খুলনায় আদালত চত্বরের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজন হত্যার ঘটনায় মামলা করেনি পরিবার। এর ফলে পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক রিপন শেখ জড়িত নয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হাসিব হাওলাদারের ছোট ভাই সুমন হাওলাদার।
খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই জানান, জোড়া হত্যার ঘটনায় দুই পরিবারের কেউ মামলা না করায় খুলনা থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত করবেন এস আই মো.
তিনি আরো জানান, অজ্ঞাতনামা ১৫/১৬ জন আসামী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় দুজনকে। ভিকটিমদের বাবা-মা ও স্বজনরা এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি ধর্তব্য অপরাধ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে অজ্ঞাতনামা ১৫/১৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করতে দেরী হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে খুলনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান গেটের সামনের সড়কে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজনকে। তারা খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ বাহিনীর সদস্য। এই জোড়া হত্যার সঙ্গে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ঘটনার পরপর চারটি কারণ সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত করছে। দুই পরিবার নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলা দায়ের করেনি বলে জানিয়েছে।
রাজনের বাবা মো. এজাজ শেখ জানান, তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার আল্লাহর আদালতে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বিচারতো আদালতে হয়ে থাকে। কিন্তু আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলে কার কাছে বিচার চাইব? চারপাশে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসা ও অফিস রয়েছে। এমন একটি জায়গায় নিরাপত্তার চিত্র যদি এমন হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে?”
এজাজ শেখ বলেন, আমি কোনো মামলা করব না। মামলা করে কি হবে? আমার একটা মাত্র ছেলে তাকে তো ওরা মেরে ফেলেছে। এখন মামলা করলে কী আমার ছেলেকে ফিরে পাব? আমার বা আমার পরিবারের নিরাপত্তা কে দেবে? আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। তিনিই উত্তম বিচার করনেওয়ালা। বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে আমার ছেলে মিথ্যা মামলায় ফেঁসেছে। জেলে থাকা অবস্থায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র মামলাসহ ছয়টি মামলা দেয়া হয়েছে। সেই মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে আজ আমার ছেলে সন্ত্রাসীদের গুলিকে নিহত হয়েছে।”
এদিকে, হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে ৫৪ ধারায় আটক রিপন শেখের স্ত্রী আঁখি বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাসিবের ছোট ভাই সুমন হাওলাদোর।
তিনি বলেন, “আমরা মামলা দেব না। হাসিবের দুই শিশু কন্যাসহ পরিবারের নিরাপত্তার কারণেই আমরা মামলার দিকে যাচ্ছি না। তাছাড়া হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আমার ঘনিষ্ট বন্ধু ও প্রতিবেশী। তাকে হয়রানি করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আঁখি বলেন, “রিপন শেখ ঘটনার দিন ফকিরহাটের ফলতিতা পাইকারী মাছের বাজারে মাছ কিনতে গিয়েছিল। দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনার আদালতের সামনে যখন হত্যাকান্ড সংগঠিত হয় তখন সে ওই বাজারে ছিল, যার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়। এছাড়া রিপন ‘ইহুদি’ বাহিনীর সদস্য ছিল না। ২০০৩ সালে ‘ইহুদি’ বাহিনী বিলুপ্ত হয়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জিডি নেই। ”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সন ত র স আম র ছ ল দ য় র কর পর ব র হত য র
এছাড়াও পড়ুন:
সিয়ামের সঙ্গী ইধিকা পাল!
ঢালিউড তারকা সিয়াম আহমেদ চলচ্চিত্রের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি নির্মাতা রায়হান রাফীর ‘আন্ধার’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন। এবার তার ‘রাক্ষস’ শিরোনামে নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মাঝে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। শুরুতে সিনেমাটিতে সিয়ামের বিপরীতে প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও সাবিলা নূরের নাম শোনা যায়।
অবশেষে জানা গেল, সিয়ামের বিপরীতে কলকাতার অভিনেত্রী ইধিকা পালকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে তার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে এটি হবে সিয়াম-ইধিকা জুটির প্রথম সিনেমা।
আরো পড়ুন:
প্রেমিকের সঙ্গে বিদেশে অবসর যাপন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট তারা
বড়দা মিঠুর ‘দেনা–পাওনা’
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শোনা যায়, তামিম রহমান পরিচালিত ‘সিকান্দার’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করবেন তারা। তবে সেই প্রকল্পের খবর আর প্রকাশিত হয়নি। ফলে ‘রাক্ষস’-এর মাধ্যমে দর্শকরা এই জুটিকে পর্দায় দেখতে পাবেন বলে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
ইধিকা পাল বাংলাদেশের দর্শকের কাছে পরিচিত হন শাকিব খান অভিনীত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর শাকিবের বিপরীতে ‘বরবাদ’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন। শাকিব খানের বাইরে তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশের পরিচালক হাসিবুর রেজার ‘কবি’ সিনেমায় এবং কলকাতার ‘খাদান’ ও ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমায় দেবের বিপরীতে। ধীরে ধীরে তিনি বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতাতেও জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন।
সিয়াম আহমেদের সর্বশেষ সিনেমা ‘জংলি’, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন শবনম বুবলী, দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। ‘পোড়ামন ২’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেকের পর থেকে তিনি বাণিজ্যিক ও কনটেন্ট-ড্রিভেন সব ঘরানার সিনেমায় নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, চলতি মাসেই ঢাকায় ‘রাক্ষস’ সিনেমার শুটিং শুরু হবে, এরপর শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ায় কিছু অংশের দৃশ্যধারণ করা হবে। আন্তর্জাতিক লোকেশন ও আধুনিক অ্যাকশন ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।
পরিচালক মেহেদী হাসান আপাতত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চাচ্ছেন না, সিয়ামও মন্তব্য করছেন না। তবে সূত্রের খবর, দুই সপ্তাহের মধ্যেই ক্যামেরা রোলিং শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ঈদুল ফিতরে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত