গাজীপুরে ভূমিকম্পের সময় আহত ২৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি, বেশির ভাগ শ্রমিক
Published: 21st, November 2025 GMT
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত কয়েক সেকেন্ডের শক্তিশালী ভূমিকম্পে গাজীপুরে মুহূর্তের মধ্যে সৃষ্টি হয় ব্যাপক আতঙ্ক। উঁচু ভবন দুলতে শুরু করলে ঘরবাড়ি, অফিস, শিল্পকারখানা, দোকানপাট থেকে মানুষ দ্রুত খোলা জায়গায় ছুটে আসে। গাজীপুরে বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানায় আতঙ্কে নামতে গিয়ে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে আহত হয়ে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ২৫২ জন মানুষ ভর্তি আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক।
মহানগরীর টঙ্গী এলাকায় ভূমিকম্পের সময় পিনাকী গার্মেন্টস এবং ফ্যাশন প্লাস গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। শ্রমিকেরা দ্রুত ভবন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে গেট এবং সিঁড়িতে প্রচণ্ড ভিড় ও হুড়োহুড়ির সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেক শ্রমিক পদদলিত হন। এ ঘটনায় শ্রমিকেরা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং আতঙ্কে অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মো.
এ ছাড়া মহানগরীর বাসন থানাধীন কোজিমা লিরিক কারখানা, লীবাস টেক্সটাইল লিমিডেট, হাসান তানভীর নামক কারখানা, ডে ফ্যাশন কারখানা কোস্ট টু কোস্টু নামক কারখানা এবং জেলার শ্রীপুর থানাধীন ডেনিম্যাক ডেনিম লিমিডেট কারখানার শ্রমিকেরা ভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা ইশরাত জাহান (এনি) বলেন, ‘ভূমিকম্প হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে আমরা প্রচুর পেশেন্ট (রোগী) পাই, এদের অধিকাংশ কারখানা শ্রমিক। এদের মধ্যে অনেকেই ভয়ে অসুস্থ হয়েছে। আমরা অন্তত শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছি এবং যাঁদের অবস্থা গুরুতর তাঁদের অন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে বহুতল ভবন থেকে তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে কেওয়া পূর্বখণ্ড গারোপাড়া এলাকায় ডেনিমেক নামের একটি পোশাক কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিকদের মধ্যে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন ১৩০ জন। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও ২০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ জন ভর্তি আছেন।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন মামুনুর রহমান বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ৮৫ জন এবং গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯০ জন ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়া অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। অনেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সিভিল সার্জন প্রথম আলোকে বলেন, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর আগে ১৩০ জন ভর্তি ছিলেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহত হয় ছ ন ভ ম কম প র স র জন আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ওয়াশিংটনের ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে আমেরিকার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি এ কথা বলেছেন।
ব্যাপকভাবে ফাঁস হওয়া পরিকল্পনার আওতায় কিয়েভ পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য এলাকা ছেড়ে দেবে, তাদের সেনাবাহিনীর আকার কমিয়ে দেবে এবং ন্যাটোতে যোগদান না করার প্রতিশ্রুতি দেবে। এই প্রস্তাবগুলো ইউক্রেন এর আগে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং রাশিয়ার বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিভের মধ্যে বৈঠকের পর প্রকাশিত এই পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে ইউক্রেন জড়িত ছিল না বলে প্রথমে দাবি করা হয়েছিল। তবে হোয়াইট হাউস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন মার্কিন সামরিক সহায়তার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন অবস্থান পরিবর্তন করেছেন যাতে ন্যাটোর অর্থায়নের মাধ্যমে ইউক্রেন আরো সাহায্য পায়।
রাতের ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, কিয়েভে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা “তাদের প্রস্তাব, যুদ্ধ শেষ করার পরিকল্পনার বিষয়গুলো নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন।”
তিনি বলেছেন, “যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই, আমরা একটি খুব সহজ অবস্থান বজায় রেখেছি: ইউক্রেনের শান্তি প্রয়োজন। একটি প্রকৃত শান্তি - যা তৃতীয় আক্রমণের মাধ্যমে ভঙ্গ হবে না।”
ঢাকা/শাহেদ