ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। কেবল অভিনয়েই নন, চলচ্চিত্র নির্মাণেও রেখেছিলেন অনন্য ছাপ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুরু করেছিলেন তার স্বপ্নের ‘এই তুমি সেই তুমি’ সিনেমার কাজ। কিন্তু নিয়তির কাছে হেরে যান কবরী। মাত্র দুই দিনের শুটিং বাকি থাকতেই অর্থাৎ ২০২১ সালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই গুণী শিল্পী।
তবে মায়ের অসমাপ্ত সেই স্বপ্ন থেমে থাকেনি। কবরীর ছেলে শাকের চিশতী মায়ের সেই কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের শেষের দিকে সিনেমাটির নির্মাণ ও সম্পাদনা শেষ হয়েছে। এবার এটি বিদেশি কোনো চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে, এরপরই দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘এই তুমি সেই তুমি’।
আরো পড়ুন:
শাকিবের ‘প্রিন্স’ সিনেমার জন্য অমিতাভ বচ্চনের শুভেচ্ছা
কত টাকা আয় করেছে রাশমিকার নতুন সিনেমা?
শাকের চিশতী বলেন, “আম্মুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করাটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ডাবিং, সম্পাদনা—সব কাজ শেষ করতে পেরেছি। দেশের বাইরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে সিনেমাটি জমা দিয়েছি। সেখানে প্রদর্শনীর পরই দেশে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।”
কবরীর লেখা কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপে নির্মিত এ সিনেমায় সময়ের দুই প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে—একটি বর্তমান সময়ের গল্প, অন্যটি মুক্তিযুদ্ধের সোনালি অধ্যায়। এই দুই সময়ের সংযোগেই ফুটে উঠেছে ভালোবাসা, ত্যাগ আর মানবিকতার এক গল্প।
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিশাত নাওয়ার সালওয়া ও রায়হান রিয়াদ। পরিচালনা ও অভিনয়ের পাশাপাশি কবরী এই সিনেমার জন্য গানও লিখেছিলেন। সেই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইমরান ও কোনাল। আর সংগীত পরিচালনা করেছেন দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
‘এই তুমি সেই তুমি’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি যেন কবরীর অসমাপ্ত জীবনের শেষ অধ্যায়ের সেলুলয়েড স্মারক—যেখানে তিনি রেখে গেছেন নিজের হৃদয়ের সুর, ভাবনা আর ভালোবাসার চিহ্ন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কবর কবর র
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল আয়োজনে ‘ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যালে’
বর্ণাঢ্য আয়োজন ও হাজারো রাইডারের অংশগ্রহণে শনিবার অনুষ্ঠিত হলো ‘ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যাল’। ঢাকার পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ আয়োজন দেশের বাইকপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
২০১৬ সালে ইয়ামাহার সঙ্গে এসিআই মটরসের পথচলা শুরু। ১১ নভেম্বর এই যাত্রা ৯ বছরে পদার্পণ করবে। এ উপলক্ষে ইয়ামাহা বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রাইডাররা উপভোগ করেন টেস্ট রাইড, জিমখানা, স্টান্ট শোসহ নানা রোমাঞ্চকর বাইকিং কার্যক্রম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসিআই মটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক আরাফাত হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা।
আয়োজনটি নিয়ে সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা দিবসটিকে উদ্যাপন করি। এবার বড় পরিসরে আয়োজন করছি। সারা দেশের সাত হাজারের বেশি রাইডার এখানে অংশ নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু মোটরসাইকেল বিক্রি নয়, বাইক-সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে এ আয়োজনকে আন্তর্জাতিক মানের করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে দেশের বাইরের বাইকাররাও অংশ নেবে। আর ইয়ামাহা এখন তরুণদের স্বপ্নের প্রতীক—এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ ধারাবাহিকতায় আমরা বাইক ইন্ডাস্ট্রিকে নেতৃত্ব দিচ্ছি।’
এসিআই মটরসের মহাব্যবস্থাপক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ইয়ামাহা শুধু একটি ব্র্যান্ড নয়, এটি এক বিশাল পরিবার। সামনে আরও উদ্ভাবন, আরও সেবা ও আরও ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে ইয়ামাহা একটি জনপ্রিয় নাম, তরুণ প্রজন্মের কাছে যা ‘স্বপ্নের বাইক’ হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বাজারে বিক্রির শীর্ষেও রয়েছে ইয়ামাহা। জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ডের সফলতার পেছনে রয়েছে এর অনুমোদিত পরিবেশক এসিআই মটরস্। যাত্রার শুরু থেকেই নতুন নতুন মডেল ও বিক্রয়োত্তর সেবার মাধ্যমে বাইকপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে ইয়ামাহা ও এসিআই মটরস্, যাদের সব কার্যক্রমই হয় গ্রাহকের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে।
অনুষ্ঠানে আসা কুমিল্লা ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সদস্য ইভা সরকারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ইভা বলেন, ‘শখ করেই বাইক রাইড করি। এটা আমাদের বাইকারদের একটি মিলনমেলা। এখানে এসে ভালো লাগল।’
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সদস্য কামারুজ্জামানও এসেছিলেন এ আয়োজনে। তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে অনেক অনুষ্ঠানে এসেছি। এবারের আয়োজন একেবারেই ভিন্ন। দেশের আর কোনো বাইক কোম্পানি নেই, যারা এভাবে রাইডারদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তা করে। এ জন্য এ কমিউনিটির সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত।’
ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যাল আয়োজনে বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ছিল ইয়ামাহার বিভিন্ন সামগ্রীর প্রদর্শনীও। সন্ধ্যায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল কণ্ঠশিল্পী কনা ও ‘নগরবাউল’ জেমসের পরিবেশনা, যা উপস্থিত বাইকপ্রেমীদের মধ্যে উৎসবের উচ্ছ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়।
বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্রাহক ও রাইডারদের সঙ্গে বন্ধন আরও সুদৃঢ় করল ইয়ামাহা ও এসিআই মটরস্—এমনই মতামত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।