নি। তথ্যপ্রমাণও গ্রাহ্য করা হয়নি।
সোনালি বিবিদের ভারতে ফেরত আনার বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য সামিরুল ইসলাম। এখন দেখার বিষয়, সোনালি বিবিরা কত দ্রুত দেশে ফিরতে পারেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ ডিসেম্বর।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিচ্ছে ভারত
বাংলাদেশি দাবি করে জবরদস্তি সে দেশে ঠেলে পাঠানো অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি ও তাঁর আট বছর বয়সী ছেলেকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মত হওয়ার কথা আজ বুধবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তর এজলাসে জানান।
আদালত বলেছেন, সোনালি বিবিদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত এনে তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্তও সরকারকে করতে হবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলা থেকে কাজের সন্ধানে সোনালি বিবি ও তাঁর পরিবার দিল্লি এসেছিল। গত জুন মাসে বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের ধরা হয়। তারপর আসাম সীমান্ত দিয়ে জবরদস্তি করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর পর পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশের অপরাধে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংশোধনাগারে ছিলেন। পরে জামিনে মুক্তি পান।
ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সোনালি বিবিদের ফেরত আনার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তেমন উদ্যোগী হচ্ছিল না।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মানবিক কারণে সোনালি বিবিদের দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দেন। আজ বুধবার তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতির কথা জানান।
সোনালি বিবি বারবার বলেছেন, তিনি চান দ্রুত ভারতে ফিরে আসতে, যাতে তাঁর সন্তান ভারতে জন্মাতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টও সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আজ তুষার মেহতা তাঁদের দিল্লি নিয়ে আসার কথা জানালে প্রধান বিচারপতি বলেন, সোনালি বিবিদের বীরভূমের বাড়িতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হোক। সেখানে স্থানীয় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন। সোনালির পরিবারও তেমনই চায়। সোনালির প্রসবসংক্রান্ত সব চিকিৎসা–সুবিধা বিনা মূল্যে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
আজ প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পদ্ধতি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাজে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু নাগরিকত্বের যাচাই যেভাবে হচ্ছে, সেই পদ্ধতি ঠিক নয়।’
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, মামলার বাদী ভদু শেখ ভারতীয়। তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে কেন্দ্র প্রশ্ন তোলেনি। তিনি সোনালির বাবা। তাহলে তাঁর মেয়ে সোনালিও ভারতীয়। কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণের পদ্ধতি মানা হয়নি।
এই একই কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে শুনতে হয়েছিল গত ২৫ নভেম্বরের শুনানিতেও। সেদিনও বলা হয়েছিল, ঠিকমতো যাচাই না করেই সোনালি বিবিসহ ছয়জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। সোনালিদের কোনো ওজর-আপত্তি শোনা হয়নি। তথ্যপ্রমাণও গ্রাহ্য করা হয়নি।
সোনালি বিবিদের ভারতে ফেরত আনার বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য সামিরুল ইসলাম। এখন দেখার বিষয়, সোনালি বিবিরা কত দ্রুত দেশে ফিরতে পারেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ ডিসেম্বর।