অমিতাভের সঙ্গে বৃষ্টিভেজা সেই গান,অস্বস্তিতে পড়েছিলেন স্মিতা
Published: 18th, October 2025 GMT
স্মিতা পাতিল বলিউডে কখনোই সহজ পথে হাঁটেননি। অর্থবহ চরিত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা আর বাণিজ্যিক ছবির চাপে ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে বহুবারই তিনি নিজেকে দ্বিধায় আবিষ্কার করেছেন। ‘নমক হালালের’ মতো ছবিতে অস্বস্তিকর দৃশ্য কিংবা যশ চোপড়ার হঠাৎ সিদ্ধান্তে বাদ পড়ার কষ্ট—সবই তিনি অকপটে শেয়ার করেছিলেন। গতকাল ১৭ অক্টোবর ছিল স্মিতা পাতিলের জন্মদিন। এ উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক অভিনেত্রী সম্পর্কে কিছু তথ্য।
বাণিজ্যিক সিনেমায় প্রথম ধাক্কা
১৯৫৫ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতের পুনেতে জন্ম স্মিতার। বাবা শিবাজিরাও গিরধর পাতিল রাজনীতিবিদ। মা বিদ্যাতাই পাতিল ছিলেন সমাজসেবী। দুজনের ব্যক্তিত্বের প্রভাব পড়েছিল স্মিতার বেড়ে ওঠায় ও মানসিকতায়। পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রাক্তনী স্মিতা সাতের দশকে ক্যারিয়ার শুরু করেন মুম্বাই দূরদর্শনের সংবাদপাঠিকা হিসেবে। স্মিতা ছিলেন শ্যাম বেনেগালের আবিষ্কার। নায়িকা হতে হলেই গায়ের রং হবে ফর্সা—এমন ধারণাকে ভেঙে দিয়েছিলেন স্মিতা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বরাবর সরব হয়েছেন নারীদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে। তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাব পূর্ণমাত্রায় পড়ত অভিনয়েও। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো ছিল প্রথাগত নায়কপ্রধান ছবির বিপরীত মেরুর। মারাঠি ও হিন্দি ছবিতে নিজের সময়ে স্মিতা ছিলেন বলিষ্ঠ অভিনেত্রী।
তাঁর প্রথম ছবি ‘মেরে সাথ চল’ মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। এর পরের বছর শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় ‘নিশান্ত’। এরপর ‘চরণদাস চোর’, ‘মন্থন’, ‘ভূমিকা’ স্মিতার অভিনয় এবং শ্যাম বেনেগালের পরিচালনার যুগলবন্দিতে নতুন অধ্যায় বলিউডে। সেই অধ্যায় দীর্ঘ হয় অন্যান্য যশস্বী পরিচালকের নির্দেশনায়। স্মিতার নামের পাশে একে একে যোগ হয় ‘আক্রোশ’, ‘চক্র’, ‘সদগতি’, ‘অর্থ’, ‘দেবশিশু’, ‘চিদম্বরম’, ‘গুলামি’, ‘বাজার’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘মান্ডি’, ‘অর্ধসত্য’, ‘মির্চ মাশালার’ মতো মাইলফলক ছবি।
শৈল্পিকধারা বা বিকল্পধারার ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও স্মিতা ছিলেন সমান সাবলীল। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্মিতা বলেছিলেন, ‘আমি ভাবতাম, একটি বাণিজ্যিক ছবি করলে মজা হবে। কিন্তু হিন্দি ছবিতে একটাতেই থামা যায় না। আমি ভাবছি, শাবানা (আজমি) পারবে কি না ওই বৃত্ত থেকে বের হতে—আমার মনে হয়, সে এখন অনেক ভেতরে ঢুকে গেছে।’ ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি বুঝেছিলেন, নিজের পথ বেছে নিতে হবে। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ‘আমি ভালো ছবিতেই কাজ করতে চাই। কিন্তু ভালো পরিচালক পাওয়া কঠিন, তাঁরা প্রায়ই নতুন মুখকে প্রাধান্য দেন। আমি চাই না যে বাণিজ্যিক ছবির চাপে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। কারণ, সেটাই হবে স্মিতা পাতিলের শেষ।’
রাজ-স্মিতার একমাত্র সন্তান প্রতীকের জন্ম হয় ১৯৮৬ সালের ২৮ নভেম্বর। সন্তান জন্মের পর থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন স্মিতা। ১৩ ডিসেম্বর জ্বর আসে, এতটাই যে শিশুকে কোলে নেওয়ার শক্তিও ছিল না তাঁর। সন্ধ্যার পর হঠাৎ খিঁচুনি ওঠে, শুরু হয় রক্তবমি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি কোমায় চলে যান। মাত্র দুই সপ্তাহ বয়সী সন্তানকে রেখে ১৯৮৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর মাত্র ৩১ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে যান স্মিতা পাতিল।যশ চোপড়ার প্রত্যাখ্যানের কষ্ট
একবার শাহরুখ খানের সঙ্গে কথোপকথনে যশ চোপড়া জানান, তিনি নিজে না জানিয়ে এক প্রকল্প থেকে স্মিতাকে বাদ দিয়েছিলেন—শুটিং শুরুর একদিন আগে। পরিবর্তে খবরটি পৌঁছে দিতে পাঠিয়েছিলেন শশী কাপুরকে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমিতাভের সঙ্গে বৃষ্টিভেজা সেই গান,অস্বস্তিতে পড়েছিলেন স্মিতা
