মাধ্যমিকে কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি
Published: 1st, December 2025 GMT
চার দফা দাবিতে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা গতকাল সোমবার লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকালের বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে গিয়ে ফিরে যায়।
তবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কোনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে কর্মচারীদের পাহারায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একাংশ কর্মবিরতি পালন করছে। গতকাল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
বার্ষিক পরীক্ষার মধ্যে শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বলেছেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরকারি কর্মচারী বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাঁদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় বাসসকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্দোলনের নামে যা করছেন, তা সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য আপনাদের কিন্তু তৈরি থাকতে হবে। এখানে সরকার একেবারে দৃঢ়ভাবে তার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।’
মাধ্যমিকে কর্মবিরতিবাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৪ অনুযায়ী, সারা দেশে ১৯ হাজার ১১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (সাধারণ বা জেনারেল) রয়েছে। এর মধ্যে ৬৩১টি সরকারি। মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী প্রায় ৭৯ লাখ। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ৪ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি। সরকারি মাধ্যমিকে মোট শিক্ষক ১৩ হাজারের বেশি।
চার দফা দাবিতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। দাবিগুলো হলো—এক.
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবির বিষয়ে তাঁরা প্রথমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু দাবি না মানায় লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।
কর্মবিরতির কারণে বিভিন্ন বিদ্যালয় আগের দিন রোববার নোটিশ দিয়ে গতকালের পরীক্ষা স্থগিত করে। আবার শিক্ষার্থীরা গতকাল কোনো কোনো বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারে, পরীক্ষা হবে না। রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে পড়ুয়া এক ছাত্রের বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সন্তান বিদ্যালয়ে গিয়েও ফিরে এসেছে। বিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জানান, তাঁরা মৌখিকভাবে পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল আগের দিন রোববার নোটিশ দিয়ে পরীক্ষা না নেওয়ার কথা জানিয়েছে। গতকাল সকালে খুলনার সরকারি করোনেশন গার্লস হাইস্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তাঁদের বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হচ্ছে না।
গতকাল সকালে খুলনা জিলা স্কুলের সামনে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সরফুদ্দিন আয়ান বলে, ‘আজ গণিত পরীক্ষা ছিল, তবে হবে না—এটা জানতাম না। এসে দেখি, পরীক্ষা হচ্ছে না।’ তার মতো খুলনার কয়েকটি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা একই সমস্যায় পড়ে। তারা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর শিক্ষকদের কর্মবিরতির খবর পায়।
রাজশাহী, যশোর, কুমিল্লা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষা না হওয়ার খবর পাঠিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদক মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান, বেশ কিছু ছাত্র রয়েছে বিদ্যালয় চত্বরে। অষ্টম শ্রেণির একজন ছাত্র বলল, তাদের পরীক্ষা হয়েছে। তবে পরীক্ষার হলে গার্ড দিয়েছেন কর্মচারীরা। পরে কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, কর্মচারীদের দিয়ে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
তবে শিক্ষকেরা দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা হতে দেননি। বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাহমিনা ইয়াসমিন বলেন, আদিষ্ট হয়ে বিধি মোতাবেক পরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রেখেছেন।
সেখান থেকে পাশের মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, সেই বিদ্যালয়ে সময়সূচি অনুযায়ী গতকাল পরীক্ষা ছিল না।
সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি তাঁদের ডেকে দাবিগুলো পূরণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন। অন্যথায় তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলবে।
প্রাথমিকে একাংশের কর্মবিরতিসহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপাতত ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় আজ ২ ডিসেম্বর পরীক্ষা বর্জনসহ লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি চলবে।
অবশ্য গতকাল সকালে ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়। লালবাগ শিক্ষা এলাকার একটি বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক সকালে পরীক্ষা শুরুর কথা জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা আছে। আর সাধারণত ঢাকার বিদ্যালয়গুলোতে এ ধরনের কর্মসূচি সব সময়ই কম পালিত হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র ষ ক পর ক ষ শ ক ষকদ র প রথম আল র পর ক ষ গতক ল স র একজন সরক র সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
৯ ক্রিকেটারের বিপিএলের নিলাম থেকে বাদ পড়ার ৩ কারণ
অবশেষে জল্পনাকল্পনা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে এবারের বিপিএল। বিসিবির দুর্নীতি দমন পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শালের করা অধিকতর তদন্তের পর গত বিপিএলে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার সন্দেহে ৯ ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে কাল নিলামের জন্য চূড়ান্ত খেলোয়াড় তালিকা প্রকাশ করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। আজ বিকেলে র্যাডিসন হোটেলে হবে দ্বাদশ বিপিএলের নিলাম।
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হুসাইন হায়দারের নেতৃত্বে বিসিবির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৯ জন স্থানীয় ও ১ জন বিদেশি ক্রিকেটারকে গত বিপিএলে ফিক্সিংয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সন্দেহভাজনদের তালিকায় নাম আছে ৬–৭ জন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, একজন কোচ ও একজন মিডিয়া ম্যানেজারের। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী এবং সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম।
চূড়ান্ত নিলাম তালিকায় না থাকা অভিযুক্ত ৯ ক্রিকেটারের মধ্যে প্রাথমিক তালিকায় ছিলেন ৮ জন। তাঁরা হলেন দুর্দান্ত রাজশাহীর এনামুল হক, শফিউল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, ঢাকা ক্যাপিটালসের মোসাদ্দেক হোসেন ও আলাউদ্দিন বাবু এবং সিলেট স্ট্রাইকার্সের আরিফুল হক ও নিহাদুজ্জামান।
আরিফুল প্রথমে প্রাথমিক তালিকায় না থাকলেও পরে তাঁকে ঢোকানো হয়েছিল। এনামুল, মোসাদ্দেক, শফিউল, সানজামুল ও আরিফুল জাতীয় দলে খেলেছেন। জাতীয় দলে খেলা আরেক অভিযুক্ত সিলেট স্ট্রাইকার্সের আল–আমিন হোসেন প্রাথমিক তালিকাতে ছিলেন না, নেই চূড়ান্ত তালিকাতেও।
সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের মধ্যে আরও ছিলেন দুর্দান্ত রাজশাহীর সোহাগ গাজী ও ঢাকা ক্যাপিটালসে খেলা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার থিসারা পেরেরা। তবে অ্যালেক্স মার্শালের তদন্তে ‘নিষ্কৃতি’ পাওয়ায় তাঁরা দুজনই চূড়ান্ত নিলাম তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত হিসেবে এই ১১ ক্রিকেটারের নাম আসার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। এই ১১ ক্রিকেটার এবং কোচ–কর্মকর্তাসহ অভিযোগ আনা হয়েছে মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুনবিপিএল নিলামের আগে সরাসরি চুক্তি করেছেন যাঁরা১১ ঘণ্টা আগেসূত্র জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে একই ফ্র্যাঞ্চাইজির দুজন আইসিসির ‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী। অর্থাৎ আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের তালিকাতেও তাঁরা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত।
আইসিসির ‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী ক্রিকেটারটি শুধু গত বিপিএলেই নয়, তার আগের বিপিএলেও সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড করেছেন। যদিও তদন্ত কমিটিকে ওই ক্রিকেটার বলেছেন, তাঁকে আইসিসি কেন সন্দেহ করে, সেটা নাকি তিনি জানেন না। তিনিসহ সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মূলত তিন ধরনের—খেলায় সুনির্দিষ্ট ঘটনা ঘটিয়ে সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা, ফিক্সিংয়ে সহায়তা করা বা প্রস্তাব দেওয়া ও তথ্য গোপন করা।
‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী দুই কর্মকর্তাসহ আরও চারজন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, একজন কোচ, একজন মিডিয়া ম্যানেজার ও বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের এক কর্মকর্তার নামও আছে স্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনে। তবে সবার বিরুদ্ধে সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ করেনি কমিটি।
আরও পড়ুনব্যাট–প্যাড কিনতে পেছাচ্ছে বিপিএল২৭ নভেম্বর ২০২৫একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকের বিরুদ্ধে যেমন অভিযোগ সঠিকভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি চালাতে না পারার। তাঁর দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় ও অন্য কর্মকর্তারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন বলে মনে করে কমিটি।
সন্দেভাজন মিডিয়া ম্যানেজারের বিরুদ্ধেও সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে সন্দেহের অন্যতম কারণ, প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত এলাকায় বিভিন্ন সময়ে তাঁর অনভিপ্রেত যাতায়াত। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে গত বিপিএলের সময় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
তদন্ত কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য কাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমরা কিছু খেলোয়াড়–কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে তাদের ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। পরে অ্যালেক্স মার্শালের তদন্তের ভিত্তিতে বিসিবি কিছু ক্রিকেটারকে চূড়ান্ত নিলাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।’
আরও পড়ুনপ্রমাণ ছাড়াই কি ৭ ক্রিকেটারকে বিপিএল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কী বলছে বিসিবি১২ ঘণ্টা আগেচূড়ান্ত নিলাম তালিকায় প্রাথমিক তালিকার কিছু ক্রিকেটারকে না রাখার ব্যাখ্যা দিয়ে বিসিবিও কাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কয়েকজন খেলোয়াড়সহ কিছু ব্যক্তিকে এবারের বিপিএলে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অন্যান্য ঘরোয়া ক্রিকেটে আপাতত তাঁদের খেলতে বাধা নেই।
খেলোয়াড়দের বাইরে সন্দেহভাজনদের তালিকায় কারা আছেন, তা প্রকাশ না করলেও এবারের আসরে তাঁদের দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করতে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জানিয়ে দিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান কাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা রেড ফ্ল্যাগড (সন্দেহভাজন) আছে, তারা দলের সঙ্গে থাকতে পারবে না। না মাঠে থাকতে পারবে, না ড্রেসিংরুমে থাকতে পারবে, না বাসে চড়তে পারবে, না হোটেলে থাকতে পারবে। এটাই নিয়ম, সারা বিশ্বে এইভাবেই ইন্টিগ্রিটি ইউনিট চলে।’
অভিযুক্তরা কী বলেনঅভিযুক্ত ক্রিকেটারদের দাবি, অভিযোগ প্রমাণের আগে নিলামের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাঁদের ‘মানহানি’ করা হয়েছে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এনামুল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘একটা প্রতিবেদন দিল আর বাদ দিয়ে দিল! দোষী না, কিন্তু বিপিএল খেলতে দেবে না—এটা কী হলো? কথা শুনে হাস্যকর মনে হচ্ছে।’
শফিউল বলেন, ‘আমি যদি অভিযুক্ত হই আমাকে প্রমাণ দেখাক। মানুষের সামনে প্রমাণ নিয়ে আসুক।’
সানজামুলের কথা, ‘বিসিবির কথা হচ্ছে দোষীও না, আবার দোষী। কী প্রমাণ করল সেটা বুঝলাম না। বলছে সব জায়গায় খেলতে পারব আবার বিপিএল খেলতে পারব না। যতটুকু জানি, যারা সাজাপ্রাপ্ত, তারা সব সময় নিষিদ্ধ থাকে।’
নিহাদুজ্জামান বলেছেন, ‘খুবই অপ্রত্যাশিত এটা। কখনো কল্পনা করিনি।’ নিলাম তালিকা থেকে বাদ পড়া মানতে পারছেন না মিজানুরও, ‘কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না। কী পদক্ষেপ নেব বা কী করব, সেটাও বুঝতে পারছি না।’
মোসাদ্দেক, বাবু, সোহাগ, আল–আমিন ও আরিফুলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়ার জবাবে গভর্নিং কাউন্সিল সদস্যসচিব ইফতেখারের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘রেড ফ্ল্যাগড খেলোয়াড়দের আমরা নিলামের তালিকায় রাখব না, এটা সম্পূর্ণ আমাদের সিদ্ধান্ত। এটার এখতিয়ার আমাদের আছে। আমরা বিপিএল পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই।’
আরও পড়ুনবিপিএল নিলামে জায়গা না পাওয়া অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা কে কী বলছেন১০ ঘণ্টা আগে