সাভারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
Published: 19th, October 2025 GMT
ঢাকার সাভারে বাসায় ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে থানায় দায়ের হওয়া মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও থানার তেঁজকুনিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সাভার মডেল থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার মিঠু বিশ্বাস (৩৫) সাভারের কমলাপুর গোয়ালিও এলাকার দেবেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাভারের একই এলকার সোহেল রোজারিও (৩৭), বিপ্লব রোজারিও (৪০)। সোহেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং বিপ্লব ও মিঠুর বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাঁর পরিবার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের একটি এলাকায় বসবাস করে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোরে তেজগাঁও থানার তেঁজকুনিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী সাভারে এক ছাত্রকে প্রাইভেট পড়ানোর পর বাসায় ফেরেন। কিন্তু এসে দেখেন বাসা তালাবদ্ধ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মা বাসায় তালা দিয়ে পাশের এক চা–দোকানির কাছে চাবি রেখে গেছেন। পরে তিনি দোকান থেকে চাবি নিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন।
ফেরার পথে সোহেল রোজারিও ওই তরুণীকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিছুদূর যাওয়ার পর সোহেলের সঙ্গে অন্য দুই আসামির দেখা হয়। এরপর তাঁরা ওই তরুণীকে অনুসরণ করতে থাকেন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে নিজের বাসায় নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন সোহেল। এতে সহযোগিতা করেন অন্য দুই আসামি। ধর্ষণের পর সোহেল ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুনসাভারে বাসায় ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেমামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। এর পর থেকে বিভিন্ন স্থানে আসামিদের গ্রেপ্তারে থানার ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা একাধিক টিম নিয়ে অভিযান শুরু করেন। আশা করছি, পলাতক বাকি দুই আসামিকেও দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’
এদিকে আজ বিকেল চারটায় সাভার মডেল থানা প্রাঙ্গণে ধর্ষণের প্রতিবাদে ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ঢাকা জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা, ঝুঁকিপূর্ণ নীরব-গহিন এলাকায় পর্যাপ্ত লাইটিং, সিসিটিভি ক্যামেরা ও টহলের ব্যবস্থা এবং সাভারে খুন-গুম-ধর্ষণের জন্য যৌথ বাহিনীর স্পেশাল সেল গঠন করা।
ঢাকা জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বকারী মেহরাব সিফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে নিত্যদিনের পত্রিকায় ধর্ষণকাণ্ড খবর না হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এটি নিশ্চত করতে ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারে কোনো ধরনের কালক্ষেপণ করা যাবে না। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। সাভারে প্রতিটি এলাকায় জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হবে। যৌথ বাহিনীর স্পেশাল সেল গঠনের মধ্য দিয়ে ভুক্তভোগীরা যেন দ্রুত সহায়তা পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
তারেক রহমান না এলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এমন নয়: তৌহিদ হোসেন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে না এলে নির্বাচন হবে না বা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এমন ধারণার সঙ্গে একমত নন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, একজন ব্যক্তির কারণে নির্বাচন নষ্ট হয়ে যাবে বা হবে না; এটা তিনি মনে করেন না।
তারেক সাহেব না আসলে বা বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারেক সাহেব এখানে (ঢাকায়) উপস্থিত না থাকলেও তো বিএনপির সত্যিকার নেতৃত্ব তার হাতেই ছিল। কাজেই উনি ঢাকায় পদার্পণ না করলেই যে নির্বাচন হবে না বা সুষ্ঠু হবে না; এটা আমার ঠিক মনে হয় না।
আরো পড়ুন:
‘অসুস্থ মায়ের পাশে থাকতে না পারা কত যন্ত্রণার, সেটা সন্তানই বুঝতে পারে’
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন ডিপজল
তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার মনে হয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, সেটা অন্যান্য আরো ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে। ল অর্ডারের প্রশ্ন আছে, ইলেকশন কমিশন কতটুকু সফল হয়, সে বিষয় আছে। আমার মনে হয় না, একজন ব্যক্তির কারণে বা উনার দূরে থাকার কারণে নির্বাচন নষ্ট হয়ে যাবে, এটা আমি মনে করি না।
তবে দেখা যাক, সময় তো এখনো আছে। তো আল্টিমেটলি কী হবে, আমরা তো এখনো জানি না, বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, তারেক রহমানের দেশে আসার আগ্রহ আছে কি নাই, সেটা আপনাদের মাধ্যমে আমি জানি; পত্র-পত্রিকায় যতটুকু আসে। আমার কাছে আলাদা কোনো তথ্য নাই।
লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরতে চাইলে একদিনের মধ্যেই তাকে ‘ওয়ান টাইম পাস’ দিতে পারার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
রবিবার ঢাকায় ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা অবশ্য বলেছেন, “এটার নিয়ম হচ্ছে যে, যখন পাসপোর্ট থাকে না বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, তখন কেউ যদি আসতে চান, তাহলে তাকে আমরা ওয়ান টাইম পাস একটা দিয়ে দিই, একবার দেশে আসার জন্য।
“তো, এটাতে একদিন লাগে। কাজেই এটা উনি যদি আজকে বলেন যে, উনি আসবেন, আগামীকাল হয়তো আমরা এটা দিলে পরশু দিন প্লেনে উঠতে পারবেন। কোনো অসুবিধা নাই। এটা আমরা দিতে পারব।”
ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘সংকটময় পরিস্থিতিতে’ ছেলে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে ‘জটিলতা’ থাকার কথা শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকালে নিজেই তুলে ধরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
এক ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমানের ‘স্পর্শকাতর’ বক্তব্যের প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন,“স্ট্যাটাস স্পর্শকাতর বিষয়। এটা উনি নিজে বলেছেন, পত্রিকায় এসেছে, সেটা আমরা সবাই দেখেছি।"
“আমার জ্ঞান যে পর্যন্ত আমি শুধু এটুকু বলতে পারব যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ নেই যে উনি আসতে পারবেন না।”
বিদেশি কোনো দেশের চাপ আছে কি না, এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, “একটা দেশের নাগরিক তার দেশে ফিরতে দেওয়া যাবে না বা দেওয়া হবে না এটাতো আমার কাছে একটু অস্বাভাবিক লাগছে যে, বাংলাদেশ যদি তার নাগরিককে ফেরত আসতে দিতে চায়, আরেকটি দেশ সেটা কী করে নিষেধ করবে।”
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য আবার বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, তাকে বিদেশ নেওয়ার ব্যবস্থা তার দল করলে, সরকার সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।
ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তার ‘একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
পরদিন রবিবার দুপুরে ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক রহমানের ফেরা এবং তার ফেসবুক পোস্টের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ঢাকা/রাসেল