স্মিতা পাতিল বলিউডে কখনোই সহজ পথে হাঁটেননি। অর্থবহ চরিত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা আর বাণিজ্যিক ছবির চাপে ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে বহুবারই তিনি নিজেকে দ্বিধায় আবিষ্কার করেছেন। ‘নমক হালালের’ মতো ছবিতে অস্বস্তিকর দৃশ্য কিংবা যশ চোপড়ার হঠাৎ সিদ্ধান্তে বাদ পড়ার কষ্ট—সবই তিনি অকপটে শেয়ার করেছিলেন। গতকাল ১৭ অক্টোবর ছিল স্মিতা পাতিলের জন্মদিন। এ উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক অভিনেত্রী সম্পর্কে কিছু তথ্য।
বাণিজ্যিক সিনেমায় প্রথম ধাক্কা
১৯৫৫ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতের পুনেতে জন্ম স্মিতার। বাবা শিবাজিরাও গিরধর পাতিল রাজনীতিবিদ। মা বিদ্যাতাই পাতিল ছিলেন সমাজসেবী। দুজনের ব্যক্তিত্বের প্রভাব পড়েছিল স্মিতার বেড়ে ওঠায় ও মানসিকতায়। পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রাক্তনী স্মিতা সাতের দশকে ক্যারিয়ার শুরু করেন মুম্বাই দূরদর্শনের সংবাদপাঠিকা হিসেবে। স্মিতা ছিলেন শ্যাম বেনেগালের আবিষ্কার। নায়িকা হতে হলেই গায়ের রং হবে ফর্সা—এমন ধারণাকে ভেঙে দিয়েছিলেন স্মিতা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বরাবর সরব হয়েছেন নারীদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে। তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রভাব পূর্ণমাত্রায় পড়ত অভিনয়েও। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো ছিল প্রথাগত নায়কপ্রধান ছবির বিপরীত মেরুর। মারাঠি ও হিন্দি ছবিতে নিজের সময়ে স্মিতা ছিলেন বলিষ্ঠ অভিনেত্রী।
তাঁর প্রথম ছবি ‘মেরে সাথ চল’ মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। এর পরের বছর শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় ‘নিশান্ত’। এরপর ‘চরণদাস চোর’, ‘মন্থন’, ‘ভূমিকা’ স্মিতার অভিনয় এবং শ্যাম বেনেগালের পরিচালনার যুগলবন্দিতে নতুন অধ্যায় বলিউডে। সেই অধ্যায় দীর্ঘ হয় অন্যান্য যশস্বী পরিচালকের নির্দেশনায়। স্মিতার নামের পাশে একে একে যোগ হয় ‘আক্রোশ’, ‘চক্র’, ‘সদগতি’, ‘অর্থ’, ‘দেবশিশু’, ‘চিদম্বরম’, ‘গুলামি’, ‘বাজার’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘মান্ডি’, ‘অর্ধসত্য’, ‘মির্চ মাশালার’ মতো মাইলফলক ছবি।
শৈল্পিকধারা বা বিকল্পধারার ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও স্মিতা ছিলেন সমান সাবলীল। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্মিতা বলেছিলেন, ‘আমি ভাবতাম, একটি বাণিজ্যিক ছবি করলে মজা হবে। কিন্তু হিন্দি ছবিতে একটাতেই থামা যায় না। আমি ভাবছি, শাবানা (আজমি) পারবে কি না ওই বৃত্ত থেকে বের হতে—আমার মনে হয়, সে এখন অনেক ভেতরে ঢুকে গেছে।’ ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি বুঝেছিলেন, নিজের পথ বেছে নিতে হবে। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ‘আমি ভালো ছবিতেই কাজ করতে চাই। কিন্তু ভালো পরিচালক পাওয়া কঠিন, তাঁরা প্রায়ই নতুন মুখকে প্রাধান্য দেন। আমি চাই না যে বাণিজ্যিক ছবির চাপে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। কারণ, সেটাই হবে স্মিতা পাতিলের শেষ।’
রাজ-স্মিতার একমাত্র সন্তান প্রতীকের জন্ম হয় ১৯৮৬ সালের ২৮ নভেম্বর। সন্তান জন্মের পর থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন স্মিতা। ১৩ ডিসেম্বর জ্বর আসে, এতটাই যে শিশুকে কোলে নেওয়ার শক্তিও ছিল না তাঁর। সন্ধ্যার পর হঠাৎ খিঁচুনি ওঠে, শুরু হয় রক্তবমি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি কোমায় চলে যান। মাত্র দুই সপ্তাহ বয়সী সন্তানকে রেখে ১৯৮৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর মাত্র ৩১ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে যান স্মিতা পাতিল।যশ চোপড়ার প্রত্যাখ্যানের কষ্ট
একবার শাহরুখ খানের সঙ্গে কথোপকথনে যশ চোপড়া জানান, তিনি নিজে না জানিয়ে এক প্রকল্প থেকে স্মিতাকে বাদ দিয়েছিলেন—শুটিং শুরুর একদিন আগে। পরিবর্তে খবরটি পৌঁছে দিতে পাঠিয়েছিলেন শশী কাপুরকে।